দশম সংসদের উদ্বোধনী তথা প্রথম অধিবেশন

সাংবিধানিক ধারা অক্ষুণ্ণ রাখার প্রত্যয়

 

স্টাফ রিপোর্টার: সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ণ রাখার প্রত্যয়ের মধ্যদিয়ে যাত্রা শুরু করলো বহুল আলোচিত দশম জাতীয় সংসদ। সরকারি আর বিরোধী দল মিলেমিশে একাকার এই সংসদের প্রতিনিধিত্বকারী এমপিরাও এসেছেন নজির সৃষ্টি করে। তাদের ১৫৪ জন নির্বাচিত হয়েছেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। ১৪৬ জন এমপি হয়েছেন কম ভোটের রেকর্ড গড়ে।

বিএনপিসহ তার নেতৃত্বে থাকা ১৮ দল ছাড়াই ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে গটিত এই সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়েছে গতকাল বুধবার। জাতীয় পার্টি (জাপা) প্রধান বিরোধী দলের আসনের পাশাপাশি স্থান নিয়েছে মন্ত্রিসভায়ও। ৯০ পরবর্তী প্রতিটি সংসদে সরকারি অথবা বিরোধী দলে থাকা বিএনপি এই প্রথম সংসদের বাইরে। বিএনপিবিহীন দশম সংসদের প্রথম অধিবেশনে ভাষণে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জনকারী দলগুলোকে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় আসার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

তিনি বলেছেন, আমি নির্বাচন বর্জনকারী দলসমূহকে অনুরোধ করব, সংঘাত ও নৈরাজ্যের পথ পরিহার করে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় আসুন। সরকারের সাথে সংলাপের মাধ্যমে ঐকমত্যে এসে গণতন্ত্রকে বিকশিত হতে সাহায্য করুন। সংবিধান অনুযায়ী বুধবার সংসদের প্রথম অধিবেশনে ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি। সংসদ নেতা শেখ হাসিনাও অধিবেশনে ছিলেন, ছিলেন বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদও।

বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদও তার বক্তব্যে বলেছেন, অনেকে বলছেন আমরা মন্ত্রিসভায় থেকেও কীভাবে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করবো, আমরা বলতে চাই এটা একটা নিউ কনসেপ্ট (নতুন ধারণা)। যেমন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাও আগে ছিলো না, যখন এটা সামনে এসেছে তখন সেটিও ছিলো নিউ কনসেপ্ট।

নির্ধারিত সময়ের পাঁচ মিনিট পর সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে বিদায়ী ডেপুটি স্পিকার শওকত আলীর সভাপতিত্বে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াতের মধ্যদিয়ে অধিবেশন শুরু হয়। দিনের কার্যসূচি অনুযায়ী প্রথম অধিবেশনের গতকাল প্রথম বৈঠকের শুরুতে দশম সংসদের স্পিকার হিসেবে ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও ডেপুটি স্পিকার হিসেবে অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সর্বসম্মতিক্রমে নির্বাচিত হন। ২০ মিনিটের বিরতি শেষে অধিবেশন আবার শুরু হলে সংসদের কার্যপ্রণালী বিধি ১২ (১) অনুযায়ী প্রথম অধিবেশনে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে অধিবেশন পরিচালনার জন্য পাঁচ সদস্যের সভাপতিমণ্ডলী মনোনীত করা হয়। পরে উত্থাপিত হয় শোক প্রস্তাব। শোক প্রস্তাবের ওপর সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও মোনাজাত শেষে আবার ১০ মিনিটের বিরতি দেয়া হয়। এরপর সংবিধান অনুযায়ী সংসদের উদ্বোধীন বৈঠকে ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। রাষ্ট্রপতির ভাষণ শেষে নবনিনির্বাচিত স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মূলতবি করেন।

তৃতীয়বারের মতো নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অধিবেশন কক্ষে আসেন ঠিক ৬টায়। তার পরনে ছিলো ক্রিম রঙ্গের শাড়ি। তিনি অধিবেশন কক্ষে আসলে উপস্থিত সরকারি ও বিরোধী দলের সদস্যরা একযোগে টেবিল চাপড়ে তাকে অভিনন্দন জানান। দু মিনিট পরে দলীয় সদস্যদের নিয়ে অধিবেশন কক্ষে আসেন প্রথমবারের মতো বিরোধী দলীয় নেতা হওয়া বেগম রওশন এরশাদ। অবশ্য অধিবেশন শুরুর প্রায় ৪০ মিনিট আগে থেকেই নিজ আসনে বসা ছিলেন জাপা চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এইচএম এরশাদ। এরপর ৬টা ৫ মিনিটে বিদায়ী ডেপুটি স্পিকারের সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হয়। বিদায়ী স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী আবারও ওই পদে প্রার্থী হওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী তিনি অধিবেশনের শুরুতে সভাপতিত্ব করেননি।

অধিবেশনের শুরুতে শওকত আলী তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় সংসদের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান। সকল সংসদ সদস্যকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের নেত্রী তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় আমরা গৌরবান্বিত বোধ করছি। এ সময় উপস্থিত সবাই টেবিল চাপড়ে প্রধানমন্ত্রীকে আরেক দফা অভিনন্দন জানান। শওকত আলী এসময় আরও বলেন, দশম সংসদের পথ চলায় আপনাদের (এমপিদের) সবার সক্রিয় অংশগ্রহণ গণতন্ত্রকে আরও বেগবান করবে। গণতন্ত্রের বিকল্প কেবল গণতন্ত্র। গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষায় দশম সংসদ নির্বাচন মাইলফলক হিসেবে থাকবে। গণতন্ত্রের ভিত আরও মজবুত করতে তিনি সকল এমপির সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি তার বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকল জাতীয় নেতাকে স্মরণ করেন।

কার্যপ্রণালী বিধি ৮(৪) অনুযায়ী স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষে শওকত আলী তাদেরকে অভিনন্দন জানান। অভিনন্দন জানান এ সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, চিফ হুইপ ও হুইপদেরও। একইসাথে নবম সংসদে ডেপুটি স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে নিজের ভুল-ক্রটির জন্যও মার্জনা প্রার্থনা করে বিদায় নেন তিনি।

২০ মিনিটের বিরতি শেষে সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় আবারও অধিবেশন শুরু হলে এতে সভাপতিত্ব করেন নবনির্বাচিত স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। আসনে বসার পর তিনি প্রথমেই তাকে স্পিকার নির্বাচিত করায় সবাইকে অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানান। এ সময় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, দেশের নারী স্পিকার হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত হওয়ায় গৌরব বোধ করছি। এই গৌরব সমগ্র বাংলাদেশের, সমগ্র নারী সমাজের। উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নিতে এবং গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে এগিয়ে নিতে তিনি সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।

মন্ত্রিসভায় বিরোধী দলেরও অংশগ্রহণ নিউ কনসেপ্ট: রওশন এরশাদ ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সূচনা বক্তব্য শেষে তাকে অভিনন্দন জানিয়ে কয়েকজন সদস্য বক্তব্য রাখেন। বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ তার বক্তব্যে বলেন, অনেকে মনে করছে জাপা বিরোধী দল হিসেবে কীভাবে দায়িত্ব পালন করবে। মন্ত্রিসভায় আমাদেরও তিনজন সদস্য রয়েছেন। এনিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। আমরা জানি, এটা একটি নিউ কনসেপ্ট। যেমন আগে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ছিল না, নিউ কনসেপ্ট হিসেবেই এটা আমাদের সামনে এসেছিলো। একইভাবে আমরাও দেখাতে চাই, বিরোধী দল সরকারে আছে ঠিকই, কিন্তু বিরোধী দল হিসেবেও ভূমিকা পালনে কতোটা সফল হতে পারবো জানি না, তবে এক্ষেত্রে আমাদের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি থাকবে না। এজন্য বিরোধী দলকে পর্যাপ্ত সময় ও গুরুত দিতে তিনি স্পিকারের প্রতি আহ্বান জানান।

রওশন বলেন, দেশে বহুবিধ সমস্যা রয়েছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা রাজনৈতিক। একটা গণতান্ত্রিক দেশে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থা বিরাজ করবে, এটাই সবার কাম্য। কিন্তু এতদিন যে ধারা বিরাজ করছিলো তা পুরো গণতান্ত্রিক ছিল না। সরকার ও বিরোধী দল কোনো মৌলিক ইস্যুতেই একসঙ্গে বসে আলোচনা করতে পারেনি। আমরা এটা দেখিনি। সেজন্য আমাদের এখন প্রতিহিংসার রাজনীতি বিসর্জন দিতে হবে। স্বপ্ন বাস্তবায়নে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আলোচনার মাধ্যমে আমাদের সমাধান খুঁজতে হবে। আশা করি সবাই মিলে একসঙ্গে আলোচনা করে দেশ গড়তে পারবো। আসুন, সবাই একসঙ্গে কাজ করি।

রওশন তার বক্তব্যে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করে বলেন, আমি তার অবদানও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। এতদিন যিনি বিরোধী দলীয় নেতা ছিলেন, তিনি এবার নির্বাচন করেননি। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। সবাই মিলে নির্বাচন করতে পারলে ভালো হতো। তবে একটি দলের জন্য তো আর নির্বাচন বসে থাকতে পারে না।

গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখার প্রত্যয়: নবনির্বাচিত স্পিকারকে অভিনন্দন জানিয়ে দেয়া বক্তব্যে সরকারি ও বিরোধী দলের অন্য সদস্যদের সবাই তাদের বক্তব্যে দেশে গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন স্পিকারের উদ্দেশে বলেন, নতুন হলেও স্পিকার হিসেবে আপনার বিজ্ঞ, প্রাজ্ঞ ও অভিজ্ঞতার ছাপ সবাইকে বিমোহিত করেছে। নারীর ক্ষমতায়নে প্রধানমন্ত্রী দেশকে আরেক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেলেন। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, দেশে গণতন্ত্র থাকবে কিনা, তা নিয়ে চ্যালেঞ্জ ছিল। বাংলার জনগণ স্বৈরতন্ত্র ও অশুভ চক্রের বিরুদ্ধে জয় অর্জন করেছে। আগামী পাঁচ বছরে জনগণকে দেয়া সকল প্রতিশ্রুতি আমরা বাস্তবায়ন করবো। জাপা মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, আমরা অনেক বিষয়ে সরকারের সঙ্গে দ্বিমত করবো। কিন্তু সরকারের ভালো কাজে সমর্থনও দেবো। আমাদের নেতৃত্ব দেবেন রওশন এরশাদ। আর অভিভাবক হিসেবে এরশাদ আমাদের দোয়া করবেন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জাসদের মাইনুদ্দীন খান বাদল, আওয়ামী লীগের আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী ও চিফ হুইপ আ.স.ম ফিরোজ প্রমুখ।

উচ্ছ্বাসউদ্দীপনা: প্রথম অধিবেশনের প্রথম দিনে উপস্থিত সংসদ সদস্যদের মধ্যে ব্যাপক উত্সাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষ করে যারা দীর্ঘদিন পর কিংবা প্রথম বারের মতো এমপি হয়েছেন তাদের মধ্যে উত্সাহের আমেজ দেখা যায়। আর যারা প্রথমবারের মতো মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-উপমন্ত্রী হয়েছেন, তাদের আনন্দটা ছিলো একটু বেশি। অধিবেশন শুরুর আগে বেশিরভাগ সদস্যই এদিক-ওদিক হেঁটে পরস্পরের সাথে কুশল বিনিময় করেছেন। কেউ কেউ কোলাকুলি করেছেন। দু দফা বিরতির সময়েও লবিতে অনেকে মেতেছিলেন আড্ডায়। সবমিলিয়ে সবাই ছিলেন বেশ খোশ মেজাজে। অন্যদিকে, অতিথি ও দর্শক সারিগুলোও ছিলো পরিপূর্ণ। জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি নীল ওয়াকারসহ বেশ কজন কূটনীতিকও প্রথমদিনের অধিবেশনের কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেন। অতিথি সারিকে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, ড. মশিউর রহমান ও তৌফিকই এলাহী উপস্থিত ছিলেন।

নেলসন ম্যান্ডেলাসহ ১৮ জনের স্মরণে শোক প্রস্তাব: দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদ বিরোধী নেতা ও নোবেল জয়ী নেলসন ম্যান্ডেলাসহ ১৮ জনের স্মরণে সংসদে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। যাদের নামে শোক প্রস্তাব আনা হয়েছে, তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শওকত মোমেন শাহজাহান, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি হাবিবুর রহমান, আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেত্রী সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দিন ও সাবেক এমপি সৈয়দা রাজিয়া ফয়েজ প্রমুখ। স্পিকার শিরীন শারমিন শোক প্রস্তাব উত্থাপন করলে তা সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। তাদের বিদায়ী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। এরপর কৃষিবিদ শওকত মোমেন শাহজাহানের স্মৃতিচারণ করে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অংশ নেন কয়েকজন সদস্য।

সভাপতিমণ্ডলীতে যে পাঁচজন: সংসদের কার্যপ্রণালী বিধি ১২ (১) অনুযায়ী স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে চলতি অধিবেশনে সভাপতিত্ব করার জন্য পাঁচ সদস্যদের সভাপতিমণ্ডলী মনোনীত করা হয়েছে। নামের ক্রমানুসারে তারা হচ্ছেন- সাবেক তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ, এইচএন আশিকুর রহমান, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন ও জাপার একেএম মাইদুল ইসলাম। স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে এই পাঁচজনের মধ্যে উপস্থিত সদস্যদের যার নাম শীর্ষে থাকবে তিনি তখন সভাপতিত্ব করবেন।

আসন বণ্টন: অধিবেশন কক্ষের প্রথম সারিতে প্রধান বিরোধী দল জাপাকে ৬টি আসন দেয়া হয়েছে। স্পিকারের বাম পাশের প্রথম সারির প্রথম যে আসনটিতে নবম সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বসতেন, এখন সেখানে বসছেন এই সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ। তার বামে যথাক্রমে এইচএম এরশাদ, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, রুহুল আমিন হাওলাদার, কাজী ফিরোজ রশীদ ও জিয়াউদ্দিন বাবলুকে আসন দেয়া হয়েছে। ওই সারির শেষ মাথায় প্রথম আসনে বসছেন মন্ত্রী ইমাজউদ্দিন প্রামাণিক। তার ডানে দ্বিতীয় সারিতে বসছেন জাতীয় পার্টি (জেপি) চেয়ারম্যান এবং বন ও পরিবেশ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। জেপি চেয়ারম্যানের ডানের দু আসনে স্থান পেয়েছেন বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। অন্যদিকে, ট্রেজারি বেঞ্চে প্রথম সারির আসনে নবম সংসদের সাথে খুব বেশি রদবদল হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডানে যথাক্রমে বসছেন সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, তোফায়েল আহমদ, আমির হোসেন আমু, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট রহমত আলী। মাঝখানের প্রথম সারির প্রথম আসনে বসছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, আর এই সারির শেষ আসনে স্থান পেয়েছেন বিদায়ী ডেপুটি স্পিকার শওকত আলী। যারা নতুন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন, তাদের প্রায় সবারই আসন এগিয়ে আনা হয়েছে। তবে নবম সংসদের চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদকে পাঠানো হয়েছে তৃতীয় সারিতে।