মেহেরপুরের ৭০ ইটভাটায় অবাধে পুড়ছে কাঠ

মাজেদুল হক মানিক: মেহেরপুর জেলার ইটভাটাগুলোতে অবাধে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। প্রশাসনিক পদক্ষেপ না থাকায় ইটভাটা মালিকরা আইনের তোয়াক্কা করছেন না। ফলে বিপর্যয়ের মুখে পরিবেশ।
জানা গেছে, মেহেরপুর জেলায় শতাধিক ইটভাটা রযেছে। এর মধ্যে ৭০টির মতো ফিক্সড চিমনী ইটভাটায় এবার ইট পোড়ানো হচ্ছে। এসব ইটভাটার মধ্যে পরিবেশ বান্ধব হিসেবে পরিচিত দুটি জিকজাক ইটভাটা রয়েছে। এর একটির পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র থাকলেও অন্যটি নবায়ন করা হয়নি। ফলে পরিবেশ অধিদফতরের অনুমোদন ছাড়ায় এসব ইটভাটায় ইট পোড়ানো হচ্ছে। সবগুলো ইটভাটায় কয়লার পরিবর্তে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। দিন-রাত চব্বিশ ঘণ্টা প্রকাশ্যেই জ্বলছে কাঠের আগুন। অপরদিকে প্রশাসনের কঠোরতায় ৪০টির মতো ব্যারেল চিমনী ইটভাটায় এবার ইট পোড়াতে দেয়া হয়নি। ফলে এ ইটভাটাগুলোর আগুন থেকে রক্ষা পেয়েছে গাছপালা।
পরিবেশ নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সুবাহ সামাজিক উন্নয়ন সংস্থার উপদেষ্টা রফিকুল আলম বলেন, শতাধিক ইটভাটায় প্রতি মৌসুমে ৯০ লাখ মণের উপরে কাঠ পোড়ানো হয়। দেশের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের কাঠ ও স্থানীয়ভাবে সরবরাহকৃত কাঠ এসব ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। ইটভাটার চাহিদা মেটানোর জন্য অবাধে গাছপালা কাটা হয়। ইটভাটার নির্গত ধোয়া যুক্ত হচ্ছে বায়ুম-ল। অপরদিকে গাছপালা উজাড় হওয়ায় পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় হচ্ছে। এখনই বন্ধ করা না গেলে সবাইকে বড় ধরনের খেসারত দিতে হবে। ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইনে (১৯৮৯ ও ২০০১) উল্লেখ আছে আবাদি জমিতে কোনো ইটভাটা তৈরি করা যাবে না ফিক্সড চিমনি ব্যবহার করতে হবে। এছাড়াও কাঠ পোড়ানো যাবে না।
চিকিৎসকরা বলছেন, ইটভাটায় নির্গত কালো ধোয়ায় মানুষের শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, ক্যান্সারসহ নানা রোগের সৃষ্টি করে। কার্বণ-ডাইঅক্সাইড ফসল ও পরিবেশ নষ্ট হয়।
পরিবেশ অধিদফতর কুষ্টিয়া উপপরিচালক মোহাম্মদ আতাউর রহমান বলেন, মেহেরপুর জেলায় দুটা জিকজাক ভাটার পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র থাকলেও হালনাগাদ আছে একটির। বর্তমানে ১২০ ফিট চিমনিরও কোনো অনুমোদন নেই। ইটভাটাগুলোতে কাঠ পোড়নোর বিরুদ্ধে আমরা দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
মেহেরপুর জেলা প্রশাসক আতাউল গনি বলেন, টিনের চিমনি ইটভাটা বন্ধের বড় চ্যালেঞ্জে প্রশাসন সফল হয়েছে। এখন ফিক্সড চিমনির ইটভাটাগুলোতে কাঠ পোড়ানো বন্ধ করা হবে।