এইচআইভির চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ ব্যবহারের পরিকল্পনা চীনের
স্টাফ রিপোর্টার: চীনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের (২০১৯-হঈড়ঠ) সংক্রমণ দিন দিন বাড়ছে। চীনের মূল ভূখ-ে গতকাল বুধবার এক দিনে প্রায় দেড় হাজার মানুষ প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। দেশটির ন্যাশনাল হেলথ কমিশন এ তথ্য দিয়েছে। তাদের মতে, চীনে এ পর্যন্ত ১৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা ছড়িয়েছে ৬০৬৫ জন। চীনসহ ১৮টি দেশে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসকে ‘শয়তান’ আখ্যা দিয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন, এ প্রাণঘাতী ভাইরাস মোকাবেলায় চীন জয়ী হবে।
এদিকে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ায় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। অধিদফতর থেকে ইতোমধ্যে সব সিভিল সার্জনকে ভাইরাসটি সম্পর্কে সার্বিক পরিস্থিতি অবহিত করে সংক্রমণ প্রতিরোধে করণীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। রোগতত্ত্ব রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানান, এ পর্যন্ত চীন থেকে ৩৩৪৮ জন বাংলাদেশে এসেছেন। তাদের মধ্যে সন্দেহজনক কোনো রোগী পাওয়া যায়নি। তাদের ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। করোনাভাইরাস বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে চাপ বাড়ছে বেইজিংয়ের ওপর। হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, চীনের সঙ্গে উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ রাখার কথাও ভাবতে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ভাইরাস ছড়ানোর ভয়ে বিশ্বের বিভিন্ন বিমান পরিবহন সংস্থা এরই মধ্যে চীনের পথে ফ্লাইট কমিয়ে দিয়েছে। বড় আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোও তাদের কর্মীদের চীনে যাতায়াতের বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপ করেছে।
চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, শুধু চীনেই আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ৯৭৪ জনে দাঁড়িয়েছে। যা সার্স ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যার চেয়েও বেশি। ২৯টি প্রদেশসহ চীনের মূল ভূখ-ের বাইরে আরও ১৭ জায়গায় অন্তত ৭০ জনের দেহে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৬৫ জনে। তবে চীনের বাইরে এ ভাইরাসে কারো মৃত্যুর তথ্য এখন পাওয়া যায়নি।
করোনাভাইরাস রোগীদের দিনরাত সেবা দিতে দিতে চীনে একজন নারী চিকিৎসক কর্মী চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমি আর নিতে পারছি না। ২৭ জানুয়ারি ব্রিটিশ জার্নাল ডেইলি মেইলের অনলাইন ভার্সন মেলওনলাইন-এ এ ধরনের একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। মূলত দেশটিতে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসের ভয়াবহতা বোঝাতেই এ ধরনের কয়েকটি ভিডিও আপলোড করা হয়েছে। সেখানে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে- নতুন করোনাভাইরাস ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়ায় চীনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ দেশটির হুবেই প্রদেশে বসবাসরত কমপক্ষে ৫০ লাখ মানুষকে আলাদা করে রেখেছে।
চীন থেকে সব বাংলাদেশি ফিরতে চান না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন বলেছেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে চীনে আটকা পড়া বাংলাদেশিদের ফেরত আনতে সরকার সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত রয়েছে। চীন সরকার রাজি হলেই তাদের ফেরত আনা হবে। তবে সব বাংলাদেশি এখনই দেশে ফিরতে চান না বলে জানিয়েছেন। গতকাল বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ঢাকা-সিলেট চার লেন রোড তৈরির পরিকল্পনা নিয়ে সিলেটের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও রাজনীতিবিদদের সঙ্গে মতবিনিময়সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন মন্ত্রী। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে চীনে অবস্থান করা বাংলাদেশিদের ফেরত আনতে আমরা বিমানের ফ্লাইটও প্রস্তুত করে রেখেছি। নিজেদের নাগরিকদের দেশে ফেরত আনার বিষয়টি চীনা কর্তৃপক্ষকে আমরা জানিয়েছি। তবে তারা বলেছে, অন্তত দু’সপ্তাহ সবাইকে পর্যবেক্ষণে রাখবে। এরপর বিদেশিরা নিজ দেশে ফিরতে পারবেন। তিনি বলেন, দেশে ফিরতে চাওয়া বাংলাদেশিদের তালিকা করা হয়েছে। তাদের নিবন্ধন শুরু হয়েছে। তবে অনেকে ফিরতে আগ্রহী নন। তারা বলেছেন, এ অবস্থায় দেশে ফেরা ঠিক হবে না। কারণ, এ ভাইরাসে আক্রান্তদের সব ধরনের চিকিৎসাসেবা চীন দিচ্ছে। বাংলাদেশে এলে কী ধরনের সেবা পাবেন সেটা বলা মুশকিল। মন্ত্রী বলেন, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশও নিজ নাগরিকদের ফেরত নিতে আগ্রহ দেখিয়েছে। তবে চীনারা এখনই কোনো বিদেশিকে ফেরত পাঠাচ্ছে না। এ বিষয়ে তারা খুব কঠোর। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, চীন থেকে বাংলাদেশি নাগরিকদের ফেরত আনা হলেও তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। কারণ আমরা চাই না, ভাইরাসটা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ুক।
বাংলাদেশে এখনও কোনো রোগী না পাওয়ায় আতঙ্কিত না হতে পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। দেশের সব জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার এবং সিভিল সার্জনদের নিজ নিজ জেলায় ১৪ দিনে চীন থেকে আগত নাগরিকদের তালিকা প্রদান করতে বলা হয়েছে। অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশকে চীন এ ভ্রমণ সংক্রান্ত করণীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিকে চীনে এ সময় ব্যবসায়িক ভ্রমণ সংক্রান্ত করণীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
দেশের বিভিন্ন স্থানে সতর্কতা: দেশের বিভিন্ন স্থানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নির্দেশিত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। টেকনাফ স্থলবন্দরে ইমিগ্রেশন যাতায়াত বন্ধ থাকলেও মিয়ানমার থেকে পণ্যবোঝাই ট্রলারের যাতায়াত রয়েছে। তবে সেগুলোর মাঝি-মাল্লাদের চলাচল নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে। দর্শনা সীমান্ত বন্দরে স্থাপন করা হয়েছে মেডিকেল ক্যাম্প। ক্যাম্পের প্রধান চিকিৎসক ডা. শাকিল আর সালান জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে সেখানে ভারত থেকে আগতদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। মোংলা সমুদ্রবন্দরেও বসানো হয়েছে স্ক্যানার। পোর্ট হেলথ কর্মকর্তা ডা. সুফিয়া খাতুন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ ইমিগ্রেশন, হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে মেডিকেল টিম কাজ করছে।
সিলেট ব্যুরো জানায়, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনাভাইরাস আইসোলেশন ইউনিট চালু করা হয়েছে। আগাম সতর্কতা হিসেবে হাসপাতালে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটিও গঠন করা হয়েছে। হাসপাতাল সূত্র জানায়, কিছুদিন আগে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য একটি বিশেষ ইউনিট বা কর্নার চালু করা হয়েছিলো। এ ইউনিটই এখন আইসোলেশন ইউনিটে রূপান্তর করা হয়েছে। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা বিবেচনা করে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে ৫ বেডের আইসোলেশন ইউনিট চালুর নির্দেশনা ছিলো। তবে ৮ বেডের ইউনিট চালু করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের বন্দর প্রতিনিধি জানান, সেখানে চীনা নাগরিকদের অবাধ বিচরণে করোনা ভাইরাস আতঙ্কে রয়েছেন এলাকাবাসী। বন্দরের মদনপুরের শাইরা গার্ডেন, লক্ষণখোলার ডংজিলংজিভিটি ব্যাটারি কারখানাসহ কয়েকটি এলাকায় জীবিকার জন্য বাস করছেন এসব চীনা নাগরিক। এলাকার হাটবাজার ও রাস্তাঘাটে এদের অবাধ বিচরণ লক্ষ করা গেছে। এতে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। তবে বন্দর এলাকা পর্যন্ত ভাইরাসটির আসার কোনো সুযোগ নেই জানিয়ে বন্দর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শুক্লা সরকার বলেন, এ ব্যাপারে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
ভাইরাস মোকাবেলায় বিভিন্ন দেশের প্রস্তুতি: বাংলাদেশ, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, জাপানসহ বেশকিছু দেশ ইতোমধ্যে তাদের নাগরিকদের উহান ও হুবেই প্রদেশ থেকে সরিয়ে আনার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে আপাতত সেখান থেকে বিদেশিদের সরাতে গেলে ভাইরাস আরও বেশি ছড়িয়ে পড়বে কি না, সেই শঙ্কা রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। চীন থেকে যারাই অন্য দেশে যাচ্ছেন, তাদের অন্তত ১৪ দিন পর্যবেক্ষণে রাখার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। অনেক দেশ তাদের নাগরিকদের জরুরি প্রয়োজন ছাড়া চীনে না যেতে পরামর্শ দিয়েছে। ফিলিপিন্স, শ্রীলংকা ও ইন্দোনেশিয়া তাদের বিমানবন্দরে চীনা নাগরিকদের অন অ্যারাইভাল ভিসা প্রদান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অস্ট্রেলিয়া তাদের নাগরিকদের হুবেই থেকে দেশে ফিরিয়ে আপাতত ভারত মহাসাগরের দুর্গম একটি দ্বীপে রেখে পর্যবেক্ষণ করার কথা ভাবছে। সিএনএন জানিয়েছে, নতুন করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণের উপায় খুঁজতে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের একটি দলকে চীনে পাঠাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ওই বিশেষজ্ঞ দলে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজেস কন্ট্রোলের (সিডিসি) প্রতিনিধিরাও থাকবেন।
‘শয়তান’ করোনাভাইরাস হার মানবে: মঙ্গলবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গ্যাব্রেইয়েসুসের সঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেন, নতুন করোনাভাইরাস একটি শয়তান। আমরা এ শয়তানকে গুপ্তঘাতক হয়ে থাকতে দিতে পারি না। চীন সরকার এ ভাইরাসের আক্রমণকে সার্স দুর্যোগের শ্রেণিতে রেখেছে। এর অর্থ হল- দেশটিতে যারা ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হবেন তাদের অবশ্যই আলাদা করে ফেলতে হবে। প্রেসিডেন্ট শি বলেন, করোনাভাইরাস যুদ্ধে জয়ী হওয়ার পূর্ণ আত্মবিশ্বাস এবং সক্ষমতা চীনের আছে। তিনি বলেন, চীন আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করবে এবং ভাইরাস প্রতিরোধ কর্মসূচিতে ডব্লিউএইচওর অংশগ্রহণকে স্বাগত জানাবে। ডব্লিউএইচওর এক মুখপাত্র বলেন, করোনোভাইরাস ছড়িয়ে পড়া এলাকাগুলোয় চীনা ও বিদেশি নাগরিকদের কীভাবে সুরক্ষা দেয়া যায় এবং সেখান থেকে লোকজনকে কীভাবে সরিয়ে নেয়া যায় তা নিয়ে বেইজিংয়ে তারা আলোচনা করেন।
এদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের জন্য কোনো টিকা ও রোগ উপশমকারী ওষুধ না থাকায় চীন জরুরি ভিত্তিতে এইচআইভির চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে। চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশনের (এনএইচসি) বেইজিং শাখা জানায়, ভাইরাসটিতে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য লোপিনাভাইর ও রিটোনাভাইরের সমন্বয় ব্যবহারের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এইচআইভির সংক্রমণ প্রতিরোধে কালেট্রা নামে আবভিয়ে কোম্পানি এটি বাজারজাত করে থাকে। একে অ্যালুভিয়া নামেও ডাকা হয়। এনএইচসি জানায়, ভাইরাসটির সংক্রমণের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ না থাকার কারণে রোগীদের দিনে দুবার দুটি লোপিনাভাইর ও রিটোনাভাইর ট্যাবলেট ও দিনে দুবার এক ডোজ আলফা-ইন্টারফেরন নেবুলাইজারের মাধ্যমে দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
গবেষণাগারে নভেল করোনাভাইরাসের প্রতিলিপি তৈরি: অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের গবেষণাগারে নভেল করোনাভাইরাসের একটি প্রতিলিপি তৈরি করা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার একদল বিজ্ঞানী প্রতিলিপি তৈরি করেন। এটিকে করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কারের পথে ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর মাধ্যমে দ্রুত এ প্রাণঘাতী ভাইরাসটির টিকা তৈরি করা যাবে বলে আশা করছেন বিজ্ঞানীরা।
মেলবোর্নের পিটার ডোহার্টি ইনস্টিটিউট ফর ইনফেকশন অ্যান্ড ইমিউনিটির গবেষকরা বুধবার জানান, রোগাক্রান্ত এক রোগীর শরীর থেকে সংগ্রহ করা নমুনা থেকে ভাইরাসটি উৎপাদন করা হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও বিশ্বের অন্য গবেষকরা এটি শেয়ার করতে পারবেন। ইতোমধ্যেই চীনের একটি গবেষণাগারেও সাফল্যজনকভাবে এ নভেল করোনাভাইরাসটি উৎপাদন করা হয়েছে। কিন্তু তারা ভাইরাসটির নমুনা প্রকাশ না করে শুধু এর জিনোম সিকোয়েন্স প্রকাশ করেছে। ডোহার্টি ইনস্টিটিউটের উপ-পরিচালক মাইক ক্যাটন বলেন, এ ধরনের একটি ঘটনার জন্য আমরা বহু বছর ধরে পরিকল্পনা করেছি, আর সত্যিকারভাবে এ জন্যই আমরা এত তাড়াতাড়ি জবাব পেতে সক্ষম হয়েছি। তবে এককভাবে এ অগ্রগতিতেই নতুন ভাইরাসটির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের চিত্র পাল্টে যাবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বিশ্বে ওষুধ ঘাটতি বাড়াবে করোনা ভাইরাস: করোনাভাইরাস আতঙ্কের কারণে মানুষ জ্বর-ঠা-াজনিত রোগের ওষুধ কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে। কিছু কিছু জায়গায় মাস্ক-হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ ভাইরাসের কারণে ওষুধ সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিতে পারে। সম্প্রতি মার্কিন সাময়িকী উইয়ার্ড প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়- করোনা ভাইরাসের উৎস চীনে, আবার এর সংক্রমণ থেকে বাঁচতে প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর বড় উৎপাদকও তারা। বিষয়টি খুবই অদ্ভুত। মানুষ জীবনরক্ষাকারী পণ্যের জন্য চীনা কোম্পানিগুলোর ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল। বিশ্বে ওষুধের উপাদান উৎপাদনকারী অন্যতম দেশও চীন। করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে ওষুধ সংকট দেখা না দিলেও সরবরাহের ক্ষেত্রে যথেষ্ট হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আরব আমিরাতে করোনা ভাইরাসের রোগী: চীনের উহান থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়া একটি পরিবারের সদস্যদের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে এ প্রথম আবর আমিরাতে এ ভাইরাস শনাক্ত হলো। গতকাল বুধবার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের অবস্থা স্থিতিশীল আছে। তাদের সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তবে কোন হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা করা হচ্ছে সে তথ্য দেয়া হয়নি। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই এবং আবুধাবির প্রধান বিমানবন্দরের পক্ষ থেকে গত সপ্তাহে বলা হয়েছিলো- চীন থেকে আসা যাত্রীদের পরীক্ষা করা হবে এবং বিমানবন্দরে এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক ব্যবস্থা রাখা হবে।