স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর গিরীশনগর বাজারপাড়ার গ্রেফতারকৃত কথিত সাংবাদিক মানিক ও রাজার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শেষে মানববন্ধন করেছে। সেই সাথে গ্রেফতারকৃতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে গিরীশনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ, শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীসহ এলাকাবাসী। এদিকে মানিক ও রাজার গ্রেফতারের খবর জানতে পেরে অনেকেই মুখ খুলতে শুরু করেছে। বাবা আ.লীগ নেতা ও কমিটির সদস্য হওয়ায় ছেলেরা একের পর অপরাধমূলক কর্মকা- করলেও এতোদিন কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি বলে স্থানীয়রা জানায়। এছাড়াও মানিক এলাকায় হলুদ সাংবাদিকতা করে অনেককেই অতিষ্ঠ করে তোলে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। তবে জামিনে এসে কি রূপ ধারণ করে সেদিকটি ভেবেই অনেক অভিভাবকের মধ্যে বিরাজ করছে ভীতি।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের গিরীশনগর বাজারপাড়ার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে গ্রেফতারকৃত মানিক ও রাজা মিয়াকে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে বিজ্ঞ আদালতের বিচারক। ছাত্রী উত্ত্যক্তকারী মানিক ও রাজার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে গিরীশনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ, শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীসহ এলাকাবাসী। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে বিদ্যালয়মাঠে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূর মোহাম্মদ বলেন, মানিক ও রাজা গ্রেফতার হওয়াতে বিদ্যালয় এলাকায় বিরাজ করছে স্বস্তি। ছেলে-মেয়েরা নির্ভয়ে বিদ্যালয়ে আসতে পারবে এবং বিদ্যালয়ে শৃংখলা ফিরে আসবে আমি মনে করছি। তাদের কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা সবসময় আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হতো। সত্য কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলো না। কারণে অকারণে বিদ্যালয়ে এসে পরিবেশ নষ্ট করতো। ছাত্র-ছাত্রীরা সবসময় ভয়ের মধ্যে থাকতো। অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে মানিক ও রাজার বিরুদ্ধে মুখ খুলতো না। তারা গ্রেফতার হওয়াতে অনেকেই এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে। শুধু শিক্ষার্থীরাই না এলাকাবাসীও তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ফুঁসে উঠেছে। আমাদের দাবি অভিযুক্তদের যেন বিচারের মাধ্যমে শাস্তি হয়। বিদ্যালয় পরিচালনা কামিটির সভাপতি হায়দার মল্লিক বলেন, ৬৩৮ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৪শ মেয়ে। প্রায় সময় তারা উত্ত্যক্ত করতো। ছেলে-মেয়েদের নিরাপত্তা দেয়া এবং তাদের ভালো মন্দ দেখার দায়িত্ব কমিটির। এদিকে অভিভাবক মহলের প্রশ্ন একজন অভিভাবক সদস্যর ছেলেদের কর্তৃৃক মেয়েরা উত্ত্যক্তর শিকার হলে তিনি কীভাবে স্কুল কমিটির সদস্য থাকেন? উল্লেখ্য মানিক ও রাজার বাবা তিতুদহ ইউনিয়ন ২নং ওয়ার্ড আ.লীগের সভাপতি এবং বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির অভিভাবক সদস্য। আর তার ছেলেদের দ্বারায় বিদ্যালয়ের অনেক মেয়ে উত্ত্যক্তের শিকার হয়ে থাকে।
একটি সূত্র জানিয়েছে, কথিত সাংবাদিক মানিক বিভিন্ন ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানে গিয়ে গায়ে পেতে সাংবাদিকতার প্রভাব খাটাতো এবং তা গোপন ক্যামেরায় ধারণ করতো। পরে সে ভিডিও ফাঁস করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ফায়দা লুটতো বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছে। এদিকে কয়েকজন শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছে, অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে আমাদের বিদ্যালয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। তাই চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারের নিকট আমাদের জোর দাবি অভিযুক্ত মানিক ও রাজার যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়।