বিনা রসিদে অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের অভিযোগ

গাংনীতে হাট-বাজার ইজারাদারদের দৌরাত্ম চরমে

স্টাফ রিপোর্টার: গাংনীতে নিয়মনীতি অমান্য করে বিনা রসিদে অতিরিক্ত খাজনা আদায় করার অভিযোগ উঠেছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে হাট-বাজার ইজারাদারদের দৌরাত্ম চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের বিরুদ্ধেও। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রশাসন সব জেনেও না জানার ভাব করে থাকে।
এদিকে অতিরিক্ত খাজনার কারণে হাট বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা খাজনা পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছেন। ফলে বিক্রেতারা বাধ্য হয়ে বেশি দামে তাদের পণ্য বিক্রি করছেন। অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের কারণে তাই বাজারের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্য ক্রেতা সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। এতে ভোক্তা অধিকার আইন লঙ্ঘিত হলেও এক্ষেত্রে প্রশাসনের কোন নজরদারি নেই বলে অভিযোগ ব্যবসায়ী ও ক্রেতা সাধারণের।
গাংনীর ঐতিহ্যবাহী হাট-বাজার সপ্তাহে ২দিন শনিবার ও মঙ্গলবার বসে। এই হাটে লক্ষাধিক নারী-পুরুষ তাদের চাহিদানুযায়ী বিভিন্ন পণ্য কেনা কাটা করে থাকেন। বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে শ শ বিক্রেতা বাজারের নির্ধারিত জায়গায় বসে। সরেজমিনে হাট বাজার ঘুরে জানা গেছে, সবজি বাজারের ছোট-বড় বিক্রেতারা জানান, রসিদ ছাড়াই হাট কমিটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা করে খাজনা আদায় করে থাকে। পাশাপাশি পৌরসভার নিয়োগকৃত সুইপারদের ৪ টাকা থেকে ১০ টাকা দিতে হয়। এছাড়াও ছামাদ-সোবহান হোটেলের পার্শ্বে মালিকানা জায়গার নাম করে ৫০/৬০ জন ব্যবসায়ীর নিকট থেকে জনপ্রতি ৩০ টাকা করে খাজনা আদায় করা হয়ে থাকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিক্রেতারা জানায়, ‘আমরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। অল্প কিছু পণ্য বিক্রি করার জন্য নিয়ে বসলে অতিরিক্ত খাজনা সর্বমোট ৯০ থেকে ৯৫ টাকা দিতে হয়। এছাড়া কাঁচাবাজার খুচরা বিক্রেতারা আরও জানান, আমরা কাঁচাবাজার থেকে মাল ক্রয় করলে সেখানেও ১০০ টাকা করে খাজনা নেয়া হয়। বাজারের পার্শ্বে পাখিভ্যান বা আলমসাধু গাড়ি রাখলে সেখানেও গাড়ি প্রতি ৪০ টাকা করে খাজনা নেয়া হয়।
একইভাবে মাছ বিক্রেতাদের নিকট থেকে ব্যবসায়ী প্রতি ১১০ থেকে ১২০ টাকা খাজনা, পৌর কর ২০-৩০ টাকা, পানি সরবরাহের জন্য ২০ টাকা এবং সুইপার কর বাবদ দিতে হয় ১০ টাকা করে আদায় করা হয়। মুরগী বিক্রেতারা জানান, আমাদের ব্যবসায়ী প্রতি ১০০ টাকা, দোকান কর বাবদ ২০ টাকা, পৌর ট্যাক্স বাবদ ২০ টাকা, সুইপার কর বাবদ ২০ টাকা করে সর্বমোট ১৬০ টাকা খাজনা দিতে হয়।
কয়েকজন মাংস বিক্রেতা বলেন, ‘মাংসের চট প্রতি খাজনা ১৫০ টাকা, পৌর কর ৪০ টাকা, পানি সরবরাহ বাবদ ৩০ টাকা এবং সুইপার বাবদ ৩০ টাকা করে সর্বমোট ২৫০ টাকা দিতে হয়। তাই আমরা কম দামে মাংস বিক্রি করতে পারি না। এ ব্যাপারে বাজার ইজারাদার হাফিজুর রহমানের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে মোবাইলফোন খোলা পাওয়া যাইনি।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমান জানান, হাট-বাজার ইজারা সংক্রান্ত সরকারি নীতিমালার বাইরে কোনো ইজারাদার অতিরিক্ত খাজনা আদায় করতে পারেন না। অতিরিক্ত হারে খাজনা আদায় করা হলে সরেজমিনে তদন্ত করে ইজারাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়াও হাট ইজারাদারকে অবহিত করা হয়েছে যে, রসিদ ছাড়া কোনো রকম খাজনা আদায় করা আইনত দ-নীয় অপরাধ।

Leave a comment