আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী শহিদুল কাউনাইন টিলুর সংবাদ সম্মেলন

 

 

 

আওয়ামী লীগ প্রার্থীর লোকজন ভোটকেন্দ্র দখলের পাঁয়তারা করছে : দিচ্ছে খুনের হুমকি

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী শহিদুল কাউনাইন টিলু ও ভাইস চেয়ারম্যান ইমদাদুল হক ডাবু যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলেছেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে নির্বাচিত করার লক্ষ্যে কেন্দ্র দখলের পূর্বপ্রস্তুতি চলছে। তারই অংশ হিসেবে ইতোমধ্যেই বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের নেতা-কর্মী সমর্থকদের হুমকি দিয়ে বলা হচ্ছে, নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা বন্ধ করে দাও, বন্ধ করা না হলে লাশ ফেলে দেয়া হবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে চেয়ারম্যান প্রার্থী শহিদুল কাউনাইন টিলু বলেন, নির্বাচনী তফশিল ঘোষণার পর হতে বিএনপি ঘাটি হিসেবে পরিচিত আলমডাঙ্গা উপজেলায় আমার পক্ষে ভোট প্রদানের জন্য ভোটারদের ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও আগ্রহ ফুটে ওঠে। আমার প্রতিদ্বন্দ্বী সরকার দলীয় সমর্থিত প্রার্থীর লোকজন বিভিন্নভাবে আমার পক্ষের ভোটকর্মী ও ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন ও ভোটকেন্দ্রে যেতে বারণ করছে। আমার কর্মী ও ভোটারদের বিভিন্ন বাজারে, চায়ের দোকানে ও বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে হুমকি-ধামকি দিয়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে আমার দোয়াত-কলম মার্কা সম্বলিত পোস্টার ও ব্যানার ছিড়ে ফেলা হচ্ছে এবং প্রচারণায় সরাসরি বাধা প্রদান করছে। যা নির্বাচনী আইন লঙ্ঘন। এতে আমি উদ্বিগ্ন।

সংবাদ সম্মেলনে শহিদুল কাউনাইন টিলু অভিযোগ করে বলেন, সরকারি দলের সমর্থিত প্রার্থীর লোকজন আমার কর্মী, প্রিসাইডিং অফিসার ও ভোটারদের উদ্দেশে বলেছে, ‘তোমরা ভোটের প্রচারণা বন্ধ করে দাও, ভোটের দু দিন আগে এলাকা ছেড়ে চলে যাও, যারা পোলিং এজেন্ট হবে তাদের বড় ধরনের ক্ষতি হবে, ভোট কেন্দ্রে গেলে হাত-পা ভেঙে দেয়া হবে, বেশি বাড়াবাড়ি করলে লাশ ফেলে দেয়া হবে’ এছাড়াও তাদের নিজেদের পছন্দমতো প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগ হবে বলে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। এটা প্রচার হওয়ার কারণে শান্তিপ্রিয় ভোটাররা চরম আতঙ্কের মধ্যে আছে। এসব বিষয়ে আমি রিটার্নিং/সহকারী অফিসার, পুলিশ সুপার, র‌্যাব, সেনাবাহিনীসহ প্রশাসনের সকল পর্যায়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বার বার আবেদন জানিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি না। তাই আজ আমি জাতির বিবেক হিসেবে আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনের সকল পর্যায়ের ব্যক্তিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এবং তাদের প্রতি আমার উদাত্ত্ব আহ্বান সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ সৃষ্টি করুন। একটি অবাধ নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটাররা উপস্থিত হয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে পারে তার ব্যবস্থা করবেন এটা আপনাদের দায়িত্ব।

সাংবাদিকদের সকল প্রকারের সহযোগিতা চেয়ে বলা হয়, আগাম কয়েকটি দিন ভোটের জন্য খুবই গুরত্বপূর্ণ, তাই একদিন আপনাদের নজরদারি বাড়ানোর জন্য বিশেষ অনুরোধ করছি এবং আশা করছি আগামী ৩১ মার্চ নির্বাচনের দিন নিম্ন লিখিত অতি ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রসহ সকল কেন্দ্রে প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিক ও ভোট পর্যবেক্ষকরা উপস্থিত থেকে প্রকৃত চিত্র তুলে ধরবেন। অতি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো হলো- গোবিন্দপুর জেএন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আলমডাঙ্গা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বেলগাছি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (মহিলা ভোট কেন্দ্র), বেলগাছি মাধমিক বিদ্যালয় (পুরুষ ভোটকেন্দ্র), পারকুলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কুমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (পুরুষ ভোটকেন্দ্র), কুমারী উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (মহিলা ভোটকেন্দ্র), কামালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, যাদবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাঁপানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চিৎলা-রইতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সিএইচআর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কয়রাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোকুলখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আইন্দিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খাদিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাঁচকমলাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আলিটনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রংপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রায়সা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জোড়গাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঘোলদাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নান্দবার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বড়গাংনী নাসরুল উলুম সিদ্দিকীয়া দাখিল মাদরাসা, বড় গাংনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান দুদু, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক অ্যাড. ওয়াহেদুজ্জামান বুলা, আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, সহসভাপতি আসিরুল ইসলাম সেলিম, এসকে সাদি, আলমডাঙ্গা বিএনপি ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইশরাফ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান পিন্টু, সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুর জব্বার, সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, পৌর বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল হক, উপজেলা কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক বোরহান উদ্দিন, যুবদলের যুগ্মআহ্বায়ক মাগরিবুর রহমান, ওহিদুল ইসলাম বাবু, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী এমদাদুল হক ডাবু ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী পারুলা খাতুন প্রমুখ।

Leave a comment