ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ : লম্পটের আত্মগোপন

চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার ভোলারদাড়িতে দু সন্তানের জনক লম্পট জিল্লুরের বিরুদ্ধে অমানবিক লাম্পট্যের অভিযোগ  

ভোলারদাড়ি থেকে ফিরে সদরুল নিপুল: ধারালো অস্ত্র হেঁসো গলায় ধরে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে পানবরজের ভেতর নিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে ২য় শ্রেণির ছাত্রীকে। উপর্যুপরি ধর্ষণের শিকার নাবালিকা কন্যার রক্তক্ষরণ ও অসহনীয় যন্ত্রণায় ছটফট করছে। অভিযুক্ত লম্পট দু সন্তানের জনক জিল্লুর প্রভাব খাটিয়ে মামলা থেকে রেহাই পাওয়ার পাঁয়তারা চালাচ্ছে।

স্থানীয়রা বলেছেন, সুষ্ঠু বিচারের আশা নিয়ে মামলা করার লক্ষ্যে থানায় যাওয়ার পথে প্রভাবশালী আসামি জিল্লুরের পক্ষের লোকজন দফায় দফায় প্রতিরোধ করে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে এবং চাপ সৃষ্টি করছে। আসামিপক্ষের লোকজনের প্রলোভন আর হুমকিধামকিতে দুর্বল না হয়ে ধর্ষিতার হতদরিদ্র পিত-মাতা উপযুক্ত বিচার পাওয়ার আশায় আলমডাঙ্গা থানায় ধর্ষক লম্পট জিল্লুরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত ধর্ষক জিল্লুর আত্মগোপন করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদাহ ইউনিয়নের নিভৃত পল্লী ভোলারদাড়ি গ্রামে।

সরেজমিনে জানা গেছে, ভোলারদাড়ি গ্রামের ক্যানাল সংলগ্ন দক্ষিণপাড়ার ক্ষুদ্র চাষির ছোট মেয়ে ২য় শ্রেণির পড়ুয়া গতপরশু শুক্রবার দুপুরে স্কুল ছুটি থাকায় প্রতিবেশী বন্ধু-বান্ধবদের সাথে বাড়ির নিকটবর্তী ক্যানালের ওপর খেলা করছিলো। দুপুর ১টা বেজে গেলে সবাই চলে গেলে ওই ছাত্রী বাড়ির উদ্দেশে আসছিলো। হঠাৎ এ সময় ভোলারদাড়ি গ্রামের মাঝের পাড়ার মকবুল হোসেনের ছেলে দু সন্তানের জনক জিল্লুর রহমান (৩০) ক্যানালের আশপাশে কোনো মানুষ না থাকায় তার হাত ধরে জোর করে ক্যানালের পাশে বোরহানের পানবরজের ভেতর নিয়ে যায়। এরপর লম্পট জিল্লুর তার হাতে থাকা হেঁসো ছাত্রীর গলায় ধরে ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করে। গতপরশু শুক্রবার ঘটলেও মান-সম্মান আর বিভিন্ন ব্যক্তির চাপের মুখে গ্রামের মানুষ জানতো না। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় গতকাল শনিবার সকালে তাকে আলমডাঙ্গার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে বিষয়টি গ্রামের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। গতকাল দুপুরে অসহায় ছাত্রী ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে অভিযোগ করে মাথাভাঙ্গাকে জানায়, শুক্রবার দুপুরে খেলা শেষে ক্যানাল থেকে বাড়ি আসার পথে জিল্লুর আমার হাত ধরে টানতে টানতে একটি পানবরজের ভেতর নিয়ে গিয়ে হেঁসো গলায় ধরে ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষণ করার পর জিল্লুর আমাকে ভয় দেখিয়ে বলে এ কথা যদি কাউকে বলে দিস তাহলে তোকে খুন করে ফেলবো। অল্প বয়সে ধর্ষণের শিকার সে বাড়িতে এসে গোসল করে তার মায়ের সাথে ভাত খেতে বসে। ভাত খাওয়ার সময় তার মা মেয়ের পরনের পায়জামায় রক্ত দেখে চমকে ওঠেন। বয়স কম হওয়ার কারণে এবং অসুস্থবোধ করায় ধর্ষিতা ছাত্রী এ প্রতিবেদকের কাছে বেশি কথা বলতে পারেনি। মেয়ের মান-সম্মানের দিকে তাকিয়ে তার পিতা-মাতা নিকটতম কাউকে বিষয়টি জানায়নি। তার মা বলেন, প্রতি শুক্রবারের মতো প্রতিবেশী হাসেম মণ্ডলের বাড়িতে মহল্লার মহিলাদের অংশগ্রহণে জুম্মার নামাজ আদায় করতে যায়। নামাজ পড়া শেষে বাড়িতে এসে ভাত খাওয়ার সময় তার পায়জামায় অনেক রক্ত দেখে চমকে উঠি। ছাত্রীর মা বাদী হয়ে অভিযুক্ত ধর্ষক জিল্লুরের বিরুদ্ধে গতকাল বিকেলে আলমডাঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

এদিকে অভিযুক্ত ধর্ষক জিল্লুরের বোন মুসলিমা খাতুন পাল্টা অভিযোগ করে জানান, আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা। স্কুলছাত্রীর পরিবার এবং এলাকার মানুষ অভিযুক্ত ধর্ষক জিল্লুরের উপযুক্ত শাস্তি দাবিসহ বিভিন্ন এনজিও সংস্থার হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।

Leave a comment