দামুড়হুদা অফিস: একবিংশ শতকের এ যুগে জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিকাশে গণিতের ভূমিকা অতীব গুরুত্বপূর্ণ। শুধু তাই নয়, ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে গণিতের প্রয়োগ বেড়েছে। এ সব বিষয় বিবেচনায় রেখে মাধ্যমিক পর্যায়ে ৬ষ্ঠ থেকে ৭ম ও ৯ম শ্রেণির গণিত বিষয়ে শিক্ষার্থীদের উপযোগী ও আনন্দদায়ক করে তুলতে জাতীয় শিক্ষাকার্যক্রমে গণিতের কাজ ও নমুনা প্রশ্নাদি সংযোগ করে মূল্যায়নকে সৃজনশীল করা হয়েছে। কিন্তু গণিত বিষয়ের শিক্ষকদের সৃজনশীল পদ্ধতির ওপর মাস্টার ট্রেইনার দিয়ে প্রশিক্ষণের কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। ফলে মাধ্যমিক স্কুল পর্যায়ে অর্ধবাষিক পরীক্ষার ফলাফলে এ বিষয়ে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। ফলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন।
জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলায় মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ে ৩৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল গণিত বিষয় আব্যশিক। কিন্তু গণিত বিষয় সৃজনশীল হলেও সরকারিভাবে আজ পর্যন্ত মাস্টার ট্রেইনার দিয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। এ বিষয়ে নিয়োগকৃত শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হলে সৃজনশীল শিক্ষক হিসেবে পাঠদান সহজ হবে। সৃজনশীল গণিতের ওপর শিক্ষার্থীদের পাঠদান করতে পারলে গণিত বিষয়ে আশানুরুপ ফলাফল অর্জন করতে পারবে। তাতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্বিগ্ন দূর হবে।
৯ম শ্রেণির ছাত্র হায়দার আলী বলে, সৃজনশীল গণিতের বিষয়ে আমার কোনো জ্ঞান নেই। শিক্ষকরা সাধারণভাবে পাঠ দান করছেন। সৃজনশীল গণিত প্রশ্নের ওপর কীভাবে উত্তরপত্র উপস্থাপন করতে হবে তা জানা নেই। আর পরীক্ষকরা কীভাবে উত্তরপত্র দেখবেন তা নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভাবিয়ে তুলছে।
দামুড়হুদা মাধ্যমিক গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ইসমাইল হোসেন বলেন, মাধ্যমিক স্তরে গণিত বিষয়ে সৃজনশীল পদ্ধতি চালু করা হলেও ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে ৭ম ও ৯ম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠ দানের জন্য এ বিষয়ের শিক্ষকদের মাস্টার ট্রেইনার দ্বারা কোনো প্রশিক্ষণ দেয়া হয়নি। ফলে শিক্ষকরাও এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরিপূর্ণভাবে জ্ঞান দিতে পারছেন না। ফলে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার ফলাফলে ধস নেমেছে। গণিতে সৃজনশীল বিষয়ে দ্রুত শিক্ষকদের ট্রেইনার দিয়ে প্রশিক্ষণ দিলে বার্ষিক পরীক্ষায় ছাত্রছাত্রীরা গণিতের ফলাফলে বিপর্যয় ধস নামা থেকে রেহাই পাবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি গোবিন্দহুদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান বলেন, অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায় সৃজনশীল গণিত বিষয়ে ফলাফলে বিপর্যয় ঘটেছে। কারণ ও বিষয়ে দক্ষ মাস্টার ট্রেইনার দিয়ে গণিত শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়নি। শিক্ষকদের সৃজনশীল গণিত বিষয়ের ওপর কোনো সঠিক ধারণা নেই। ফলে গণিত শিক্ষকরা ছাত্রছাত্রীদের মাঝে সঠিকভাবে পাঠদান করতে অসুবিধায় পড়ছেন। দ্রুত সৃজনশীল গণিত বিষয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা দরকার। তা না হলে বার্ষিক পরীক্ষায় গণিত বিষয়ে ফলাফল আরও বিপর্যয় ঘটবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ রায় বলেন, সরকারিভাবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হলে গণিত বিষয়ে শিক্ষকদের মাস্টার ট্রেইনার দিয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা করা হবে। তাছাড়া চুয়াডাঙ্গা জেলায় এ বিষয়ে কোনো মাস্টা ট্রেইনার নেই।