স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি জেলা নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা ছাড়াই কেন্দ্রীয়ভাবে গঠন করতে যাচ্ছে। আজ-কালের মধ্যেই তা প্রকাশ করে প্রকাশের ৪৫ দিনের মধ্যে ইউনিয়ন, উপজেলা ও পৌর কমিটি গঠনপূর্বক জেলা সম্মেলনের নির্দেশনা দেয়া হতে পারে। কেন্দ্রীয় একাধিকসূত্র এ তথ্য জানালেও কে হচ্ছেন আহ্বায়ক তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি। তবে পুরোনোদের বাদ দিয়ে নতুনদের নিয়েই গঠিত হতে যাচ্ছে আহ্বায়ক কমিটি। এরকমই জোর গুঞ্জন রয়েছে।
কেন্দ্রীয় যুবদল নেতা বাবু খানকে আহ্বায়ক এবং শরিফুজ্জামান শরিফকে সদস্য সচিব করে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হতে যাচ্ছে বলে গতপরশু রাতে জোর গুঞ্জন ওঠে। গতকাল অবশ্য এর কোনো সত্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সভাপতি হাজি মো. মোজাম্মেল হক ও সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান দুদু ইতোমধ্যে কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছেন বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে। গত ২১ এপ্রিল বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সকাল ১০টায় এবং সন্ধ্যায় চেয়ারপারসনের গুলশানস্থ কার্যালয়ে বৈঠকের মধ্যদিয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠনের কথা ছিলো। ওই দিন বৈঠক শুরুর আগেই কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে চুয়াডাঙ্গা বিএনপি নেতৃবৃন্দ মারমারিতে জড়িয়ে পড়ে। শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হন জেলা বিএনপির একাংশের সভাপতি অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস, নতিপোতা ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনিরসহ তাদের পক্ষের বেশ কয়েকজন নেতা। এরপর বৈঠক ভেস্তে যায়। স্থগিত করা হয়। ২৫ এপ্রিলের মধ্যে বৈঠকের নতুন দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হবে বলে মুখে মুখে খবর রটে। এরও অবশ্য সত্যতা মেলেনি। এরই মাঝে কেন্দ্রীয় একাধিসূত্র বলেছে, কেন্দ্রে আর বৈঠক নয়, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ চুয়াডাঙ্গার বাস্তব অবস্থা অবলকন করেই কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তেই চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে দেবে। আহ্বায়ক কমিটি পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। এ খবর ছড়ানোর সাথে সাথে চুয়াডাঙ্গার নেতাকর্মীদের অনেকের মাঝে আবারো হতাশা ফুটে ওঠে। প্রশ্ন তুলে অনেকেই বলেছেন, গতবারও তো কেন্দ্রীয়ভাবে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেছিলো। তাতে কি কোন্দল দূর হয়েছে। বরঞ্চ বেড়েছে। পাল্টাপাল্টি কমিটি গঠনে চুয়াডাঙ্গা বিএনপির নাজুক দশা ফুটে উঠেছে। এবারও কি তাই হতে যাচ্ছে? এসব প্রশ্নের জবাব মেলেনি।
চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সভাপতি হাজি মো. মোজাম্মেল হক বয়সের কারণে মূল দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে পারেন। তিনি থাকতে চাইলে নাও রাখা হতে পারে। শামসুজ্জামান দুদু কেন্দ্রীয় নেতা। তিনি কেন্দ্রে মাঝে কিছুদিন শক্ত অবস্থানে পৌঁছুলেও ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দেয়ার দাবিতে আন্দোলনের তীব্র সময়ে তিনি খানেকটা পিছিয়ে পড়েছেন বলেই মন্তব্য অনেকের। অপরদিকে গত উপজেলা নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা সদর ও দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদে বিএনপির দলীয় প্রার্থী হিসেবে অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস তার পক্ষের দুজনকে কেন্দ্র থেকে আদায় করে নেন। এরই প্রেক্ষিতে কেন্দ্রে তার লবিং এখনও মজবুত বলেই মন্তব্য করতে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের। এরই একপর্যায়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠনের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয়ভাবে আহুত সভা ভেস্তে যাওয়ার পর নানামুখি গুঞ্জন গুজব ছড়াচ্ছে। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান দুদু নাকি অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস হচ্ছেন? এ প্রশ্নের পাশাপাশি নতুন মুখ নিয়ে আলোচনা হতেই কেন্দ্রীয় যুবদল নেতা মাহমুদ হাসান খান বাবু ও যুবদলের শরিফুজ্জামান শরিফের নাম আলোচনায় উঠে এসেছে। যদিও এদের তরফ থেকে বলা হয়েছে, এ ধরনের খবর আমাদের কাছে নেই। কে কোথা থেকে কি শুনে বাজারে ছড়াছে তা বলতে পারবো না। তবে আজ-কালের মধ্যেই যে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি কেন্দ্র থেকে প্রকাশ করতে যাচ্ছে তা অনেকই নিশ্চিত।