ঝিনাইদহ অফিস: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বাফার স্টক সার গুদাম থেকে ৪ জেলার ডিলারদের দীর্ঘদিন পড়ে থাকা জমাট বাধা ইউরিয়া সার গছিয়ে দেয়া হচ্ছে। এ সার ডিলাররা চাষিদের কাছে বিক্রি করছেন। এর আগে গত বছর সেপ্টেম্বর মাসেও এ গুদাম থেকে জমাট বাধা ইউরিয়া সার বিসিআইসির ডিলারদের গছিয়ে দেয়া হয়েছিলো। এ সার ক্ষেতে ব্যবহার করে ফল পাচ্ছেন না চাষিরা। চলতি মরসুমে ঝিনাইদহে এক লাখ হেক্টর জমিতে আমনচাষের লক্ষ্যমাত্রা বেড়েছে। সারের কারণে আমনের উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেক কৃষক। এর ফলে সবজিচাষ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। নষ্ট এ ইউরিয়া সার নিয়ে কষ্টে আছেন জেলার কৃষকেরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বগুড়ার সান্তাহার গুদামে দীর্ঘদিন পড়ে থাকা সার ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ গুদামে পাঠানো হচ্ছে। এ গুদাম থেকে কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহ জেলার বিসিআইসি’র ডিলারদের সরবরাহ করা হয়। ডিলারদের অভিযোগ, এক রকম চাপে ফেলে জমাট বাধা সার তাদের গছিয়ে দেয়া হচ্ছে। না নিয়েও উপায় নেই তাদের। চাষির কাছে বিক্রি করলে বাড়ি নিয়ে শাবল দিয়ে ভাঙতে হচ্ছে। কেউ কেউ আবার ফেরত দিয়ে যাচ্ছে।
ঝিনাইদহ সার ডিলার সমিতির সভাপতি হাজি জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, গত বছর একবার এ ধরনের সার নিয়ে ডিলাররা বিপাকে পড়েছিলেন। এবার আবার সান্তাহার গুদাম থেকে জমাট বাধা সার কালীগঞ্জে পাঠানো হচ্ছে। তিনি জানতে পেরেছেন ১২ হাজার টন এ ধরনের সার পাঠানো হবে। ইতোমধ্যে প্রায় ৬ হাজার টন এসে গেছে। এ সার ডিলারদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। বিদেশ থেকে আমদানিকৃত এ সার দীর্ঘদিন গুদামে পড়ে থেকে জমাট বেধে পাথর হয়ে গেছে। ডিলাররা এ সার নিতে চাইছেন না। এদিকে মঙ্গলবার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আব্দুল হাই এবং জেলা প্রশাসক শফিকুল ইসলাম এ সার গুদাম পরিদর্শন করেছেন।
জেলা প্রশাসক শফিকুল ইসলাম জানান, জমাট বাধা সারের মধ্যে যেগুলো ভালো আছে তা গুঁড়া করে নতুন প্যাকিং করে ডিলারদের দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। গুদাম কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ জানান, এ পর্যন্ত ৬ হাজার টন এ ধরনের সার সান্তাহার থেকে এসে পৌঁছেছে। গুদামের ভেতর জায়গা না থাকায় বাইরে রাখা হচ্ছে। গত বছরে সান্তাহার থেকে পাঠানো জমাট বাধা ৩ হাজার টন সার গুদামে পড়ে আছে। ডিলাররা এ সার নিতে চান।
জেলা সার ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জয়নুল আবেদীন বলেন, জমাটবাধা ইউরিয়া সারের গুণাগুণ নষ্ট হয় না। তবে বস্তাবন্দি এমন সার না কেনাই ভালো। এদিকে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জমাট হওয়ার ফলে ইউরিয়া সার নষ্ট হয়ে যায়। এ সার জমিতে ব্যবহার করে চাষিরা কোনো ফল পাবেন না।