কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়া মডেল থানার সদ্যজাত ৩ মাস বয়সের একটি শিশু হত্যা মামলায় শাপলা রাণী (২২) নামে শিশুর চাচির যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছেন আদালত। গতাকাল রোবরার দুপুরে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক অরূপ কুমার গোস্বামীর আদালত আসামির উপস্থিতিতে এই রায় দেন। দ-প্রাপ্ত হলেন- কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আলামপুর দাসপাড়া গ্রামের বিশু কুমার দাসের স্ত্রী শাপলা রাণী দাস (২২)।
আদালতের প্রসিকিউশন সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২২ জানুয়ারি দুপুর সাড়ে ১২টায় উপজেলার আলামপুর দাসপাড়া গ্রামের মানিক কুমার দাসের ৩মাস বয়সী শিশু মুক্তা রাণী দাসকে ঘরের বারান্দায় শোয়া অবস্থায় থেকে নিখোঁজ হয়। ঘটনার দিনরাত পৌনে ৮টার দিকে বাড়ির টিউবওয়েলের পাশ থেকে শিশুর মরদেহ খুঁজে পায় পরিবারের লোকজন। এ ঘটনায় নিহত শিশুর দাদা সুনীল কুমার দাস বাদী হয়ে পরদিন ২৩ জানুয়ারি অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া মডেল থানায় অপহরণ পূর্বক হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে ১৪ মার্চ, ২০১৯ তারিখে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ।
তদন্তকালে হত্যাকা-ের মোটিভ সম্পর্কে পুলিশ জানতে পারে, ঘটনার কয়েক বছর পূর্বে নিহত শিশুর পিতা মানিক কুমার দাসের চাচাতো ভাই বিশু কুমার ও শাপলা রাণী দাসের একটি শিশুপূত্রকে নিহত মুক্তা রাণীর দাদি গোলাপী রাণী দাস গোসল করিয়ে দেন। পরে শিশুটি ঠা-াজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এতে শাপলা রাণী দাসের বিশ^াস যে, গোলাপী রাণী দাসের গোসল করানোর জন্যই তার শিশুটির মৃত্যু হয়। এই আক্রোশ থেকেই আসামি শাপলা রাণী দাস প্রতিশোধ নিতে ৩ মাস বয়সী মুক্তা রাণীকে হত্যা করেন বলে প্রাথমিক সত্যতা নিশ্চিত হয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুষ্টিয়া মডেল থানার এসআই রব্বানী সরকার দ.বি. ৩০২ ধারায় আসামি শাপলা রাণী দাসের বিরুদ্ধে হত্যাকা-ের অভিযোগ দাখিল করেন আদালতে।
কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌশুলী অ্যাড. অনুপ কুমার নন্দী জানান, চাঞ্চল্যকর এই শিশু হত্যা মামলাটি সাক্ষ্য শুনানী শেষে আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীত প্রমাণিত হওয়ায় হত্যাকা-ের দায়ে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যু দ-যোগ্য হওয়ার পরেও আসামি শাপলা রাণী দাসের যেহেতু দুইটি নাবালোক শিশু সন্তান আছে, ওই শিশুকে অকালে এতিম না করার বিষয়ে বিবেচনা করে তাকে মৃত্যুদ-ের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদ-সহ ১০হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ বছরের সাজার আদেশ দিয়েছেন আদালত।