রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগকর্মীরপায়ের পাতা বিচ্ছিন্ন : নেতার রগ কর্তন

 

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীবিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কুপিয়ে ছাত্রলীগের কর্মী আবদুল্লাহেল মাসুদেরডান পা গোড়ালি থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এছাড়া ছাত্রলীগনেতা টগর মোহাম্মদ সালেহর দু হাত ও দু পায়ের রগ কেটে দেয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবেক্যাম্পাসে অভিযান চালিয়ে সাতজনকে আটক করেছে পুলিশ। গুরুতর আহত অবস্থায়তাদের বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় পাঠানো হয়।

জানা যায়, মাসুদ ইতিহাস বিভাগের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ও ছাত্রলীগসদস্য। আর টগর মোহাম্মদ সালেহ ফোকলর বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ওছাত্রলীগের ছাত্রবৃত্তি বিষয়ক সম্পাদক। দুজনই মাদার বখশ হলে থাকতেন।পুলিশ ও ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে ঘটনার সাথে ইসলামী ছাত্রশিবির জড়িত। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে শিবির।

মতিহার থানার ওসি আলমগীর হোসেন জানান, মাসুদ ও টগর মাদার বখশ হল থেকেক্যাম্পাসে ক্লাসের উদ্দেশে বের হয়েছিলেন। তাদের বহনকারী রিকশাটি জিয়াউররহমান হল ও শহীদ হবিবুর রহমান হলের মাঝামাঝি জায়গায় এলে ওত পেতে থাকাদুর্বৃত্তরা তাদের রিকশা লক্ষ্য করে কয়েকটি হাতবোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্কতৈরি করে। এ সময় মাসুদ ও টগর রিকশা থেকে নেমে পালানোর চেষ্টা করলেহামলাকারীরা তাদের ধরে সেখানে অবস্থিত একটি ছোট দোকানের পেছনে নিয়ে ধারালোঅস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তার ডান পায়ের পাতা গোড়ালি থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে আরটগরের দু পায়ের রগ কেটে দেয়।

গুরুতর অবস্থায় তাদের প্রথমে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় বলেজানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আতিকুর রহমান সুমন।সেখানে দুজনকেঅস্ত্রোপচার করা হয়।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স বিভাগীয়প্রধান ডা. বি.কে দাশবলেন, হামলাকারীরা মাসুদের ডান পায়ের গোড়ালি বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। আর বামপাও কেটে দেয়া হয়েছে। হালকা লেগে আছে। একই সাথে তার দু হাতের রগও কেটেদেয়া হয়েছে। আর টগরের দু পা ও দু হাতের রগও কেটে দেয়া হয়েছে। তাদেরপ্রাথমিক অস্ত্রোপচার শেষে ঢাকায় রেফার করা হয়েছে।

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ আল তুহিন বলেন, ইসলামী ছাত্রশিবিরপরিকল্পিতভাবে তাদের ওই দু নেতাকে জখম করেছে। মাসুদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।সে বাঁচবে কি-না তা নিয়ে চিকিৎসকরা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন আরো বলেন, শিবিরছাড়া হাত-পায়ের রগ আর কে কাটতে পারে?জামায়াত-শিবিরই এ হামলা চালিয়েছে। ওসিজানান, হামলাকারীদের ধরতে পুলিশ অভিযানে নেমেছে। ক্যাম্পাস ও আশপাশেরএলাকায় অভিযান চালানো হচ্ছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত সন্দেহভাজন পনেরজনকে আটককরেছে পুলিশ।

পুলিশের উপকমিশনার প্রলয় চিচিম বলেন, পুলিশের বেশকিছু টিম ঘটনায় জড়িতদের আটকের উদ্দেশে মাঠে কাজ করছে।অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের শীর্ষস্থানীয় নেতা আবদুর রউফঅভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে ওই দু নেতার ওপরহামলা হয়েছে।জানা গেছে, এর আগে গত শনিবার রাতে মাদার বখশ আবাসিক হলের শিবির সভাপতিওয়ালিউল্লাহ ওলিকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পিটুনি দেয়। আর সেই ঘটনায় মাসুদজড়িত ছিলো। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে শিবির হামলা চালাতে পারে কি-না জানতে চাইলেশিবিরের এ নেতা বলেন, এখানে শিবিরের সাথে ছাত্রলীগের দ্বন্দ্ব নেই।কয়েকদিন আগে টগরের সাথে ছাত্রলীগের আর এক নেতার মধ্যে মারামারির ঘটনাঘটেছিলো। ওই প্রেক্ষিতে তাদের নিজেদের মধ্যে মারামারিরঘটনা ঘটেছে।

এদিকে এ ঘটনায় আবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। গতকাল দুপুর১২টায় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করে ছাত্রলীগ। মিছিল থেকে বুধবারেরকর্মসূচিও ঘোষণা করেন তারা।