চুয়াডাঙ্গা বিএনপির আভ্যন্তরীন কোন্দলের কুপ্রভাব উপজেলা নির্বাচন
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা বিএনপি’ই এখন বিএনপির বড় শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে জিয়ে থাকা অভ্যান্তরীন বহুমুখি কোন্দলের কুপ্রভাব পড়ছে উপজেলা নির্বাচনে। আওয়ামী লীগের যেখানে একক প্রার্থী, সেখানে বিএনপির একাধিক প্রার্থীই শুধু নেই, নির্বাচনের চূড়ান্ত মুহূর্তেও দলীয় সমর্থিত একক প্রার্থী নিয়ে চলছে নানামুখি প্রচার প্রচারণা, তৎপরতা। হঠাত করেই গতকাল কেন্দ্রীয় যুগ্মমহাসচিব অ্যাড. রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত দলীয় একক প্রার্থী হিসেবে চুয়াডাঙ্গার ৪ উপজেলার ৪ জনের নাম লেখা পত্র নতুন করে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। তার সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। পত্র পড়েছে বিশ্বাস অবিশ্বাসের দোলাচালে।
নেতাকর্মী সমর্থকরা এসব নিয়ে শুধু বিভ্রান্তই হচ্ছে না, জেলার উভয়পক্ষের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভও প্রকাশ করছে। একক প্রার্থী ছাড়া নির্বাচনী কাজে অংশ না নেয়ারও ঘোষণা দিচ্ছে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকমীরা। চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির দুটি পক্ষ যৌথসভায় বসে একক প্রার্থীর দাবি জানিয়ে বলেছে, সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির একক প্রার্থী চূড়ান্ত করা না হলে এলাকায় ভোট করতেই নেতাদের ঢুকতে দেয়া হবে না। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা সাতগাড়ি মোড়ের এনামুলের চাতালে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন হাফিজুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মাহামদুর কবির স্বপন, সাংগঠনিক সম্পাদক জবলুর রহমান ও জেলা বিএনপি একাংশের সভাপতি আবুল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক ইদ্রিস আলী ইদুসহ অনেকে।
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাচন আগামীকাল শনিবার। বিএনপির দুজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। জেলা বিএনপি সমর্থিত হিসেবে উপজেলা বিএনপির সভাপতি লিয়াকত আলী শাহ এবং জেলা বিএনপি একাংশের সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে ফজলুর রহমান প্রচার প্রচারণায় থাকলেও গতকাল দামুড়হুদাসহ জেলা শহরে ছড়ানো হয়েছে কেন্দ্রীয় যুগ্মমহাসচিব অ্যাড. রহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত পত্র। এতে দলীয় একক প্রার্থী হিসেবে ফজলুর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অবশ্য এ ফ্যাক্সপত্রকে ভেক ও অহিদুল ইসলামের লোকজনের তৈরি করা বলে দাবি তুলেছেন অপরপক্ষ। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা পরিষদে জেলা বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে মজিবুল হক মালিকের নাম ঘোষণা করা হলেও গতকালের কেন্দ্রীয় নেতা স্বাক্ষরিত পত্রে অহিদুল ইসলাম পক্ষের সমর্থিত প্রার্থী অ্যাড. এমএম শাহজাহান মুকুলকে একক প্রার্থী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস পক্ষ সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে ভাংবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান সানোয়ার হোসেন লাড্ডু এবং জেলা বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে উপজেলা বিএনপির সভাপতি শহিদুল কাওনাইন টিলু নির্বাচনী মাঠে থাকলেও কেন্দ্রীয় নেতার পত্রে বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে টিলুর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। জীবননগর উপজেলায় বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে সাইদুর রহমান ধন্দুর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ৪টি ফ্যাক্স কপি যুক্ত করে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি একাংশের দফতর সম্পাদক আবু আলা সামসুজ্জামান স্বাক্ষরিত প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা জেলার ৪টি উপিজেলার কেন্দ্র থেকে বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। অপরদিকে জেলা বিএনপির একাধিক নেতার সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেছেন, এ ধরনের পত্র সন্দেহজনক। স্বাক্ষরও প্রশ্নবিদ্ধ। কীভাবে কার কাছে ফ্যাক্স করা হয়েছে তা ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। দামুড়হুদা বিএনপি ও যুবদলের একাধিক নেতা প্রশ্ন তুলে বলেছেন, ফ্যাক্সপত্রে যে ফোন নম্বরটি উল্লেখ করা হয়েছে তা বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নয়, মিরপুরের। পত্রের সত্যতা নেই। বিভ্রান্তির জন্যই এ ধরনের ফ্যাক্সপত্র হাজির করা হয়েছে বলেও দাবি তাদের।