খাইরুজ্জামান সেতু/কামরুজ্জামান বেল্টু: দিনে গরম, রাতে তীব্র শীত। বৈরি আবহাওয়ার ধকল সামলাতে না পেরে ব্যাপক হারে শিশুরা নিউমোনিয়াসহ শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ১৫ শয্যার স্থলে ৭১ শিশু চিকিৎসাধীন ছিলো। ধারণ ক্ষমতার প্রায় ৫ গুন বেশি রোগী নিয়ে শিশু ওয়ার্ডের চিকিৎসক এবং সেবিকাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
নিউমোনিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পায় মূলত ঘাম থেকে। তীব্র শীত থেকে শিশুসন্তানকে রক্ষা করতে গরম পোশাক পরানো হচ্ছে, অথচ যখন গরমে ঘামছে তখন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। তাছাড়া তীব্র শীতে শিশুদের পোশাক ও শিশুর মলমূত্র পরিষ্কার করে হাত ভালোভাবে পরিষ্কার না করেই শিশুর পরিচর্যা শিশুদের ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম কারণ। শিশু চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা এরকমই অভিমত ব্যক্ত করে বলেছেন, শিশুদের পরিচর্যায় মায়েদের বাড়তি সতর্কতা শিশুদের এ ধরনের রোগ থেকে মুক্ত করতে পারে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে শয্যা সংখ্যা ১৫টি হলেও শিশু বিশেষজ্ঞ রয়েছেন দুজন। শয্যা সংখ্যা স্বল্পতা এবং একজন স্টাফ নার্সসহ একজন শিক্ষানবীশ দায়িত্ব পালন করেন। ধারণ ক্ষমতার প্রায় ৫ গুন রোগী এবং রোগীর লোকজনের কারণে শিশু ওয়ার্ডে উপচেপড়া ভিড়। কর্তব্যরত সেবিকা গতকাল বললেন, এবার শীতের শুরু থেকেই শিশু রোগীর মাত্রাতিরিক্ত চাপ। মাঝে কিছুদিন অবশ্য শিশু রোগীর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছিলো। টানা শীত বা টানা গরমে শিশু রোগীর সংখ্যা হ্রাস পায়। শীত গরমের বৈরী আবহাওয়া দেখা দিলেই শিশু রোগী বেড়ে যায়। যেমনটি বেড়েছে গত কয়েকদিন।
আবহাওয়া অধিদফতর আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত আবহওয়ার পূর্বাভাসে জানিয়েছে, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত। স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলাসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘনকুয়াশা পড়তে পারে। রাজশাহী, পাবনা ও যশোর অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
গতকাল চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ১০ দশমিক ২, সর্বোচ্চ ২১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ঈশ্বরদীতে ৮ দশমিক ২ এবং দেশের সর্বোচ্চ টেকনাফে ২৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহে শীতের কবল থেকে রক্ষা পেতে দুস্থদের মাঝে বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।