মেহেরপুরে আবাদ নেই তবুও তরমুজের জমজমাট ব্যবসা!

মহাসিন আলী: আবাদ না হলেও মেহেরপুর জেলার হাটে-বাজারে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ আমদানি হচ্ছে রসালো ফল তরমুজ। দাম বেশি হলেও তরমুজ খেয়ে তৃষ্ণা মেটাচ্ছেন আর সেই সাথে মরসুমি ফলের স্বাদ গ্রহণ করছেন এ জেলার মানুষ। সাথে সাথে এ ব্যবসার সাথে জড়িয়ে মেহেরপুরের শ শ মানুষ অল্প সময়ের কর্মসংস্থান খুঁজে পেয়েছেন।

এক সময় মেহেরপুর জেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের মাঠে অল্প পরিমাণ জমিতে তরমুজের চাষ হলেও বিগত কয়েক বছর ধরে এ জেলার মানুষ আর তরমুজের চাষ করেন না। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের হিসেব মতে, এ জেলার কোনো মাঠে তরমুজের চাষ নেই। সবজি চাষ লাভজনক হওয়ায় এ জেলার কৃষকরা প্রচুর পরিমাণে সবজি চাষ করে থাকেন। কয়েক বছর আগেও মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি, রঘুনাথপুর, ছটাঙ্গা, পিরোজপুর, গাংনী উপজেলার সাহারবাটিসহ বেশ কিছু গ্রামের মাঠে তরমুজ চাষ হতে দেখা যেতো।

জেলায় তরমুজের আবাদ না হলে ক্ষতি কি? রসালো মরসুমি এ ফলের স্বাদ পেতে কে না চায়? তাইতো জেলার বাইরে থেকে এ জেলায় তরমুজ আমদানি হচ্ছে। কাঠ ফাটা রোদ আর প্রচণ্ড গরমে তরমুজ খেয়ে স্বস্তি খোঁজেন এ জেলাব মানুষ। শহরের মোড়ে মোড়ে ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এবং গ্রাম-গঞ্জের হাটে বাজারে বসছে তরমুজের দোকান। তবে মেহেরপুরবাসীকে চড়া দামে কিনতে হচ্ছে এ ফল। তিন ক্যাটাগরিতে মেহেরপুরে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি ছোট তরমুজ ৫০ টাকা থেকে একশ টাকায়, মাঝারি তরমুজ একশ টাকা থেকে দেড়শ টাকা এবং বড় তরমুজ দেড়শ থেকে ২শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও বাজারে এক ফালি তরমুজ ১০ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি করছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। দাম বেশি হলেও একটি আস্ত ফল কিনতে ক্রেতার কমতি নেই।

জেলায় বইরে থেকে তরমুজ আমদানি করেও এ জেলার ব্যবসায়ীরা ব্যাপকভাবে লাভবান হচ্ছেন। মাত্র দু মাসের এ ফল ব্যবসায় ব্যাবসায়ীদের পাশাপাশি অনেকে সংসার চালানোর সাময়িক পথ খুঁজে পেয়েছেন। মেহেরপুর জেলা সদরের আমঝুপি গ্রামের মনজুর ওরফে বাগবুল চৈত্র মাসের প্রথম থেকে মরসুমি ফল তরমুজের ব্যবসা শুরু করেছেন। তিনি বরিশালের তরমুজ চাষিদের নিকট থেকে কিনে ট্রাকযোগে মেহেরপুরে তরমুজ আমদানি করছেন। মেহেরপুর শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ভাড়া করা জায়গায় মরসুমি এ ফলের ব্যবসা করেন তিনি। প্রতিদিন তার দু ট্রাক তরমুজ কাটতে হয়।

মেহেরপুর শহরে বাগবুল, হামিদুল, মনিসহ আরও অনেকে মরসুমি এ ফল মেহেরপুরে আমদানি ও জেলার বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জে রফতানি করেন। তরমুজের ব্যবসা শেষ হতে না হতে তারা মেহেরপুরের উৎপন্ন আম-কাঁঠালের ব্যবসা করবেন। ব্যবসায়ীরা আরও বলেন, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, আমতলী ও খেপুপাড়ায় পর্যাপ্ত পরিমাণ তরমুজ চাষ হয়। চৈত্রের প্রথমে ওইসব জেলা থেকে ছোট জেলায় প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ ট্রাক তরমুজ আমদানি হচ্ছে। আরও কিছু দিন পরে রংপুর অঞ্চলের তরমুজ আমদানি হবে। দু মাসের জন্য তরমুজের ব্যবসা হলেও এ ব্যবসার সাথে জড়িয়ে স্বল্প সময়ের রুটি রোজগারের ব্যবস্থা করে নিয়েছে কয়েকশ বেকার মানুষ।

Leave a comment