সকল শিশুকেই টিকা নিশ্চিত করার তাগিদ
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরে হাম রুবেলা টিকাদান ক্যাম্পেইন উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার বিকেল সাড়ে তিনটায় সদর হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জানানো হয় এবার জেলায় ৯ মাস থেকে ১০ বছর বয়সী ২ লাখ ২৯ হাজার ৮২১ জন শিশুকে হাম রুবেলা টিকা প্রদান করা হবে। আগামী ১৮ মার্চ কার্যক্রম শুরু হবে এবং ১১ এপ্রিল শেষ হবে। প্রেস কনফারেন্সে জেলার সিভিল সার্জন ডা. এএসএম মারুফ হাসান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মেডিকেল অফিসার ডা. নিশাত তাসনিম, সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. আওলিয়ার রহমান, পরিসংখ্যানবিদ আকতার হোসেন, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব সভাপতি সরদার আল আমিন ও সাধারণ সম্পাদক রাজীব হাসান কচিসহ স্থানীয় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। প্রেস কনফারেন্সে জানানো হয়, জেলার মোট জনসংখ্যা ১২ লাখ ৮৫ হাজার ৫৯০ জন। বিদ্যালয়ের শিশুর সংখ্যা ১ লাখ ৩৮ হাজার ১৮৯ জন এবং কমিউিনিটি শিশুর সংখ্যা ৯১ হাজার ৬৩২ জন। মোট শিশুর সংখ্যা ৯ মাস থেকে ১০ বছর বয়সী শিশু ২ লাখ ২৯ হাজার ৮২১ জন। মোট বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১ হাজার ১১টি। আউটরিচ টিকাদান কেন্দ্র ১ হাজার ১০টি। স্থায়ী টিকাদান কেন্দ্র ৭টি। অতিরিক্ত টিকাদান কেন্দ্র ৫৩টি। ঝুঁকিপূর্ণ টিকাদান কেন্দ্র ১টি। মোট টিকাদান কেন্দ্র ১ হাজার ৭১টি। মোট স্বেচ্ছাসেবকের সংখ্যা ৩ হাজার ২১৩ জন। মোট টিকাদান কর্মীর সংখ্যা ২ হাজার ১৪২ জন। ১ম সারির তত্ত্বাবধায়ক ১৩৫ জন। মাইকিংয়ের মাধ্যমে প্রচার কার্যক্রম চলবে ১৬ মার্চ এবং ক্যাম্পেইন উদ্বোধন ১৮ মার্চ। জেলার সিভিল সার্জন ডা. এএসএম মারুফ হাসান বলেন, ৯ মাস বয়স থেকে ১০ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদেরকে ১ ডোজ হাম রুবেলা টিকা দিতে হবে। স্কুলে যাতায়াতকারী চতুর্থ শ্রেণির সকল শিশুকে প্রথম সপ্তাহে টিকা খাওয়ানো হবে। ২৫ মার্চ থেকে ২৭ মার্চ বন্ধ থাকবে। ২৮ মার্চ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত কমিউনিটি পর্যায়ের শিশুদের টিকা খাওয়ানো হবে। এর আগে ২০১৪ সালে হাম রুবেলা ক্যাম্পেইন হয়েছিলো। স্বাস্থ্য বিভাগের একার কাজ নয়। সম্মিলিতভাবে কাজ করি তাহলে শতভাগ সফলতা অর্জন করা সম্ভব হবে। আপনারা প্রচার-প্রচারণা করে থাকেন। এ সময়ে শিশুদের সুরক্ষার করার জন্য এ টিকা দেয়া হচ্ছে। প্রশিক্ষিত লোক দ্বারা ইনজেকশন দেয়া হবে। ২ বছর পর্যন্ত শিশুদের হাতে এবং ১০ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের পায়ে টিকা দেয়া হবে।
মেহেরপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মেহেরপুরে টিকাদান কর্মসূচির আওতায় ৯ মাস থেকে শুরু করে ১০ বছরের বয়সী ১ লাখ ২২ হাজার ১শ ৬৯জন শিশুকে হাম রুবেলা টিকা দেয়া হবে। রোববার বেলা ১২টায় মেহেরপুর সিভিল সার্জন কার্যালয় মিলনায়তনে হাম রুবেলা ক্যাম্পেইন উপলক্ষ্যে প্রেস কনফারেন্সে এ তথ্য জানান সিভিল সার্জন ডা. নাসির উদ্দীন। তিনি জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আগামী ১৮ মার্চ হতে ২৪ মার্চ পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ও ২৮ মার্চ থেকে ১১ এপ্রিল নিয়মিত টিকাদান কেন্দ্রসমূহে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে এ কর্মসূচি। কর্মসূচি সফল করতে ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সিভিল সার্জন আরও জানান, জেলার ৩ উপজেলা ও মেহেরপুর পৌরসভার ৬শ ৫৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, ৬শ ৮৭টি অস্থায়ী কেন্দ্রে এ টিকাদান কার্যক্রম চলবে। প্রেস কনফারেন্সে জানানো হয়, শিশু যদি আগে এমআর (হাম রুবেলা) টিকা পেয়ে থাকলেও অথবা হাম বা রুবেলায় আক্রান্ত হয়ে থাকে, তবুও সেসব শিশুদের ক্যাম্পেইনে এমআর টিকা দেয়া যাবে। এমআর টিকার অতিরিক্ত ডোজ শিশুর কোন ক্ষতি করে না। একটি শিশুও যদি টিকা না পায়, তাহলে অন্যরাও তার মতো হাম রুবেলার রোগের ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকবে না। এর আগে কনফারেন্সে এসআইএমও মেডিকেল অফিসার ডা. লিশান্ত ম-ল পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে হাম রুবেলা টিকাদান কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন। জেলা ইপিআই সুপারিনটেনডেন্ট আব্দুস সালামের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. ফয়সাল হারুন, জেলা প্রেসক্লাব সভাপতি তোজাম্মেল আযম, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব চাদু, সাংবাদিক রাশেদুজ্জামানসহ জেলার ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া সাংবাদিকগণ।