জীবননগর থেকে কাঠ লোড করে ফেরার পথে কেরুজ আখভর্তি ট্রাক্টরের ধাক্কা
দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদা দশমীপাড়ার সুলতান মোহাম্মদ (৩৮) সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে জীবননগর উপজেলার খয়েরহুদা থেকে পাউয়ারটিলারে ইটভাটার কাঠ লোড করে বাড়ি ফেরার পথে চুয়াডাঙ্গা-জীবননগর সড়কের মনোহরপুর বাসস্ট্যান্ডের অদূরে পেছন দিক থেকে আসা দর্শনা কেরুজ চিনিকলের আখভর্তি ট্রাক্টর ধাক্কা দিলে পাউয়ারটিলারের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন তিনি। রাত পৌনে ৯টার দিকে ময়নাতদন্ত ছাড়াই দশমী কবরস্থানে নিহতের লাশের দাফন সম্পন্ন করা হয়। তিনি দামুড়হুদা উপজেলার পুরাতন বাস্তপুরের (বর্তমানে দামুড়হুদা দশমীপাড়ার বাসিন্দা) মৃত মসলেম মণ্ডলের ছেলে।
দুর্ঘটনা কবলিত পাউয়ারটিলারে থাকা প্রত্যক্ষদর্শী দামুড়হুদা দশমীপাড়ার মৃত মুলুক চাঁদ দফাদারের ছেলে কাঠব্যবসায়ী নস্কর আলী জানান, গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে সুলতানের পাউয়ারটিলার ভাড়া করে জীবনগর উপজেলার খয়েরহুদা গ্রামে কাঠ আনতে যাই। খয়েরহুদা থেকে কাঠ লোড করে আমরা মনোহরপুর চলে আসি এবং মনোহরপুর থেকে আরও কিছু কাঠ লোড করি। বেলা ২টার দিকে মনোহরপুর থেকে পাউয়ারটিলারযোগে দামুড়হুদার উদ্দেশে রওনা হই। আমি ওই পাউয়ারটিলারের কাঠের ওপর বসেছিলাম। মনোহরপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে কিছু দূর আসার পর বেলা আড়াইটার দিকে পেছন থেকে আসা দর্শনা কেরুজ চিনিকলের আখভর্তি ট্রাক্টর (দুটি বগিসহ) পাউয়ারটিলারে ধাক্কা দেয়। ধাক্কা লাগার সাথে সাথে আমি চিৎকার দিয়ে ওই ট্রাক্টরচালককে বলি ভাই ট্রাক্টর থামান, ট্রাক্টর থামান। বলতে বলতেই চালক সুলতান ছিটকে পড়ে যান এবং মুহূর্তের মধ্যে পাউয়ারটিলারের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। সুলতানের মরদেহ বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে করিমনযোগে দামুড়হুদায় নেয়া হয়। নিহত সুলতানের মরদেহ তার নিজ বাড়িতে পৌঁছুলে পরিবারে শুরু হয় শোকের মাতম আর বাঁধভাঙ্গা আহাজরি। শ শ মানুষ নিহত সুলতানের মরদেহ একনজর দেখতে তার বাড়িতে ভিড় জমাতে শুরু করে। রাত পৌনে ৯টার দিকে জানাজা শেষে ময়নাতদন্ত ছাড়াই দামুড়হুদা দশমী কবরস্থানে তার লাশের দাফন সম্পন্ন করা হয়। ৪ ভাই ১ বোনের মধ্যে নিহত সুলতান ছিলেন সকলের ছোট। মৃত্যুকালে স্ত্রী, ১ ছেলে ১ মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
নিহত সুলতানের পরিচয়: দামুড়হুদা উপজেলার পুরাতন বাস্তপুরের মৃত মসলেম মণ্ডলের ছেলে সুলতান প্রায় বছর বিশেক আগে দামুড়হুদায় এসে দশমীপাড়ায় বসবাস শুরু করেন এবং দুলাভাই বুদোর সাথে বাজারের বিভিন্ন আড়তের ভূষিমাল ট্রাকে লোড-আনলোডের শ্রমিক (মুটে) হিসেবে কাজ শুরু করেন। ওই কাজের পাশাপাশি মাঝে মধ্যে তিনি মাঠেও দিনমজুরির কাজ করতেন। ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালিয়েও অনেক কষ্ট করে প্রায় বছর খানেক আগে একটি পাউয়ারটিলার কেনেন। তার সংসারে রয়েছে দু ছেলে-মেয়ে। ছেলে সবুজ দামুড়হুদা পাইলট হাইস্কুলে দশম শ্রেণিতে এবং মেয়ে শারমিন দামুড়হুদা মডেল সরকারি প্রাইমারি স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে অধ্যয়নরত।