স্টাফ রিপোর্টার: সরকারি চাকরি দেয়ার নামে মোটা অংকের টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে চুয়াডাঙ্গায় ভুয়া সেনাবাহিনীর মেজর পরিচয়কারী এক প্রতারককে আটক করেছে পুলিশ। এসময় তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা বাসস্ট্যান্ড থেকে তাকে আটক করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। আটককৃত শাহ জামাল মিন্টু (৩৫) পঞ্চগড় জেলার আটুয়ারী এলাকার মৃত আব্দুল হাকিমের ছেলে। ভুক্তভোগীরা হলেন জেলার দামুড়হুদা উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলামের দুই ছেলে বাদশা (১৬) ও হাকিম (১৮)।
গোয়েন্দা পুলিশসূত্রে জানা যায়, ফোনের মাধ্যমে শাহ জামাল মিঠুর সঙ্গে তাদের যোগাযোগ হয়। এর আগেও তাদের বাড়িতে আসা-যাওয়া ছিলো মিঠুর। গত বুধবার শাহ জামাল মিঠু উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামে রফিকুল ইসলামের বাড়িতে যান। এসময় তার দুই ছেলে বাদশা ও হাকিমকে চাকরি দেয়ার কথা বলে শাহ জামাল মিঠু তাদের কাছ থেকে ৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা নেন। গোপনে খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা গোয়েন্দা পুলিশের ইন্সপেক্টর ইব্রাহীম আলীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ দর্শনা বাসস্ট্যান্ড থেকে তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে প্রতারণার কথা স্বীকার করে। দুপুরে শাহ জামাল মিঠুর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে দামুড়হুদা মডেল থানায় মামলা করা হয়েছে।
রফিকুল ইসলাম জানান, বাদশা ও হাকিম দুই ভাই পড়াশোনা করার ফাঁকে মাস ছয়েক আগে তাদের পরিচয় হয় প্রতারক শাহ জাহানের সাথে। সে সময় ওই প্রতারক দুই ভাইকে সরকারি চাকরি দেয়ার লোভ দেখায়। এজন্য মোটা অংকের টাকা দাবি করেন। বাদশাকে মৎস্য অধিদফতরে এমএলএসএস ও হাকিম আলীকে স্বাস্থ্য বিভাগে কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরি দেয়ার নাম করে শাহ জামাল মিন্টু। তার কথা শুনে গ্রামের চাষের জমি, বাড়ির গাড়ি বিক্রি করে আগে ৭ লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়েছি। আজ (গতকাল বৃহস্পতিবার) ৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা জোগাড় করে তার হাতে তুলে দেয়া হয়। আমাদেরকে নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার উদ্দেশে বের হয়ে দর্শনায় এসে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। সাথে আমার দুই ছেলেসহ আমাকেও আটক করে।
চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম জানান, ভুয়া সেনাবাহিনীর মেজর পরিচয়কারী এক প্রতারক চাকরি প্রত্যাশী ওই দুই ছাত্রকে নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার উদ্দেশে দর্শনা বাজারে অবস্থান করছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা কৌশলে দর্শনা বাজার থেকে টাকাসহ ওই প্রতারক সদস্যকে আটক করে। পুলিশ সুপার আরও জানান, শাহ জামাল বিভিন্ন সময়ে চাকরি দেয়ার নাম করে চুয়াডাঙ্গাসহ বিভিন্ন এলাকায় ভুয়া সেনাবাহিনীর মেজর পরিচয়ে প্রতারণা করে আসছিলো। প্রকৃত পক্ষে সে সেনাবাহিনীর চাকরিচ্যুত একজন সৈনিক। তার মানি ব্যাগ থেকে দুটি দৈনিক পত্রিকার পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়। এছাড়া দামুড়হুদা উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম ও তার দুই ছেলে বাদশা মিয়া ও হাকিম আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসা হয়। আটককৃত শাহ জামাল মিন্টুর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।