ব্যান্ড-বঙ্গ গীটার কঙ্গো আর বুকটা ফাইট্যা যায় এর তোড়ে হারিয়ে যাচ্ছে জীবন ঘনিষ্ঠ গান, যা এখন নির্বাসিত প্রায়। ঠিক যেমনভাবে নির্বাসিত হয়েছে গণমানুষের কল্যাণমুখী রাজনীতির নীতি, এমনই একটা হারিয়ে যাওয়ার গানের কথা বারবার মনে পড়ছে- ভুল সব-ই ভুল, এই জীবনের পাতায় পাতায় যা লেখা- সে ভুল, এই গানটির সুরেই শুধু বাক্যের হেরফের ঘটিয়ে একটা গান হয়তো একদিন এই দেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষদের গাইতে হবে। এমন কি হয়তো একদিন একাত্তরের লড়াকু মুক্তিযোদ্ধারা কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে গাইবেন ভুল সবই ভুল, আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে যা লেখা সে ভুল। কিংবা একদিন বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের শিল্পীরা সমস্বরে গেয়ে উঠবেন- আওয়ামী লীগ যা বলে তা ভুল। আওয়ামী লীগের কথায় বার্তায় যা বলে তা ভুল, অনাগত ভবিষ্যতের সম্ভাব্য এই গানের কথাগুলো বলতে বা লিখতে হলো এই জন্য যে, আগামী ২৬ মার্চ বাংলাদেশের লাখো মানুষ সেনাবাহিনীর প্যারেড গ্রাউন্ড ময়দানে নিজ দেশের জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার জন্য যখন উদগ্রীব হয়ে অপেক্ষা করছে ঠিক তখনই এলো একটি মন ভাঙা হৃদয় ভাঙা সেই মর্মান্তিক খবর, লাখো কণ্ঠের জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার ব্যয়ভার তথা খরচ মেটানোর জন্য মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দলটি এই সেই দলের সরকার মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী, জঙ্গিবাদীর অর্থ জোগানদার জামায়াতের মালিকানাধীন ইসলামী ব্যাংকের কাছ থেকে তিন কোটি টাকা গ্রহণ করেছে। আর এই তিন কোটি টাকার চেকটি গ্রহণ করেছেন বাংলাদেশের স্থপতি, হাজার বছের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাঙালি জাতির মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু সুযোগ্য (?) কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ধরনী দ্বিধা হও)। অবশ্য ইসলামী ব্যাংকের দেয়া তিন কোটি নিয়ে সরকারের দায়িত্বশীল দু মন্ত্রী দু রকম কথা বলেছেন। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে উজ্জীবিতকারী সংগঠন গণজাগরণ মঞ্চসহ দেশের তাবৎ প্রগতিশীল ব্যক্তি ও সংগঠন। তথ্যমন্ত্রী বিষয়টি নাচক করলেও গোপন করেননি রাম রাজনীতির নামাবলী গায়ে চাপানো তথ্যমন্ত্রী। পাপ কোনোদিন গোপন করেননি পাপ নাক গা ফুঁড়ে বের হয়। ইলেকট্রনিক্স গণমাধ্যমে দেশবাসীও দেখেছে প্রধানমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রী আর মুক্তিযুদ্ধের নামাবলী গায়ে দেয়া অতীত এবং বর্তমান আমলা জ্বালানি মন্ত্রী মহোদয়ের কেমন বিগলিত হাসি দেয় ইসলাম ব্যাংকের পিআরডি’র ভাইস চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মুস্তফা আনোয়ারের হাত থেকে কিভাবে তিন কোটি টাকার চেকটি গ্রহণ করছেন। অবশ্য এবারই প্রথম নয়, এর আগেও বিশ্বকাপ ক্রিকেট আয়োজনের সময় রাজাকার স্বাধীনতা বিরোধীদের ব্যাংক, জঙ্গিদের অর্থের জোগান দাতা ইসলামী ব্যাংককে ঢাকার রাস্তার আলোকসজ্জাসহ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে স্পন্সর করার সুযোগ দেয়া হয়েছিলো। এগুলো ধর্তব্য না নিলেও লাখো কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার আয়োজনে জামাতি ব্যাংকের কাছ থেকে সহযোগিতা নিয়ে যে কথাটি জনমানুষের কাছে প্রতিষ্ঠিত করেছে যে, তারা জনগণ্য যতোই আন্দোলন-দাবি-দাওয় করুন না কেন, আদালাত যতই নির্দেশনা দিক না কেন জামায়াতে ইসলামী কিংবা ইসলামী ব্যাংক কোনোটাই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করবে না। বস্ত্রশিল্প বাজার, কুটির ষড়যন্ত্র জ্ঞাত নবাবের সেই গুপ্তচরের ভাষারই প্রতিধ্বনি করে বলতে হয়, ওগো তোমরাকে কোথায়, আছো তোমার মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী শুনে নাও তোমাদের পলাশীর যুদ্ধ (জামায়াত এবং ইসলামী ব্যাংক) নিষিদ্ধ হবে না