বাঘ ভেবে বাঘডাশা কিম্বা অন্য কোনো বন্যপ্রাণী হত্যার পর উল্লাস শুধু অসভ্যতাই নয়, আত্মঘাতিও বটে। মূলত এ কারণেই বন্যপ্রাণী মারা বা নিধন আইনত দ-িত অপরাধ। দেশে এ দ-ের আইন প্রচলিত থাকা অবস্থায়ও যখন প্রকাশ্যে বন্যপ্রাণী হত্যা ও তা নিয়ে উল্লাস হয় তখন বুঝতে বাকি থাকে না আইন প্রয়োগে এবং সচেতনতায় কতটা ঘাটতি। আর যাই হোক এই ঘাটতি রেখে ধরিত্রীর ভারসম্য রক্ষায় নিজেদের দায়িত্ববান বলে দাবি করা যায় না।
বন্যপ্রাণীদের মধ্যে কিছু আছে যারা শুধু ভয়ানকই নয়, মানুষখেকোও। সঙ্গত প্রশ্ন- যে প্রাণী মানুষ মারে সেই প্রাণী নিধনে আপত্তি কেন? কারণ, পরিবেশ। পরিবেশের স্বার্থে বন্যপ্রাণী যেমন রক্ষা করা দরকার, তেমনই দরকার পরিবেশ বিপন্ন হওয়ার মতো ক্ষতিকারক গ্যাস নির্গত রোখা। মানুষের প্রয়োজনেই মানুষ আবাদি জমি গ্রাস করছে। উজাড় হচ্ছে বন। ফলে বন্যপ্রাণী জনবসতি এলাকায় ঢুকছে। আবার জনবসতি এলাকার মাঠে থাকা কিছু বন্যপ্রাণী খাবার না পেয়ে মানুষের চোখে পড়ছে। আর যখনই চোখে পড়ছে তখনই তাদের হত্যার শিকার হতে হচ্ছে। এক শ্রেণির উৎসুক মানুষের বাড়তি উৎসাহে মাফের রাখাল দামাল ছেলেরা বন্যপ্রাণী হত্যা মেতে ওঠে। তাছাড়া এখনও বন্দুকঘাড়ে নিয়ে পাখি শিকারিদের প্রকাশ্যেই ঘুরতে দেখা যায়। গতকালও দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের গাইদঘাটের চাঁদপুর মাঠে বিরলপ্রজাতির একটি বন্যপ্রাণীকে হত্যার পর উল্লাস করার খবর পত্রস্থ হয়েছে। এরপরও কি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের মধ্যে বনপ্রাণী রক্ষার্থে যার বিশেষ নজর রাখার দরকার তিনি কি ন্যূনতম পদক্ষেপ নিয়েছেন?
বন্যপ্রাণী রক্ষার্থে দেশে প্রচলিত আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে না পরলে বিরলপ্রজাতির প্রাণীই শুধু হারাতে হবে না, পরিবেশের ভারসাম্য হারিয়ে নিজেদেরকেই হাই হাই করতে হবে। বিষয়টি সমাজের সকলকেই উপলব্ধি করতে হবে। প্রতিটি পদেই সকলকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। বিশেষ করে সমাজের সচেতনমহলকেই এ বিষয়ে অধিক কর্তব্যপরায়ন হওয়া দরকার। বন্যপ্রাণী নিধন রোধে প্রশাসনের অনমনিয় পদক্ষেপ কাম্য।