জনসংখ্যা বিস্ফোরণ দিন দিন ভয়ঙ্কর রূপ নিচ্ছে। ঈদ এলেই ফি বছর ভয়ঙ্কর চিত্র ভয়াবহ আকারে ফুটে ওঠে। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে ঈদ দূরাস্ত, সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও জনসংখ্যার চাপে ভেঙে পড়বে যোগাযোগ ব্যবস্থা। এটা এখন সহজেই অনুমেয়। জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে রাস্তা-ঘাটে ঘরে বাইরে পদে পদে লঙ্ঘিত হচ্ছে বিধি। নিয়মনীতির বালাই নেই, বিধি-বিধান মানতে বললে উল্টো চোখরাঙানি। আইন প্রয়োগকারীদের অনেকেই অনেক স্থানে হয়ে পড়ছেন অসহায়। অনিয়মের মহোৎসব দেখে মনে হয়, আমরা যেন চরম এক অসভ্যতার দিকে ছুটছি। এটাই যেন নিয়তি। দুভাগ্য।
জনসংখ্যার চাপ সামলাতে না পারার ব্যর্থতা অবশ্যই সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ সমূহের দায়িত্বশীল কর্তাদের। যে যোগাযোগের ক্ষেত্রেই হোক, আর স্বাস্থ্যসেবা বা বাজার ব্যবস্থার ক্ষেত্রেই হোক। জনসংখ্যা বিস্ফোরণ ঠেকাতে জন্মনিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি বাস্তবায়নের ব্যর্থতাও সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্তাদের। এ বিভাগের অনেক কর্তা আছেন যার সন্তানের সংখ্যা দুইয়ের অধিক। হালির হাদিসও মিলবে অনেক ক্ষেত্রে। তাকে কি? শাস্তির ব্যবস্থা না থাকলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। জন্ম নিয়ন্ত্রণের জোরালো কর্মসূচি ছিলো মাঠ পর্যায়ে তাতে যথেষ্টই ঘাটতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। যেটুকু সুফল মিলছে তা মূলত সচেতন সমাজেই। সচেতনদের মধ্যেই ছেলের আশায় বহু কনের পিতা-মাতা হওয়ার উদাহরণ রয়েছে। জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে জনসংখ্যা। রোধ করতে না পারলে মুখটুকু উঁচু করে খাবি খাওয়ার মতো শ্বাসটুকুও যে দেশের মানুষ নিতে পারবে না, তা ঈদে আপন ঠিকানায় ফেরা ঈদ শেষে কর্মস্থলের উদ্দেশে ছোটা মানুষের মাছি থকথকে ভিড় দেখে দায়িত্বশীলদের উপলব্ধি করতে হবে। যা কিছু অনিবার্য, যা হওয়ার তাই হচ্ছে। এরকম ভেবে বসে থাকা মানে সভ্যতাকে অস্বীকার করা। ফলে ভাবতে হবে। করণীয় খুঁজে সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিতে হবে। অবশ্যই জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তর করতে হবে। সেই পরিবেশ তথা অবস্থা রেখে তো!
মানুষ বৃদ্ধির সাথে সাথে অবশ্যই যোগাযোগ ব্যবস্থার সুব্যবস্থা বৃদ্ধি করতে হবে। আইন প্রয়োগকারীদের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি জনসংখ্যা বৃদ্ধিরোধে শক্ত আইন প্রণয়ন করে তা প্রয়োগে কড়াকড়ির বিকল্প নেই। বাজারে হাউখাও। যেন কাড়াকাড়ি। মাংসের অভাব। পাচার করে আনতে গিয়ে মানুষ মরছে পশুর মতো। আক্কেল উঠছে না। খাল-বিলে যেমন পানি সংকট, তেমনই মাছের তীব্র অভাব। ইলিশের দেশে ইলিশ কখন থাকে না? হাউখাওয়ের কারণেই তো হাহাকার। জনসংখ্যা যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে তা অব্যাহত থাকলে বনবাদাড়ের অবশিষ্টু টুকুও কি খুঁজে পাওয়া যাবে? একটু ভেবে দেখবেন কি কর্তাবাবুরা?