প্রশ্নপ্রত্র ফাঁস : ছাত্রলীগ-যুবলীগ ও সাবেক মন্ত্রীর আত্মীয়সহ আটক ৩৮

 

স্টাফ রিপোর্টার: স্থগিত দ্বিতীয় দফা পরীক্ষায়ও প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে। লালমনিরহাটে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে ৬ নারীসহ ৩০ জনকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ। আটক সকলেই সাবেক প্রাথমিক গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেনের নিকটাত্মীয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।

জানা গেছে, প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে গত ৮ ডিসেম্বর ১৭ জেলার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করা হয়। ১৭ জেলা হলো, ঢাকা, রাজবাড়ি, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা শেরপুর, নারায়ণগঞ্জ, কক্সবাজার, রাজশাহী, পাবনা, লালমনিরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ। দুদফা তারিখ নির্ধারনের পর গতকাল শুক্রবার পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। গতকাল শুক্রবার বিকেলে শহরের দোয়েল আবাসিক হোটেলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে কয়েকটি কক্ষ থেকে তাদেরকে আটক করে। এ সময় আটককৃতদের নিকট থেকে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও ২৩টি মোবাইলসেট উদ্ধার করা হয়। এদের মধ্যে পাটগ্রাম উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সুমন, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি দেবাশিষ, বড়খাতা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আহসান হাবিব লাভলু, বড়খাতা ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য সাফি ও পরীক্ষার্থী শারমিন আফরোজ রয়েছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে সদর থানার এসআই লেবু মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান এবং বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। এদিকে ঘটনার পরপরই এডিসি (রাজস্ব) আবু তাহের মো. মাসুদ রানা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। দীর্ঘদিন যাবত এ চক্রটি প্রশ্নপত্র ফাঁসের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের কাছে বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে সাধারণ বেকাররা অভিযোগ করেছে।

ঝিনাইদহ অফিস জানিয়েছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িত দু কলেজ শিক্ষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসহ ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে ঝিনাইদহ ডিবি পুলিশ। ঝিনাইদহ জেলা শহরের নয়ন আবাসিক হোটেল থেকে গতকাল শুক্রবার দুপুরে তাদের গ্রেফতার করা হয়। ঘটনা জানাজানি হয় রাতে।

ঝিনাইদহ ডিবি পুলিশের একটি সূত্র জানায়, দুপুরে পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর পর গোপনসূত্রে খবর পেয়ে এসআই রফিক, এএসআই সিদ্দিক, এএসআই আলীম আবাসিক হোটেলটির ১০৮ নং কক্ষে হানা দেয়। এ সময় তারা ৮টি মোবাইলফোন, ব্যাগ ভর্তি বই কাগজপত্রসহ ৮ জনকে আটক করেন।

এরা হলেন- সাজ্জাদুল ইসলাম, মনোয়ার হোসেন, আব্দুল ওয়াদুদ, মুক্তার হোসেন, রাজু অহম্মেদ, রুহুল আমীন, নাজুমুল আলম ও এনামুল হক। সূত্রমতে, আটক করা ব্যক্তিদের মধ্যে মহেশপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজের একজন শিক্ষক, একজন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রয়েছেন। সকলের বাড়ি শৈলকুপা উপজেলার একাধিক গ্রামে। অভিনব কৌশলে তারা মোবাইলফোনের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে উত্তরপত্র চুক্তি করা প্রার্থীদের কাছে পৌঁছিয়ে দেন। ৩ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা বিনিময়ে এ কাজ করছিলেন তারা।

এদিকে রাতে বিশেষ সূত্রে খবর পেয়ে ঝিনাইদহ ডিবি অফিসে যাওয়ার পরে আটক করা ব্যক্তিদের ছবি তুলতে ডিবির ওসি অজ্ঞাত কারণে বাধা দেয়। একপর্যায়ে ডিবির ওসি মো. সলেমান হোসেন বলেছেন, এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে।

Leave a comment