গাংনীর খড়মপুরে প্রতিবন্ধী অন্তঃসত্ত্বা : ৯ হাজার টাকায় মাতবর ম্যানেজ

গাংনী প্রতিনিধি: বিয়ের প্রলোভনে প্রতিবন্ধী এক নারীর দেহভোগ করেছে তৈয়ব আলী নামের মধ্যবয়সী এক ব্যক্তি। ওই নারী অন্তঃসত্ত্বা হলেও প্রভাবশালী তৈয়ব আলী ও গ্রাম্য এক মাতবরের চাপে গর্ভপাত করতে বাধ্য হয়েছেন প্রতিবন্ধীর পরিবারের সদস্যরা। মামলা না করতে প্রতিনিয়তই চাপের মধ্যে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। এমন অভিযোগ করে মানবাধিকার সংগঠন ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা। আলোচিত এ ঘটনাটি ঘটেছে মেহেরপুর গাংনী উপজেলার খড়মপুর গ্রামে।

স্থানীয় ও ভুক্তভোগীসূত্রে জানা গেছে, খড়মপুর গ্রামের মৃত মোবারক আলীর ছেলে তৈয়ব আলী (৪৩) প্রতিবেশী প্রতিবন্ধী মেয়েকে (২৫) বিয়ের প্রলোভনে দেহভোগ করে। একপর্যায়ে সে গর্ভবতী হলে বিষয়টি জানাজানি হয়। গ্রামের কয়েকজন এ অন্যায়ের প্রতিবাদ জানিয়ে সালিসসভা বসানোর চেষ্টা করেন। বিপদ বুঝতে পেরে তৈয়ব আলী ধরনা দেন একই গ্রামের আবেদ আলীর ছেলে গ্রাম্য মাতবর জাহেদ আলীর কাছে। গ্রামের অনেকেই অভিযোগ করেছেন, তৈয়ব আলীর কাছ থেকে ৯ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে জাহেদ আলী সব কিছু উল্টে দিতে মরিয়া হন। বিষয়টি তেমন কিছু না বলে উড়িয়ে দিয়ে গ্রামের মানুষকে চুপ রাখতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছেন। তৈয়ব আলী পক্ষের কিছু লোক, মাতবর জাহেদ আলী প্রতিবন্ধীর পরিবারের সদস্যদের বাধ্য করেছেন গর্ভপাত ঘটাতে। গত সপ্তায় ওই প্রতিবন্ধীর গর্ভপাত করানো হয়।

এদিকে বিষয়টি পত্রপত্রিকায় লেখালেখি না করতে সাংবাদিক ম্যানেজ করার কথা বলে তৈয়ব আলীর কাছ থেকে দু হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ওই গ্রামের মৃত লাল মহাম্মদের ছেলে মোকাজ্জেল হোসেন। গতকাল খড়মপুর গ্রামের তথ্য সংগ্রহকালে অনেকেই মোকাজ্জেলের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ করেন। জানতে চাইলে খড়মপুর গ্রামের কথিত মণ্ডল জাহেদ আলী জানান, অন্তঃসত্ত্বার কোনো ঘটনা ঘটেনি। তৈয়ব আলী ও ওই প্রতিবন্ধীর পরিবারের সদস্যদের কোনো অভিযোগ না থাকায় বিচার করা সম্ভব হয়নি। ৯ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে এমন বলছেন কি-না প্রশ্ন করলে এড়িয়ে যান তিনি। গ্রামের আরেক মাতবরর জামাত আলী জানান, অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি বিচারের জন্য গ্রামের শহিদুল ইসলাম, জিয়াউর রহমানসহ কয়েকনজন মিলে সালিসের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু তার আগেই জাহেদ আলী ৯ হাজার টাকায় ধামাচাপা দেয়। প্রতিবন্ধীর পরিবারের সদস্যরা ও গ্রামের কিছু প্রতিবাদী মানুষ জানিয়েছেন, এটি দেহভোগ নয় ধর্ষণ। তৈয়ব আলীসহ তার লোকজন গ্রামের প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ প্রতিবাদ করতে পারছেন না। মামলা কিংবা অভিযোগ করলে প্রাণনাশের হুমকিও অব্যাহত রয়েছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন প্রতিবন্ধীর পরিবারের সদস্যরা। প্রশাসন, মানবাধিকার সংগঠনসহ সচেতন মানুষের সহযোগিতা কামনা করেছেন তারা।

Leave a comment