স্টাফ রিপোর্টার: সরকারি চাকরিজীবীদের গৃহঋণের খসড়া নীতিমালা চূড়ান্ত করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। তাতে ঢাকা মহানগর, বিভাগীয় শহর, জেলা শহর ও অন্যান্য এলাকার জন্য আলাদা আলাদা ঋণসীমা তুলে নিয়ে সারাদেশের জন্য একই ঋণসীমা নির্ধারণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। একই সঙ্গে উপসচিব থেকে সচিব পদমর্যাদা পর্যন্ত জাতীয় বেতন স্কেলের পঞ্চম গ্রেড থেকে প্রথম গ্রেডভুক্ত কর্মকর্তাদের জন্য সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকা গৃহঋণ অনুমোদন করা হয়েছে। তবে সর্বনিম্ন ১৮তম গ্রেড থেকে ২০তম গ্রেডের জন্য প্রস্তাবিত গৃহঋণ ৩৫ লাখ টাকা থেকে কমিয়ে ৩০ লাখ টাকা নির্ধারণের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার অর্থবিভাগের সচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় খসড়া নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে। সভার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানতে চাইলে অর্থসচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকা গৃহঋণ নির্ধারণ করে খসড়া নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এখন এটি অর্থমন্ত্রীর সম্মতির পর মন্ত্রিপরিষদের সভায় অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করা হবে।
বৈঠকে উপস্থিত এক কর্মকর্তা জানান, খসড়া নীতিমালায় ঢাকাসহ বিভাগীয় সদর এলাকায় গৃহ নির্মাণ ও ফ্ল্যাট ক্রয়, জেলা সদর ও অন্যান্য এলাকায় গৃহ নির্মাণ ও ফ্ল্যাট ক্রয়ের জন্য ঋণের পরিমাণ তিন রকম প্রস্তাব করা হয়েছিলো। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সারাদেশের যেখানেই কোনো চাকরিজীবী গৃহ নির্মাণ বা ফ্ল্যাট কিনুন না কেন, ঋণের পরিমাণ একই হবে। ফ্ল্যাট কেনা বা নিজস্ব জমিতে বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে ঋণ প্রদানের জন্য ডেট ইক্যুইটি রেশিও হবে ৯০ : ১০। অর্থাৎ, ফ্ল্যাট কেনা বা নিজস্ব জমিতে বাড়ি নির্মাণের জন্য কেউ নিজস্ব উদ্যোগে ১০ টাকা খরচ করলে তিনি ৯০ টাকা ঋণ পাবেন।
এ ছাড়া চূড়ান্ত হওয়া খসড়া নীতিমালা অনুযায়ী, ঋণের সুদ হার হবে ১০ শতাংশ। এই সুদের মধ্যে ৫ শতাংশ হারে ভর্তুকি দেবে সরকার। বাকি ৫ শতাংশ সুদ ঋণগ্রহীতা পরিশোধ করবেন। ঋণগ্রহীতা ২০ বছরে এই ঋণ মাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করবেন। চাকরি স্থায়ী হওয়ার পাঁচ বছর পর থেকে ৫৮ বছর বয়স পর্যন্ত এ ঋণ নেয়া যাবে। সরকারের আওতাধীন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদফতর, পরিদফতর ও কার্যালয়গুলোতে স্থায়ী পদের বিপরীতে নিয়োগপ্রাপ্ত বেসামরিক কর্মচারীরা কেবল এ সুবিধা পাবেন। সামরিক, রাষ্ট্রায়ত্ত ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি, পৃথক বা বিশেষ আইন দ্বারা সৃষ্ট প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত কর্মচারীরা এ নীতিমালার আওতাভুক্ত হবেন না। এ হিসেবে সরকারের প্রায় ১২ লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারী গৃহ নির্মাণ ঋণ সুবিধা পাবেন।