স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি শরীফ হোসেন দুদু ও সাবেক সেক্রেটারি ওবাইদুর রহমান চৌধূরী জিপুসহ হাজতে যাওয়া ১১ জনের মধ্যে ৬ জন জামিনে মুক্তিলাভ করেছে। চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আদালত গতকাল বুধবার ৬ জনের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনপ্রাপ্ত জিয়া, ডেভিড, তাপু, মাফি, বুলবুল, হাফিজুর রহমান কালু হাজতমুক্ত হলে চুয়াডাঙ্গা পৌর ও জেলা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের অনেকেই ফুলের মালা পরিচয়ে স্বাগত জানান। মিছিল নিয়ে শহীদ হাসান চত্বরও পরিদর্শন করে তারা। শহীদ হাসান চত্বরের আইল্যান্ডে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে বক্তারা জেলা ছাত্রলীগের সেক্রেটারি অনিক এবং তার চাচা হুইপ সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দারকে বিরূপ সমালোচনাই শুধু করেনি, তারা তাদের বিরুদ্ধে মামলাকে ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করে বলেছেন, অন্যায়ের প্রতিবাদ করার কারণেই আমাদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের কর্মী মোমিন একটি মামলায় গ্রেফতার হয়। জামিন লাভের পর গত ২৩ জানুয়ারি তাকে স্বাগত জানিয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের সেক্রেটারি মোহাইমান হাসান জোয়ার্দ্দার অনিকসহ নেতাকর্মীরা মিছিল করে শহরের দিকে ফেরার পথে কেদারগঞ্জ ইম্প্যাক্ট হাসপাতালের নিকট বোমাহামলা শিকার হন বলে অভিযোগ তোলেন। মামলা হয়। এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তার অন্তঃবর্তীকালীন জামিনে ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শরীফ হোসেন দুদু, সাবেক সেক্রেটারি ওবাইদুর রহমান জিপুসহ অন্যরা। জামিনের মেয়াদ শেষে এদের ১১ জন গতপরশু আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন জানান। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দেন। পরদিন গতকাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিনের আবেদন করা হয়। আদালত জিপু, দুদুসহ ৫ জনের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন। বুলবুল, ডেভিড, কালু, জিয়া, মাফি ও তাপুর জামিন মঞ্জুর করেন।
এদিকে দুদু, জিপুসহ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাকে ষড়যন্ত্রমূলক বলে মন্তব্য করে বিবৃতি দিয়েছেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য শামসুল আবেদীন খোকন। তিনি বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকেরা যখন ন্যায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছে তখন পার্টির অভ্যন্তরেরই স্বার্থের মোহে অন্ধ কেউ কেউ ষড়যন্ত্র করে তাদের হয়রানি করছে। আমি এ হয়রানির তিব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সাথে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।
দর্শনা ছাত্রলীগ এক বিবৃতিতে চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের ১১ নেতার মুক্তির দাবি জানিয়েছে। ছাত্রলীগ নেতা দুদু ও জিপুসহ ১১ জনের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করে বিবৃতি দিয়েছেন দর্শনা পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম ববি, কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নাহিদ পারভেজ, ছাত্রলীগ নেতা আলামিন, লোমান, রবিউল, রায়হান, অপু, সোহাগ, পাপ্পু, নাজমুল, খায়রুল, ইমু, তুহিন, রকি প্রমুখ। প্রেসবিজ্ঞপ্তি। মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, চুয়াডাঙ্গা আদালত হাইকোর্টের অন্তঃবর্তীকালীন জামিন বাতিল করে বিস্ফোরক আইন মামলায় চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান সভাপতিসহ মোট ১১ জনকে জেলহাজতে পাঠানোর প্রতিবাদে ও তাদের মুক্তির দাবিতে মেহেরপুর জেলা ছাত্রলীগ শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাফুয়ান আহমেদ রূপক ও সাধারণ সম্পাদক বারিকুল ইসলাম লিজনের নেতৃত্বে মেহেরপুর সরকারি কলেজ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কোর্টচত্বরে গিয়ে এলাকায় একটি পথসভার মধ্যদিয়ে শেষ হয়। বক্তব্য রাখেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাফুয়ান আহমেদ রূপক, সাধারণ সম্পাদক বারিকুল ইসলাম লিজন, শহর ছাত্রলীগের সভাপতি মাহফিজুর রহমান পোলেন, সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস শোভন, কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম তৌহিদ, সম্পাদক কুদরুত-ই খোদা রুবেল প্রমুখ।