মাহফুজ মামুন: বাণিজ্যিকভাবে চুয়াডাঙ্গায় ক্যাপসিকাম চাষ শুরু হয়েছে। আবহাওয়া ক্যাপসিকাম চাষের উপযোগী হওয়ায় ফলন ভালো হয়েছে। এ সবজির চাহিদা রয়েছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। ক্যাপসিকাম বিভিন্ন ধরনের খাবারের সাথে খাওয়া যায়। চুয়াডাঙ্গায় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলার ফাস্ট ফুড, তারকা হোটেল, চাইনিজ খাবারের দোকানগুলোতে সরবরাহ করা হচ্ছে। বাজারে দাম তুলনামূলক ভালো।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরসূত্রে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গাড়াবাড়িয়া গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে ক্যাপসিকাম চাষ শুরু হয়েছে। ১২ বিঘা জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ হচ্ছে। আবহাওয়া উপযোগী ও মাটি উর্বর হওয়ায় ক্যাপসিকাম চাষ ভালো হচ্ছে। ক্যাপসিকাম চাষের উপযুক্ত সময় হলো অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাসের মধ্যে।
ক্যাপসিকামের বিজ বোপণ করার একমাস পর চারা তৈরি হয়। চারা উপযুক্ত হওয়ার পর জমি তৈরি করতে হয়। চারা রোপণের আগে পলিথিন দিয়ে বেড তৈরি করতে হয়। জমিতে নির্দিষ্ট পরিমাণ জায়গা ফাঁকা রেখে গাছের চারা বোপণ করতে হয়। ১২ বিঘা জমিতে প্রায় ৬ হাজার গাছ রয়েছে। প্রতি বিঘা জমি থেকে ৩ টন ক্যাপসিকাম ফল পাওয়া যাবে।
নিয়মিত পরিচর্যা করতে হয় গাছগুলোর। গাছ লাগানোর ৩৫-৪০ দিনের মধ্যে ফুল আসতে শুরু করে। ফুল আসার ২০ দিনের ভেতর ফল বিক্রির উপযুক্ত হয়। কয়েক মাস পর্যন্ত ফল পাওয়া যায় গাছ থেকে। প্রথম পর্যায়ে ফলের রঙ সবুজ হয়। পাকলে ক্যাপসিকামের রঙ হয় লাল। আর মাঠ জুড়ে গাছে গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে ক্যাপসিকাম ফল।
চুয়াডাঙ্গার বাজারে এর চাহিদা অল্প থাকায় ঢাকা ও চট্টগ্রামে বিক্রি করা হয়। ঢাকা ও চট্রগ্রামে এর চাহিদা রয়েছে অনেক বেশি। ব্যাপারিরা চুয়াডাঙ্গা থেকে ক্যাসপিকাম কিনে নিয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামে বিক্রি করেন।
এ পর্যন্ত ১৫ মণের বেশি ক্যাপসিকাম বিক্রি করা হয়েছে। যার বাজার মূল্যে প্রতি কেজি ১০০-১২০ টাকা।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গাড়াবাড়িয়া গ্রামের এগ্রিকনসান ফার্মের ম্যানেজার খাইরুল ইসলাম বলেন, আমাদের ফার্মে তিন বছর ক্যাপসিকাম চাষ করছি। ২০১৮ সালে ১০ কাঠা জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করা হয়। প্রথম বছর আশানুরূপ ফল পায়নি। ২০১৯ সালে ১ বিঘা জমিতে চাষ করলে যথেষ্ট ভালো হয়। ফল ভালো ধরে ছিলো গাছে। অল্প পরিসরে বিক্রি করে ছিলাম। কিন্তু এ মরসুমে শতভাগ সফলতা পেয়েছি ক্যাপসিকাম চাষে। কারণ আবহাওয়া অন্য বছরের তুলনায় ভালো। প্রতিটি গাছে রয়েছে ফল। প্রতিটি ফলের ওজন ভালো। বাজারে ক্যাপসিকামের চাহিদা থাকায় দাম ও ভালো।
এগ্রিকনসান ফার্মের মালিক আব্দুল কাদের বলেন, আমি চাষে নতুনত্ব আনার চেষ্টা করি। সব ধরনের ফল ও ফসল উৎপাদনের চেষ্টা করি। ক্যাপসিকাম লাভজনক একটি চাষ। এ সবজি বাজারে পাওয়া যায় সে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আলী হাসান জানান, চুয়াডাঙ্গায় বাণিজ্যিকভাবে ক্যাপসিকাম চাষ শুরু হয়েছে। এটি লাভজনক ব্যবসা। চাহিদা রয়েছে বাজারে। জেলায় ক্যাপসিকাম চাষ ছড়িয়ে দিতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কাজ করছে। ক্যাপসিকামের মাঠ ঘুরে দেখেছি। গাছ ভালো হওয়ায় ফলও ভালো হয়েছে। সবজি হিসেবে খাওয়া যায় যেকোনো খাবারের সাথে। ক্যাপসিক্যামে মরিচের মতো গন্ধ থাকলেও খাওয়ার সময় ঝাল ধরে না।