সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে আইন মানার সংস্কৃতি চর্চার প্রয়োজন
স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথোরিটির (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান কামরুল আহসান বলেছেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে আইন মানার সংস্কৃতি চর্চার প্রয়োজন। বিআরটিএর পক্ষে এককভাবে যা সম্ভব না। পরিবহন বিশাল সেক্টর। পরিবহনের মালিক, শ্রমিক, প্রশাসন ও পুলিশ সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তা বাস্তবায়ন করতে হবে। মাঠ পযায়ে বিভাগীয় কাযক্রম সরেজমিনে দেখতে বিআরটিএ চেয়ারম্যান গতকাল রোববার চুয়াডাঙ্গা আসেন। তিনি জেলা প্রশাসকের কাযালয় চত্বরে অবস্থিত বিআরটিএ কাযালয় পরিদর্শন করেন। চেয়ারম্যানের সঙ্গে এ সময় জেলা প্রশাসক মো. নজরুল ইসলাম সরকার ও পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বিআরটিএ চেয়ারম্যান মেহেরপুরে গণশুনানীতে অংশগ্রহণ করেন।
বিআরটিএ চেয়ারম্যান জানান, মাঠপর্যায়ের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সেবার মান কীভাবে ভালো ও সহজীকরণ করা যায়, সে ব্যাপারে কর্মকৌশল নির্ধারণের জন্য এই সফর। সেবার মানন্নোয়ন বিষয়ে চেয়ারম্যান বলেন, নিজস্ব কার্যালয় হলে লাইসেন্স প্রদান, ফিটনেসের জন্য গাড়িগুলোকে রাখা, সেটি পরীক্ষা করা এবং জনগণকে উন্নত সেবা দেয়া যাবে। জনদুর্ভোগ কমাতে ইতোমধ্যেই কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। যেমন, আগে যেখানে গাড়ির নিবন্ধন হতো, ফিটনেসের জন্য সেখানেই যেতে হতো। এখন নিবন্ধন যেখানেই হোক না কেন, বিআরটিএর যে কোনো কার্যালয় থেকে ফিটনেস করা যাবে। প্রাইভেট গাড়ির ফিটনেস এক বছরের পরিবর্তে দুই বছর করে দিয়েছি। লাইসেন্স প্রাপ্তি সহজীকরণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। অর্থাৎ, হালকা, মধ্যম ও হেভী তিন ধরণের লাইসেন্স থাকে। হালকা ও মধ্যম লাইসেন্সধারীদেরকে বলেছি ২০২০ সালের জুন মাস পর্যন্ত হেভী লাইসেন্সের সুবিধা ভোগ করতে পারবেন, পুলিশ ধরবে না। চাইলে এ সময়ের মধ্যে নিয়ম মেনে হালকা থেকে মধ্যম এবং মধ্যম থেকে হেভী লাইসেন্স হিসেবে পরিবর্তন করে নিতে পারবেন।
স্মার্টকার্ড লাইসেন্স পেতে দুর্ভোগ প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান বলেন, স্মার্ট কার্ডের স্টক কমে গেছে। ইতোমধ্যেই দুটো প্রস্তাব সঙ্গত কারণেই ক্রয় কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত হয়নি। আমরা নতুন করে প্রক্রিয়া শুরু করেছি। স্বল্প সময়ের মধ্যে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে বর্তমান যে সমস্যা তা আর থাকবে না। দীর্ঘসূত্রতার কারণে ছবিসহ অ্যাকনলেজমেন্ট দিয়ে একটি সময় দিয়ে দেয়া হচ্ছে। আমরা পুলিশকে অ্যাকসেপ্ট করার জন্য বলেছি। ইজিবাইক প্রসঙ্গে বলেন, এটি মোটরযানের সজ্ঞায় পড়ে না। বাস্তবতা হলো সারাদেশে অনেক ইজিবাইক চলছে। এগুলো আইন অনুযায়ী নিষিদ্ধ হলেও গ্রামীণ পরিবেশ ও পরিবহনে বড় ভূমিকাও রাখছে। ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণে আরটিসির সভায় ওঠানো যেতে পারে এবং জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও মেয়র মিলে পৌর এলাকায় চলাচলের জন্য সংখ্যা সীমিত করতে পারে।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথোরিটি (বিআরটিএ) মেহেরপুর মোটরযান সার্কেল বিআরটিএ অফিস কার্যক্রমের ওপর গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুরে বিআরটিএ অফিস কার্যালয় প্রাঙ্গণে এ গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। গনশুনানিতে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমান। প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহনের চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত সচিব ড. কামরুল আহসান। গণশুনানিতে বক্তব্য রাখেন, বিআরটিএ’র খুলনা বিভাগীয় উপ-পরিচালক মহাসিন আলী, মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা বিআরটিএ সার্কেলের সহকারী পরিচালক আতিয়ার রহমান, মোটরযান পরিদর্শক সালাউদ্দিন প্রিন্স, মেহেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ফজলুল হক মন্টু জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব চাদু, ট্রাফিক পুলিশের টিআই ইসমাইল হোসেন ও মুজতবা হোসেন, জেলা মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আহসান হাবিব সোনা, সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বকুল, জেলা ট্রাক ট্রলি ইউনিয়নের সভাপতি কদর আলী প্রমুখ।
অতিরিক্ত সচিব ড. কামরুল আহসান বলেন, বর্তমান দেশে গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ও ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য প্রচুর আবেদন আসছে। আজকে মেহেরপুর বিআরটিএ অফিসে গণশুনানিতে সেকল অভিযোগ অনিয়মের কথা উঠেছে সেগুলো চিহ্নিত করে কিভাবে সমাধান করা যায় সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হবে। তিনি আরও বলেন, আমি বিআরটিএ-তে অল্প সময়ে এসে পরিবর্তনের ধারা আনার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। মেহেরপুর বিআরটিএ অফিসে জনবল কম রয়েছে সে বিষয়ে আমি ওপর মহলে জানাবো। বতর্মান দেশের প্রধানমন্ত্রী মানুষের দারপ্রান্তে সেবা পৌঁছে দেয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। সেই সাথে আমরাও জনসাধারণের দ্বারে সেবা পৌঁছে দেয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।