ঝিনাইদহে সাপের ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি

 

ঝিনাইদহ অফিস: কেনাকাটা করার জন্য গ্রাম থেকে শহরে আসা কলেজপড়ুয়া যুবক সম্রাট (২০) এমন বিব্রতকর পরিস্থিতির জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলেন না। ঝিনাইদহ শহরের পায়রা চত্বরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন কিছু কেনাকাটার জন্য। ঘড়িতে তখন বিকেল ৩টা। দল বেধেচলা চার নারী ঘিরে ধরলো সম্রাটকে। ঝাঁপি থেকে সাপ বের করে বললো ‘টাকা দেন, নইলে সাপ বের করলাম’।

সাপের ঝাঁপি দেখে সম্রাট ভীত হয়ে পকেট থেকে একশ টাকার একটি নোট বের করে তাদের বললেন দশ টাকা নিতে। কিন্তু তারা একশ টাকার নোট নিয়ে ফুট। সম্রাট অবাক হয়ে ফ্যাল ফ্যাল চেয়ে রইলেন দ্রুত গতিতে চলা চার নারী সাপুড়ের দিকে। ঝিনাইদহ কেসি কলেজের সামনে লোপা, পারভীনা ও রিতা পড়ে যান চার নারী সাপুড়ের খপ্পরে। তাদের ঘিরে ধরে প্রতিজনের কাছ থেকে ১০ টাকা করে ৩০ টাকা হাতিয়ে নেন তারা। এভাবে ঝিনাইদহ শহর থেকে চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার পথে অন্তত ৩০ জন যুবক ও কিশোরী তাদের খপ্পরে পড়েন।

ঝিনাইদহ শহরের চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে সরকারি কেসি কলেজ মহিলা হোস্টেলের সামনে বোরকা পরিহিতা এক নারীর সামনে সাপ বের করে টাকা চাওয়া মাত্রই তিনি ভয়ে চিৎকার দেন। শহরের শামিমা ক্লিনিকের সামনে সুবজ নামে এক স্কুলপড়ুয়া কিশোরকে নাজেহাল করার সময় এসব নারী সাপুড়ের নাম পরিচয় জিজ্ঞাসা করা হলে মুখ ভেংচিয়ে তারা বলেন, উহ! পেপারে দিবা নাকি?

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঝিনাইদহ শহরের ধোপাঘাটা ব্রিজের নিচে তাবু খাটিয়ে প্রায় ২/৩ বছর কয়েকটি পরিবার বসবাস করছেন। যাযাবর হিসেবে পরিচিত এসব পরিবার। পরিবারের কোনো আয় নেই। পুরুষ সদস্যরা সন্তান নিয়ে তাবুতেই থাকেন। আর সকাল-সন্ধ্যা শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত সাপের ঝাঁপি নিয়ে টাকার জন্য দল বেধে বেড়ান নারীরা। টাকা উপার্জনের জন্য অভিনব সব পন্থা ওদের। কখনো স্বজনদের দাফন কাফন, আবার কখনো বোনের বিয়ের জন্য টাকা তুলে বেড়ান। তবে এসব পন্থা কেবল বাহানা মাত্র।

ঝিনাইদহ শহরের দোকানদার সফি উদ্দীন জানান, প্রতিদিন এদের দৌরাত্ম্যে মানুষ অতিষ্ঠ। একজনকে টাকা দিলে সাথে থাকা আরো ৪/৫ জনকে টাকা দিতে হয়। টাকা না দিলে সাপ বের করে ভয় দেখায়।

Leave a comment