দামুড়হুদার জুড়ানপুরে সাপের ঝাঁপান খেলায় গাইদঘাটের সাপুড়ে আলতাফ

একটু অসাবধান হলেই সাঙ্গলীলা শেষ

 

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: একটু এদিক-ওদিক হলেই সাঙ্গলীলা শেষ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে জেনেও আমরা বিষধর সাপ গলায় পেঁচিয়ে, মুখের মধ্যে নিয়ে হরেক রকম কেরামতি দেখিয়ে মানুষকে খুশি করার চেষ্টা করি। আনন্দ দিই। ২০ বছর ধরে সাপ খেলা দেখিয়ে আসছি। ইতঃপূর্বেও কয়েকটি ঝাঁপান খেলায় অংশ নিয়েছি। এটা আমাদের নেশা ও পেশা। দামুড়হুদার জুড়ানপুরে ঝাঁপান খেলা শেষে চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের গাইদঘাটের সাপুড়ে দলপতি আলতাফ হোসেন উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। গত বুধবার জুড়ানপুর পাক ইয়াং ক্লাবের আয়োজনে প্রাইমারী স্কুলমাঠে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ছয়টি দলের মধ্যে দিনব্যাপি সাপের ঝাঁপান খেলা অনুষ্ঠিত হয়। বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেও সাপের ঝাঁপান খেলা দেখতে এলাকার শ শ মানুষ ছুটে আসেন জুড়ানপুর প্রাইমারী স্কুলমাঠে। মানুষের আনন্দ দিতে সাপুড়ে দলপতির মাথা ঝাকানো নাচ এবং তার সহযোগীদের গান আর ডুগি-তবলার বাজনার তালে তালে সাপগুলোও যেন অন্য এক আনন্দে নেচে ওঠে। বাছা মেহমান রক্ষা করো প্রাণ, বাছা মেহমান-এ আসরে আমরা যেন হইনে অপমান, বাছা মেহমান সাপুড়ে দলপতিদের সহযোগীরা এমনই সুরে গান গেয়ে ফনাতোলা বিষধর সাপেদের উজ্জীবিত রাখার কৌশলটিও ছিলো দৃষ্টিনন্দন। ৫২টি বিষধর সাপ নিয়ে ছয়টি দলের ৩৬ জন সহযোগী ঝাঁপান খেলায় সহযোগিতা করেন। একজন দলনেতা চারটি বিষধর সাপ একসাথে মঞ্চে ছেড়ে দেবেন এবং কমপক্ষে ১০ মিনিট ওই চারটি সাপকেই কমপক্ষে দেড় ফুট উঁচু অবস্থায় ফনাতুলে থাকতে হবে। সাপের মাথা নিচু হলেই ওই দল আউট। দামুড়হুদা উপজেলার তারানিপুরের নজরুল সাপুড়ের দল, একই উপজেলার চারুলিয়ার ভোলা সাপুড়ের দল, হোগলডাঙ্গার আব্দুর গনি ও আবদারের দল এবং জেলা সদরের গাইদঘাটের আলতাফ সাপুড়ের দল, একই গ্রামের ওলি সাপুড়ের দল এবং মাখালডাঙ্গার মুকুল সাপুড়ের দল এ ছয়টি দলের মধ্যে দিনব্যাপি ঝাঁপান প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হলেও বৃষ্টির কারণে চূড়ান্ত পর্ব শেষ করা সম্ভব হয়নি। তবে চূড়ান্ত পর্বে ওঠা গাইদঘাটের আলতাফ সাপুড়ের দল ও হোগলডাঙ্গার আব্দুল গনির দলের মধ্যে আগামী ঈদের দু-তিন দিন পর চূড়ান্ত পর্বের খেলাটি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজক ক্লাবের সভাপতি মোখলেসুর রহমান। আয়োজক ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান, প্রভাষক ফরিদ উদ্দিন, সাবেক সেনা কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন, উজ্জ্বল প্রমুখ এ সময় উপস্থিত থেকে সাপের ঝাঁপান খেলা উপভোগ করেন। বিচারকের দায়িত্বে ছিলেন আকবার আলী মাস্টার, আব্দুস সাত্তার, শহিদ সর্দার ও ইউনুচ আলী।