এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা একযোগে শুরু : সারাদেশে অনুপস্থিত ৬ হাজার ৭৭৮ : বহিষ্কার ৯
স্টাফ রিপোটার: মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি), মাদরাসায় দাখিল ও কারিগরির এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষা গতকাল রোববার সারাদেশে একযোগে শুরু হয়েছে। পরীক্ষার প্রথম দিনে দেশের আটটি সাধারণ বোর্ডের এসএসসিতে বাংলা প্রথমপত্র, মাদরাসা বোর্ডের দাখিলে কোরআন মাজিদ ও তাজবিদ এবং কারিগরিতে বাংলা-২ বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এসব পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে ৯ পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আর অনুপস্থিত ছিলো ৬ হাজার ৭৭৮ পরীক্ষার্থী।
শিক্ষামন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, গতকাল রোববার অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে যশোর বোর্ডে ১ পরীক্ষার্থী বহিষ্কার হয়েছে। অন্য সাতটি বোর্ডের পরীক্ষায় কেউ বহিষ্কার হয়নি। এছাড়া মাদরাসা বোর্ডের পরীক্ষায় ২ জন এবং কারিগরিতে ৬ জন পরীক্ষার্থী বহিষ্কার হয়েছে। অপরদিকে, দেশের দশ বোর্ডে প্রথম দিনে অনুপস্থিতির সংখ্যা ৬ হাজার ৭৭৮। এর মধ্যে ঢাকা বোর্ডে ৮৭৬ জন, কুমিল্লায় ৬০২ জন, যশোরে ৪৪২ জন, রাজশাহীতে ৩৩৭ জন, চট্টগ্রামে ৩১৮ জন, সিলেটে ১৯৭ জন, বরিশালে ২১২ জন, দিনাজপুরে ৩৪২ জন, মাদরাসা বোর্ডে ২ হাজার ৪০০ জন, কারিগরিতে ১ হাজার ৫২ জন অনুপস্থিত ছিল।
চুয়াডাঙ্গায় ২০১৪ সালের এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। গতকাল রোববার পরীক্ষার প্রথম দিন জেলার চারটি উপজেলায় ২৭টি কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষা গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। জেলা প্রশাসক দেলোয়ার হোসাইন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও ভিজিলেন্স টিমের সদস্যরা কেন্দ্রগুলো ঘুরে সন্তোষ প্রকাশ করেন। জেলায় এ বছর মোট আট হাজার ১২১ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। তবে প্রথমদিনে পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিলো ৩৫ জন শিক্ষার্থী। অপরদিকে দামুড়হুদা পাইলট স্কুল কেন্দ্রে লোকনাথপুর সহশিক্ষা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ইলাহী বক্সকে কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এদিকে প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ এবং চিকিৎসা সেবাদানের জন্য ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিম রাখা হয়।
সরোজগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় ও উপকেন্দ্র হিসেবে ছাদেমান নেছা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রের ৬৫১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৬৪৯ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। ছাত্র ৩০২ জন ও ছাত্রী ৩৪৯ জন। অনুপস্থিত ছিলো ছাত্র ১ জন এবং ছাত্রী ১ জন। কেন্দ্র সচিবের দায়িত্বে ছিলেন সরোজগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আকবর আলী, সহসচিব ছিলেন খাড়াগোদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম। হলসুপার ছিলেন তিতুদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলুর রহমান। কেন্দ্র পরিদর্শন করেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল আমিন ও উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আব্দুল্লাহ সামী।
আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, আলমডাঙ্গার ৫টি কেন্দ্র ও ১টি উপকেন্দ্রে এসএসসি এবং দাখিল পরীক্ষায় ২ হাজার ১১ জন পরীক্ষার্থী গতকাল প্রথম দিনের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে প্রথম দিনের পরীক্ষা অতিবাহিত হয়েছে। প্রথম দিনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা ও আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম সকল কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।
আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৫৩৬ জন পরীক্ষার্থী। ছেলে ১৯৫ ও মেয়ে ৩৪১ জন। অনুপস্থিত ছিলো ৩ জন। আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে পরীক্ষার্থী ৫৮০ জন। অনুপস্থিত ছিলো ২ জন। আলমডাঙ্গা আলিম মাদরাসা কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ২২৩ জন। অনুপস্থিত ১ জন। ছেলে ১৩৮ জন, মেয়ে ৮৫ জন। মুন্সিগঞ্জ একাডেমী কেন্দ্র ও উপকেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ৬১৩ জন। অনুপস্থিত ছিলো ২ জন। ছেলে ৩২০ জন, মেয়ে ২৯৩ জন। হাটবোয়ালিয়া ৪৫৯ জন পরীক্ষার্থী। অনুপস্থিত ছিলো ২ জন।
দামুড়হুদা অফিস জানিয়েছে, দামুড়হুদা উপজেলার ৪টি এসএসসি ও দুটি দাখিল কেন্দ্র পরীক্ষা শান্তিপূর্ণভাবে প্রথম দিন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারে ২ হাজার ২৪৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা অংশগ্রহণ করে। ৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিলো। দামুড়হুদা পাইলট হাইস্কুল কেন্দ্রে ৩৫৯ জন, দামুড়হুদা পাইলট বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৪১৫ জন, মেমনগর বিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৫৩১ জন ও কার্পাসডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৩৬১ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। দামুড়হুদা ডিএস দাখিল মাদরাসা কেন্দ্রে ১৭৩ ও কার্পাসডাঙ্গা ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে ২১২ জন পরীক্ষার্থী দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। ভোকেশনাল শাখায় দামুড়হুদা বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১৯৪ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। দামুড়হুদা পাইলট স্কুলকেন্দ্রে লোকনাথপুর সহশিক্ষা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ইলাহী বক্সকে কর্তব্য কাজে অবহেলায় দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে।
ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, কার্পাসডাঙ্গায় প্রথম দিনে ৩৬৪ জন পরীক্ষার্থী থাকলেও ৩৬১ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব পালন করেন কার্পাসডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক খায়রুল বাসার, হলসুপারের দায়িত্ব পালন করেন মনিরুজ্জামান ও ওবায়েদুল্লাহ। অপরদিকে কার্পাসডাঙ্গা ইসলামিয়া ফাজিল (বিএ) মাদরাসা কেন্দ্রে প্রথম দিনে দাখিল পরীক্ষার্থী ১৮৯ জন থাকলেও ১৮৮ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব পালন করেন অধ্যক্ষ আলহাজ মীর মো. জান্নাত আলী। হলসুপারের দায়িত্ব পালন করেন আবু তালহা ও নুরুল আমিন।
আন্দুলবাড়িয়া প্রতিনিধি জানিয়েছেন, আন্দুলবাড়িয়া ৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২৫২ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২৫১ জন ছাত্র-ছাত্রী অংশগ্রহণ করে। অনুপস্থিত ছিলো ১ জন। এর মধ্যে আন্দুলবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভ্যেনু-১ কেন্দ্রে ১২২ জন ও বালিকা বিদ্যালয় ভেনু-২ কেন্দ্রে ১২৯ জন ছাত্র-ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নেয় বলে হলসুপার ইব্রাহিম আলী মাথাভাঙ্গার এ প্রতিনিধিকে জানান। বেলা ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট রেজা হাসান কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।
আমঝুপি প্রতিনিধি জানিয়েছেন, গতকাল রোববার প্রথম দিনে মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রে সচিব আমঝুপি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মামুল ইসলাম জানান, এ বছর কেন্দ্রে ৩৯০ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। পরীক্ষা শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, গতকাল রোববার প্রথম দিনের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। প্রথম দিনের এসএসসি পরীক্ষায় জেলায় ১৪ জন এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় ৪ জন ও দাখিল পরীক্ষায় ৮ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলো।
মেহেরপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুর সদর উপজেলার ৩টি কেন্দ্রে এক হাজার ৭শ জন পরীক্ষার্থী উপস্থিত ও ৪ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলো। গাংনী উপজেলার ২টি কেন্দ্রে ২ হাজার ১৫২ জন পরীক্ষার্থী উপস্থিত ও ৫ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলো। এছাড়া মুজিবনগর উপজেলার একমাত্র কেন্দ্রে ৭৩৫ জন পরীক্ষার্থী উপস্থিত ও ৫ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলো।
বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় মেহেরপুর কেন্দ্রে ৩০৯ জন উপস্থিত ও একজন অনুপস্থিত ছিলো। গাংনী কেন্দ্রে ৪শ জন উপস্থিত ও ২ জন অনুপস্থিত ছিলো এবং মুজিবনগর কেন্দ্রে ১২৪ জন উপস্থিত ও একজন অনুপস্থিত ছিলো।
এছাড়া বাংলাদেশ মাদরাসা বোর্ডের অধীনে মেহেরপুর কেন্দ্রে ২৮৬ জন উপস্থিত ও ৪ জন শিক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলো এবং গাংনী কেন্দ্রে ১৭০ জন উপস্থিত ও ৪ জন অনুপস্থিত ছিলো। পরীক্ষা চলাকালে মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক মাহমুদ হোসেন বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে ঘুরে দেখেন।