৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগ ইতিবাচক

 

৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে ছেলেমেয়েদের অন্তত একটি বিষয়ে ভোকেশনাল ট্রেনিংপ্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ ঘোষণা স্বাগত জানানোর দাবি রাখে। এতে ভবিষ্যতপ্রজন্মের আত্মকর্মসংস্থানের পথ আরও খুলে যাবে বলেই আশা করা যায়। সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়,কানাডা সরকার পঞ্চাশটিক্যাটাগরিতে দক্ষ অভিবাসী নেবে। কিন্তু ষোল কোটি মানুষের এ দেশে সবচেয়েবড় অভাব দক্ষ জনশক্তির।

বর্তমানে রেমিট্যান্স আমাদের দ্বিতীয় বৈদেশিকমুদ্রা অর্জনকারী খাত। যারা বিদেশে কাজ করছেন তাদের বেশিরভাগই অদক্ষ। আর এ কারণেই প্রতিবেশী দেশ ভারত-পাকিস্তানের শ্রমিকদের তুলনায়ও আমাদের দেশের প্রবাসী শ্রমিকদের মজুরি পান। বিশেষত যারামধ্যপ্রাচ্যে কাজ করছেন তাদের ক্ষেত্রে এটা অধিক প্রযোজ্য। যদিআমরা দক্ষ মানব সম্পদ রফতানি করতে পারি, তাহলে আমাদের আয় আরও বহুগুণবেড়ে যাবে। পৃথিবীতে দক্ষ মানব সম্পদের প্রয়োজনীয়তা কী হারে বাড়ছে,তাহা কানাডা সরকারের চাহিদা দেখে সহজেই অনুমান করা যায়। এ সুযোগেরসদ্ব্যবহার ও একুশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের সুদূরপ্রসারীচিন্তা-ভাবনা করতে হবে।

বলাবাহুল্য, স্কুল পর্যায়ে ভোকেশনালট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা সুদূরপ্রসারী চিন্তা-ভাবনারই ফসল। যেহেতু আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চাইতে মাধ্যমিক পর্যায়ে ড্রপ আউটেরসংখ্যা বেশি, সেহেতু এ সিদ্ধান্ত হতে অনেক উপকার পাওয়া যাবে। এ পর্যায়েযাহারা স্কুল ছেড়ে চলে গেছে, তাহাদের অধিকাংশই কোনো না কোনো কাজেনিযুক্ত হয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের অভাবে তারা বলতেগেলে অদক্ষ থেকেই গেছে। যেমন এক রিপোর্টে জানা যায়, আমাদের দেশে যারাটেকনিকেল পর্যায়ের কাজ করে, তাদের ৬৪ শতাংশ কখনও আনুষ্ঠানিক শিক্ষা বাপ্রশিক্ষণ লাভ করেনি। স্কুল পর্যায়ে ভোকেশনাল ট্রেনিং এ পরিস্থিতিরউন্নতি সাধনে সহায়ক হবে। শুধু ঘোষণার মধ্য না রেখে যতো দ্রুত বাস্তবায়ন করা যায় ততোই দেশের জন্য মঙ্গল।

স্কুলে ভোকেশনালট্রেনিঙের কার্যক্রম সফল করে তুলতে হলে উপযুক্ত ও পর্যাপ্ত শিক্ষক ওপ্রয়োজনীয় উপকরণের ব্যবস্থা করতে হবে অবশ্যই। এর পাশাপাশি ইংরেজি, আরবি, জাপানি, চিন, কোরিয়ান ইত্যাদি অত্যাবশ্যক বিদেশি ভাষা শিক্ষা ওতার কমিউনিকেটিভ স্কিলের ওপর জোর দিতে হবে। জনসংখ্যা সমস্যা নয়, যদি সেই জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তর করা যায়। আর তা করতে হলে দরকার প্রশিক্ষণ।

 

Leave a comment