আসন্ন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে তারকাবহুল একটি প্যানেল নিয়ে নির্বাচন করার কথা থাকলেও শেষ পযর্ন্ত স্বতন্ত্রপ্রার্থী হয়ে একাই লড়ছেন মৌসুমী। নানা কারণে প্যানেল গঠন করা সম্ভব হয়নি প্রিয়দর্শিনী এ নায়িকার। তবে প্যানেলে না থাকলেও মৌসুমীর এ একা লড়াইয়ে শুভ কামনা জানিয়ছেন ঢাকাই ছবির জনপ্রিয় সব তারকাশিল্পীরা। জানিয়েছেন প্যানেলে না থাকলেও সঙ্গে আছেন মৌসুমীর।
বেশ সাহসী পদক্ষেপ: ববিতা
নিরপেক্ষভাবে কিছু কথা বলতে চাই। শিল্পী সমিতির সব সদস্যই আমার প্রিয়। তবে এবারের শিল্পী সমিতির নির্বাচনে প্রার্থী মৌসুমীকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে সভাপতি পদে দাঁড়িয়েছে সে। এটা বেশ সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে বলতে হয়। একাই লড়ছে। আসলে বর্তমান ইন্ডাস্ট্রির জন্য এমন সাহসী নেত্রীই আমাদের দরকার।
এবারের নির্বাচন নিয়ে এখন পর্যন্ত যে আলোচনা আর সমালোচনা হচ্ছে তা নিয়ে বেশ সংকটেই আছি, বলতে হয়। আমি চাই না শিল্পী সমিতির নির্বাচন নিয়ে বাজে পরিস্থিতির ঘটনা ঘটুক এফডিসিতে। আমার মনে হয় নির্বাচন সুষ্ঠ ও সুন্দর করার জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইলিয়াস কাঞ্চনের ব্যাপক ভূমিকা রাখতে হবে। প্রতিটি ক্ষেত্রে স্বচ্ছ্বতা যাতে থাকে সেই বিষয়ে চিন্তা করা উচিত। আমি মনে করি নির্বাচন এবং ভোট গননার সময় সিসি টিভির আওতায় সব রাখলে সবাই জানতে ও বুঝতে পারবেন কি হচ্ছে আর কী না হচ্ছে।
তার জন্য শুভকামনা: রিয়াজ
নিজের শারীরিক সমস্যার কারণে নির্বাচনে সময় দেওয়া কঠিন হবে আমার জন্য। তাই এবার নির্বাচনে নেই। তবে একটা কথা মানছি, এখনকার শিল্পী সমিতির পরিবেশ ভয়াবহ রকমের দূষিত হয়ে গেছে। যে অশ্নীলতার কারণে সিনেমা ছেড়ে শিল্পীদের জন্য কাজ করতে সমিতিতে এসেছিলাম, এখানে এসে সেই একই রকম দূষিত পরিবেশ দেখতে পাচ্ছি। এই সময়ে মৌসুমীর মতো অভিনেত্রী নির্বাচন করছেন। একাই করছেন, এটা সাহসী পদক্ষেপ। তার প্রতি শুভ কামনা থাকবে। তার মতো তারকা সমিতির নেতৃত্বে আসা দরকার। তবে একটা কথা বলে রাখি, মৌসুমীর মতো তারকারা যদি শিল্পী সমিতির নেতৃত্বে না আসে, তাহলে এ সমিতির পরিবেশ আরও খারাপের দিকে যাবে, যা একজন চলচ্চিত্র শিল্পী হিসেবে, ও সমিতির সদস্য হিসেবে আমি কখনোই চাইব না। আমি আছি, তার সঙ্গে। কারণ আমি চাই মৌসুমী নেতৃত্বে আসুক। তার জন্য শুভকামনা।
আমরা সবাই আছি: ফেরদৌস
শিল্পী সমিতির নির্বাচনে আমারও প্রার্থী হওয়ার কথা ছিল। ইচ্ছাও ছিল। সেটা অবশ্যই মৌসুমীর প্যানেল থেকে। কিন্তু আসা হয়নি। কারণ, এ নির্বাচনের তারিখ নিয়ে সমস্যা ছিল। যে মিটিংয়ে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়, ওই মিটিংয়ে আমি বলেছিলাম নির্বাচন ১৮ অক্টোবর থেকে কয়েক দিন পিছিয়ে দিতে। কিন্তু সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ১২-১৩ জন মিলে পেছালেন না। পরে ঠিকই পিছিয়ে ২৫ অক্টোবর করা হয়েছে। তবে এবারের নির্বাচনে মৌসুমীর ওপর আমার পূর্ণ সমর্থন। তিনি আমার খুব কাছের বন্ধু। এর বাইরেও শিল্পী সমিতির মতো এত বড় একটা সংগঠনের নেতৃত্বে তো মৌসুমীর মতো তারকাশিল্পীরই আসা উচিত। তার মতো বড় মাপের অভিনেত্রী নির্বাচনে সভাপতি পদে লড়ছেন- এটাই তো আনন্দের খবর। বন্ধুর পাশে ছিলাম, আছি, থাকব। আর আমি মনে করি মৌসুমী নির্বাচনে পাশ করলে আমাদের শিল্পীদের জন্য অনেক ভালো হবে। মৌসুমীর জয় শুধু তার নিজের জন্য নয়, আমাদের সবার জন্যই ভালো হবে।
মৌসুমীর জয় তার নিজের জন্য নয়:পপি
মৌসুমী আপার প্রতি আমার শুভ কামনা থাকবে। নেতৃত্বে মৌসুমী এলে অবশ্যই সমিতি বর্তমান অবস্থা থেকে ভালো পরিবেশের দিকে যাবে। একটা বিষয় খুবই খারাপ লাগছে। সেটা হচ্ছে, এবার কেউ কেউ প্যানেল প্রস্তুত করেই নিজের মতো করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে দিয়েছেন। অন্যদের প্যানেল গোছানোর সময়ই দেওয়া হয়নি। দিলে হয়তো শিল্পী সমিতির নির্বাচন অন্যরকম হতো। তারকাবহুল আরেকটি প্যানেল পেতাম আমরা। সেটা হলো না। কিছু মানুষের নোংরামির কারণে নির্বাচন করার ইচ্ছা হয়নি। শিল্পী সমিতি ঘিরে একটি অসৎ চক্র তৈরি হয়েছে। মৌসুমী আপা এলে এই চক্র ভেঙে পড়বে। এখন যারা ক্ষমতায় আছেন তারা এককভাবে নিজের সমিতি মনে করে চলছেন, সেটা অন্যায়। এই অন্যায় মেনে নেওয়া যায় না। তাই আশা করব, মৌসুমী আপা জয়ী হবে। কারণ সবাই আছি তার পাশে। আমার বিশ্বাস মৌসুমীর তার একা যুদ্ধে জয়ী হবেই। এই জয় তার নিজের জন্য নয়। আমাদের সবার জন্য।