সহযোগীসহ প্রেমিক রায়হান গ্রেফতার

 

স্টাফ রিপোর্টার: চট্টগ্রামে বাসায় ঢুকে মা-মেয়েকে হত্যার ঘটনায় আবু রায়হান ও শহিদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাত ১২টায় ঢাকার ফকিরাপুল এলাকার একটি আবাসিক হোটেল থেকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ রায়হানকে গ্রেফতার করে। একই রাতে চট্টগ্রামের পাহাড়তলী থানার শহীদ মির্জা লেইন থেকে রায়হানের সহযোগী ও প্রাইভেট কারচালক শহিদকে গ্রেফতার করে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেফতারের পর রায়হান ও শহিদ হত্যার কথা স্বীকার করে বলেছে, তারা দুজনই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। রায়হান দাবি করেছে, সায়মা নাজনীন নিশাতের সাথে তার (রায়হান) প্রেম ছিলো। সায়মা বিশ্বাসঘাতকতা করায় তাকে ও তার মাকে খুন করা হয়। হত্যাকাণ্ডে রায়হান ও শহিদ অংশ নেয় বলেও স্বীকার করেছে। এদিকে বুধবার ভোরে রায়হানকে নিয়ে চট্টগ্রামে রওনা হয় পুলিশ। সোমবার চট্টগ্রামে সায়মা নাজনীন নিশাত ও তার মা রিজিয়া খাতুনকে নৃশংসভাবে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়।

যেভাবে গ্রেফতার রায়হান ও শহিদ: মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ফকিরাপুলের আবাসিক হোটেল ‘আসর’-এ ওঠে আবু রায়হান। ওই হোটেলে ওঠার পর নিজেকে অনিরাপদ মনে করে রাত ৯টার দিকে একই এলাকার মুনস্টার হোটেলের ২০২ নম্বর কক্ষে ওঠে। রাতে মোবাইল নম্বরও পরিবর্তন করে ফেলে সে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি টিম মোবাইল ট্রাকিং করে রাত ১২টার দিকে মুনস্টার হোটেলে অভিযান চালায়। অভিযানে নেতৃত্বে দেন ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার সাইফুল ইসলাম ও সিনিয়র সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। ২০২ নম্বর কক্ষ থেকে আবু রায়হানকে গ্রেফতার করা হয়। রায়হানের দেয়া তথ্যমতে চট্টগ্রাম গোয়েন্দা পুলিশ শহিদকে রাত দেড়টার দিকে চট্টগ্রামের পাহাড়তলী থানার শহীদ মির্জা লেইন থেকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আবু রায়হান ও শহিদ রিজিয়া খাতুন ও সাইমা নাজনীন নিশাতকে খুনের কথা স্বীকার করে বহু তথ্য দিয়েছে। হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী আবু রায়হান। সহযোগী হিসেবে শহিদকে ভাড়া করে রায়হান। এ দুজন মা ও মেয়েকে ছুরিকাঘাত করে খুন করে।

খুনের বর্ণনা দিয়েছে রায়হান: পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সোমবার সকালে একটি ব্যাগে ধারালো ছুরি নিয়ে আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকায় সায়মাদের বাসার সামনে যায় রায়হান ও শহিদ। সায়মার পিতা ও ভাই বাসা থেকে বের হওয়ার অপেক্ষায় থাকে তারা। পিতা ও ভাই বেরিয়ে যাওয়ার পরপরই রায়হান ও শহিদ সায়মাদের বাসার দরজায় নক করে। গেট খুলেই রায়হানকে দেখে চলে যেতে বলে সায়মা। এ সময় সায়মার মুখ চেপে ধরে টানাহেঁচড়া করে রায়হান। সায়মার চিৎকারে তার মা রিজিয়া খাতুন ছুটে এসে বাধা দেয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় শহিদ রিজিয়ার মুখ চেপে ধরে ছুরিকাঘাত করে। সায়মাকেও পেছন থেকে ছুরিকাঘাত করে শহিদ। এরপর শহিদের হাত থেকে রায়হান ছুরি নিয়ে সায়মার পেটে আঘাত করে। মা-মেয়ে ঘরের মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন। তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করতে রায়হান সায়মা ও তার মায়ের পায়ের রগ কেটে দেয়। নিহতদের রক্তে রায়হান ও শহিদের জামাকাপড় ভিজে যায়। তারা জামাকাপড় খুলে বাসা থেকে লুঙ্গি পরে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় সোমবার রাতে নিহত রিজিয়া খাতুনের স্বামী রেজাউল ইসলাম বাদী হয়ে ডবলমুরিং থানায় হত্যামামলা দায়ের করেন। মামলায় আবু রায়হানের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত দু-তিনজনকে আসামি করা হয়।

Leave a comment