মাথাভাঙ্গা মনিটর: কাশ্মীরে চার নেতার বন্দিত্বের মেয়াদ বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। গত আগস্টে জম্মু ও কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন কেড়ে নেয়ার সময় রাজনৈতিক নেতা ও প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বসহ প্রায় ৫ হাজার মানুষকে আটক করে বিজেপি সরকার। এরপর ছয় মাসের বেশি হয়ে গেলেও এখনো আটক আছেন অনেকে। এর মধ্যে ড্রাকোনিয়ান জননিরাপত্তা আইনের আওতায় তাদের আটক রাখার সময় বাড়ানো হচ্ছে। এই আইনে কোনো অভিযোগ ছাড়াই কাউকে দুই বছর পর্যন্ত আটকে রাখতে পারবে সরকার।
খবরে বলা হয়, নতুন করে বন্দিত্ব বাড়ানো হয়েছে কাশ্মীরের দুই সাবেক মুখ্যমন্ত্রীসহ শীর্ষ চার নেতার। তারা হচ্ছেন, ওমর আবদুল্লাহ, মেহবুবা মুফতি এবং আঞ্চলিক নেতা আলি মোহাম্মদ সাগর ও সরতাজ মাদনি। মেহবুবা মুফতির মেয়ে ইলতিজা মুফতি তার মায়ের আটকের নির্দেশ নিশ্চিত করেছেন। এক টুইটে তিনি লিখেছেন, রাষ্ট্রদ্রোহী মন্তব্যের অভিযোগে নয় বছর বয়সীদের আটকে রাখা স্বৈরাচারি সরকারের কাছ থেকে জননিরাপত্তা আইন ব্যবহার প্রত্যাশিত।
প্রাথমিকভাবে তাদের যে আইনে আটক করা হয় তাতে সর্বোচ্চ ছয় মাস আটক রাখার অনুমোদন আছে। চলতি মাসে তাদের আটক হওয়ার ছয় মাস পূর্ণ হয়েছে। ওই আইনে তাদের ছেড়ে দেয়ার কথা। তবে তা না করে, জননিরাপত্তা আইনে তাদের বন্দিত্ব বাড়ানো হয়েছে।
নাম না প্রকাশের শর্তে এক সরকারি কর্মকর্তা জানান, তাদের যে আইনে আটক করা হয়েছিলো, তাতে ছয় মাসের বেশি অভিযোগ ছাড়া আটকে রাখার নিয়ম নেই। এক্ষেত্রে হয় তাদের ছেড়ে দিতে হতো বা জননিরাপত্তা আইনের অধীনে আনতে হতো। অপর এক কর্মকর্তা জানান, জননিরাপত্তা আইনে আরো বেশ কয়েকজন আঞ্চলিক নেতাকে আটকে রাখার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলে সাড়া পায়নি।
এদিকে, বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত বছরের আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত কাশ্মীরে জননিরাপত্তা আইনের অধীনে ৩৮৯ জনকে আটক করা হয়েছে। অনেককে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে। বাকিদের অন্যকোথাও নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জননিরাপত্তা আইনটিকে ‘অরাজক আইন’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।