ভুয়া সনদে বহু শিক্ষক

স্টাফ রিপোর্টার: জাল ও ভুয়া সনদে শিক্ষকতা করছেন ৫০ হাজার শিক্ষক। এরই মধ্যে দেশের ৪৩টি জেলার শতাধিক কলেজ, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদরাসা পরিদর্শন করে ১০৬ জন ভুয়া ও জাল সনদধারী শিক্ষক চিহ্নিত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতর। ২০১৩ সাল থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তদন্ত করা পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতরের তদন্ত কমিটি এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন জমা দিয়েছে মন্ত্রণালয়ের অডিট ও আইন সেলে। একজন যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে এ সেল এসব শিক্ষকের শাস্তির বিষয়টি নিয়ে ভাবছে। এ সংক্রান্ত আগামী মিটিঙে মন্ত্রীর কাছে তাদের প্রস্তাব তুলে ধরা হবে বলে সূত্রটি জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ১০৬ শিক্ষক ৩ কোটি ৩৪ লাখ ৮৭ হাজার ৭১৯ টাকা সরকারি কোষাগার থেকে বেতন-ভাতা নিয়েছেন। তাদের এসব টাকা ফেরত নেয়ার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। সূত্র জানিয়েছে, সারা দেশে ৩০ হাজার এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক রয়েছে ৫ লাখ। মন্ত্রণালয় সূত্র মতে এর ১০ শতাংশ শিক্ষকই জাল কিংবা ভুয়া সনদ দিয়ে প্রতিষ্ঠানে দিব্যি চাকরি করে যাচ্ছেন। সে হিসাবে কমপক্ষে ৫০ হাজার শিক্ষক রয়েছে জাল কিংবা ভুয়া সনদধারী। ওই সব শিক্ষককে চিহ্নিত করতে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশের সকল প্রতিষ্ঠানে এ কমিটি তদন্ত চালাবে বলে সূত্রটি জানিয়েছে। এরই মধ্যে এ কমিটি নেত্রকোনায় ২টি,  ফরিদপুরে ২টি, কিশোরগঞ্জে ৪টি, টাঙ্গাইলে ৩টি, গাজীপুরে ৪টি, রাজবাড়ীতে ২টি, পাবনায় ৫টি, ঠাকুরগাঁওয়ে ৩টি, লালমনিরহাটে ৫টি, সিরাজগঞ্জে ৮টি, নওগাঁয় ৫টি, কুড়িগ্রামে ৩টি, জয়পুরহাটে ২টি, চাঁপাই নবাবগঞ্জে ৩টি, যশোরে ৫টি, বরিশালে ২টি, ঝিনাইদহে ২টি, পিরোজপুরে ২টি, ভোলায় ২টি, নড়াইলে ৩টি ও মেহেরপুরে ৩টি বিদ্যালয় চিহ্নিত করেছে। এছাড়া ময়মনসিংহ, নরসিংদী, শেরপুর, শরীয়তপুর, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, গাইবান্ধা, দিনাজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বাগেরহাট, মাগুরা, সাতক্ষীরা ও কুষ্টিয়া জেলায় রয়েছে ১টি করে বিদ্যালয়। তদন্তকালে যেসব প্রতিষ্ঠানের সনদ জাল ও ভুয়া হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে সে সব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও। এছাড়া, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ, জাতীয় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও গবেষণা একাডেমী (নেকটার) বগুড়া, দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, লিমা কম্পিউটার সায়েন্স একাডেমি পাবনা, এনটিআরসি। এছাড়া এমন প্রতিষ্ঠানের সনদ রয়েছে যেসব প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব পায়নি তদন্ত কমিটি। এমন একটি প্রতিষ্ঠান রাজশাহীর সেন্টার ফর ইনোভেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অন ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কম্পিউটার্স। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি বর্ণিত ঠিকানায় পাওয়া যায়নি। এমন আরেকটি প্রতিষ্ঠান কমার্শিয়াল কম্পিউটার সেন্টার।

Leave a comment