ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষক সমিতির ১৫ সদস্যবিশিষ্ট কার্যনিবাহী পরিষদ নির্বাচন-২০১৪ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী আওয়ামীপন্থি ও প্রগতিশীল শিক্ষকদের সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু পরিষদ-শাপলা ফোরাম’ প্যানেলের নিরঙ্কুশ জয় হয়েছে। দুটি সদস্যপদ বাদে সবকটি পদে বিজয় লাভ করেছে। নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সোলায়মান গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ভোট গণনা শেষে এ ফলাফল ঘোষণা করেন। অন্যদিকে বারবার পূর্ণ প্যানেলে জয়লাভ করলেও এবার ভরাডুবি হয়েছে বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের। এতে বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের অন্তর্কোন্দলের চিত্র ফুঁটে উঠেছে।
জানা গেছে, গতকাল সোমবার মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের ৪২৭ নং কক্ষে সকাল ৯টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে। সন্ধ্যায় ভোট গণনা শেষে নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সোলায়মান ফলাফল ঘোষণা করেন। নির্বাচন কমিশনসূত্র জানায়, টানা ২২ বছর ধরে শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের ভরাডুবি হলেও এবার তাদের নিরঙ্কুশ বিজয় হয়েছে। বন্ধবন্ধুর আদর্শ, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বাঙালি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষকদের প্যানেল ‘বঙ্গবন্ধু পরিষদ-শাপলা ফোরাম প্যানেল’ থেকে বাংলা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আবুল আহসান চৌধুরী ১৬৪ ভোট পেয়ে সভাপতি এবং ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক হারুন অর রশিদ আসকারী ১৬৯ ভোট পেয়ে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন। ড. আবুল আহসান চৌধুরীর নিকটতম প্রার্থী হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান ১৪৯টি ভোট পেয়েছেন।
অপরদিকে ড. রশিদ আসকারীর নিকটতম প্রার্থী দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. ইকবাল হোছাইন ১৪৫টি ভোট পেয়েছেন। এছাড়া বঙ্গবন্ধু পরিষদ-শাপলা ফোরাম প্যানেল থেকে সহসভাপতি পদে অধ্যাপক ড. আ.ন.ম রেজাউল করিম (অর্থনীতি), যুগ্মসাধারণ সম্পাদক পদে অধ্যাপক ড. মো. সাইদুর রহমান (বাংলা) এবং কোষাধ্যক্ষ পদে অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান (ইংরেজি) নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া অধ্যাপক ড. রুহুল কেএম সালেহ, অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামান, অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন, অধ্যাপক ড. আহসান উল আম্বিয়া, অধ্যাপক ড. এএইচএম আক্তারুল ইসলাম জিল্লু, ড. মাহবুবুল আরফিন, মিজানুর রহমান এবং তারেক হাসান আল মাহমুদ সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন। বাঙালি জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী শিক্ষকদের প্যানেল ‘জিয়া পরিষদ ও গ্রিন ফোরাম প্যানেল’ থেকে রাষ্ট্রনীতি ও লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক ফখরুল ইসলাম, ফলিত পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের জাহিদুল ইসলাম সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন।
নির্বাচন কমশিনার অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সোলায়মান জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালযেয়র ৩৫৬ জন শিক্ষকের মধ্যে ৩২৩ জন শিক্ষক তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। ভোট বাতিল হয় ২টি।’
উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও প্রগতিশীল শিক্ষক সংগঠন শাপলা ফোরাম যৌথ প্যানেলে নির্বাচন করে এলেও ২০১১ সাল থেকে পৃথকভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে আসছিলো। ফলে প্রতি বারেই তাদের নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে। ২০১০ সালে যৌথভাবে নির্বাচন করলেও এ প্যানেল থেকে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে কোনো শিক্ষক জয়ী পতে পারেননি। ১৯৯২ সালের পর থেকে গত ২২ বছরে তারা কখনও বিজয়ী হতে পারেননি। এবার বিএনপিপন্থি শিক্ষক লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক মতিন ও ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক এমতাজ গ্রুপ সহযোগিতা করেনি বলে অধিকাংশ বিএনপিপন্থি শিক্ষক ক্ষোভ প্রকাশ করেন।