ইরাকের বন্দিদশা থেকে মুজিবনগরের সাইফুলের সাত মাস পর মুক্তি

মুজিবনগর প্রতিনিধি: দীর্ঘ সাত মাস পর ইরাকের বন্দিশালা থেকে ফিরে এসেছেন মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালী গ্রামের সাইফুল ইসলাম (৩৩)। নতুন কোম্পানিতে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তাকে কয়েকজন বাংলাদেশি অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে। এর সাথে জড়িত একজনকে ফরিদপুর থেকে গ্রেফতার করেছে মুজিবনগর থানা পুলিশ।
মুজিবনগর থানা ও সাইফুলের পারিবারিকসূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে ১৭ জুলাই ঢাকার ইউনিক কোম্পানির মাধ্যমে দুই বছর মেয়াদী চুক্তিতে ইরাকে যান সাইফুল ইসলাম। চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি নতুন কোম্পানির কাজের প্রলোভনে দেখায় জনৈক আক্কাস আলী ও সুমন হোসেন নামের ইরাক প্রবাসী দুই বাংলাদেশি। তারা দুজনে সাইফুলকে অপহরণ করে একটি ঘরের মধ্যে আটকে রেখে নির্যাতন করে। সেইসাথে তার মায়ের কাছে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে আক্কাস ও সুমন। ছেলের মুক্তির জন্য ভিটেমাটি বিক্রি করে মা সুফিয়া খাতুন ৬৫ হাজার টাকা পরিশোধ করেন আক্কাস ও সুমনের দেয়া কয়েকটি বিকাশ নম্বরে। আরও টাকা দাবি করলে নিরূপায় হয়ে মুজিবনগর থানায় সাইফুলের মা সুফিয়া খাতুন বাদি হয়ে চলতি বছরের পয়লা এপ্রিল একটি মামলা দায়ের করেন।
সুফিয়া খাতুনের মামলায় বর্ণিত বিকাশ নম্বরের সূত্র ধরে মুজিবনগর থানা ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল হাশেমের নির্দেশে মুজিবনগর থানা পুলিশের সফল অভিযানে চলতি মাসের প্রথম দিকে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার টুপাইল গ্রামের আব্দুল ব্যাপারীকে গ্রেফতার করে। সুফিয়ার কাছ থেকে মুক্তিপণ নেয়া সেই বিকাশ অ্যাকাউন্টের ৫টি মোবাইল সিম ও সেট উদ্ধার করে পুলিশ। যা মামলার আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে। আদালতে অপরাধ স্বীকার করে জবানবন্দি দেয় অভিযুক্ত আব্দুল ব্যাপারী।
এদিকে অপহৃত সাইফুল গত মাসের শেষের দিকে অপহরণকারীদের কাছ থেকে কৌশলে পালিয়ে সেদেশের পুলিশের কাছে আশ্রয় নেয়। ইরাক ও বাংলাদেশ পুলিশের সহযোগিতায় গত ১৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার রাতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায় সাইফুল। সংবাদ পেয়ে মুজিবনগর থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে মুজিবনগর নিয়ে আসে।
এ বিষয়ে মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল হাশেম জানান, অপহৃত সাইফুলের কাছ থেকে অপহরণের বিষয়ে অনেক তথ্য পাওয়া গেছে। তার মায়ের দায়ের করা মামলার ভিকটিম হিসেবে গতকাল বুধবার তাকে মেহেরপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে। বিজ্ঞ আদালত তার জবানবন্দি নিয়ে পরিবারের জিম্মায় দেন।