স্টাফ রিপোর্টার: বিশ্বকাপের কোনো আসরে দক্ষিণ আফ্রিকার ফাইনাল খেলার স্বপ্ন গুড়িয়ে দিয়েছে ভারত। সহজেই ৬ উইকেটে জিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হচ্ছে সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালেও মুখোমুখি হয়েছিলো এ দুটি দল। ২০১১ সালের সেই ফাইনালে জিতে দ্বিতীয় ওয়ানডে বিশ্বকাপ ঘরে নেয় ভারত। গতকাল শুক্রবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেটে ১৭২ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা।
জবাবে বিরাট কোহলির ব্যাটে ভর করে ৫ বল হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ভারত। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন রোহিত শর্মা (১৩ বলে ২৪)। বিউরান হেনরিক্সের বলে ফাফ দু প্লেসির ক্যাচে আউট হন তিনি। বিরাট কোহলির সাথে ৩৮ রানের জুটি গড়ে বিদায় নেন অন্য উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান অজিঙ্কা রাহানে (৩২)। তৃতীয় উইকেটে যুবরাজ সিঙের সাথে ৫৬ রানের জুটিতে জয়ের দিকে এগিয়ে যায় ওয়ানডের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। ষোড়শ ওভারের শেষ বলে এবি ডি ভিলিয়ার্সের চমৎকার ক্যাচে পরিণত হয়ে যুবরাজ বিদায় নেয়ার সময় ভারতের ২৪ বলে প্রয়োজন ছিলো ৪০ রান। ওয়েইন পার্নেলের করা ১৭তম ওভারে ১৭ রান নিয়ে সমীকরণ নিজেদের পক্ষে নিয়ে আসেন কোহলি ও সুরেশ রায়না। মাত্র ১০ বলে ২১ রানের আক্রমণাত্মক ইনিংস খেলা রায়নার বিদায়ের সময় জয় থেকে ভারত মাত্র ৬ রান দূরে। আগের ওভারের শেষ বলটি থেকে প্রয়োজনীয় ১ রান নেননি দেননি অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি, জয়সূচক রানটি করার সুযোগটি করে দিয়েছিলেন কোহলিকে। শেষ ওভারের প্রথম বলে চার হাঁকিয়ে দলকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে পৌঁছে দেন কোহলি। ৭২ রানে অপরাজিত থাকা কোহলির ৪৪ বলের ইনিংসটি সাজানো ৫টি চার ও ২টি ছক্কায়। চমৎকার ইনিংসের সুবাদে ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জেতেন তিনি। এর আগে প্রথম ওভারেই কুইন্টন ডি ককের বিদায়ে শুরুটা ভালো হয়নি দক্ষিণ আফ্রিকার। ভুবনেশ্বর কুমারের করা তৃতীয় বলটি ব্যাটের কানায় লাগলেও চার পেয়েছিলেন ডি কক। পরের বলে আর ভাগ্যের সহায়তা পাননি। ব্যাটের ভেতরের কানায় লেগে বল জমা পড়ে মহেন্দ্র সিং ধোনির গ্লাভসে। ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে দলকে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ‘ক্যারাম বল’ বুঝতে না পেরে বোল্ড হয়ে যান হাশিম আমলা। পাওয়ার প্লেতে দু উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানকে হারালেও খেলায় তার কোনো প্রভাব পড়তে দেননি এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরা অধিনায়ক ফাফ দু প্লেসি ও জেপি ডুমিনি। তৃতীয় উইকেটে ৭১ রানের জুটি গড়েন দুজন। ৫২ বলের এ জুটি ভাঙার কৃতিত্বও অশ্বিনের। এ অফস্পিনারের আরেকটি ‘ক্যারাম বল’ অদ্ভুতভাবে খেলতে গিয়েছিলেন দু প্লেসি (৫৮); কিন্তু বোল্ড হয়ে ফিরতে হয় তাকে। প্লেসির ৪১ বলের ইনিংসে ছিলো ৫টি চার ও ২টি ছক্কা। এরপর এবি ডি ভিলিয়ার্সকেও ফেরান অশ্বিন। কিন্তু তবুও বড় সংগ্রহই দাঁড় করায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এতে বড় কৃতিত্ব ডুমিনি ও ডেভিড মিলারের (১২ বলে অপরাজিত ২৩)। ২৭ বলে ৪৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন এ দুজনে। ৪৫ রানে অপরাজিত থাকা ডুমিনির ৪০ বলের ইনিংসে ছিল ১টি চার ও ৩টি ছক্কা। ২২ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ভারতের সেরা বোলার অশ্বিন। ম্যাচসেরা: বিরাট কোহলি।