আলমডাঙ্গার খাসকররা বাজারে ব্যবসায়ীদের সমাবেশ ও মানববন্ধন

স্টাফ রিপোর্টার: আলমডাঙ্গার খাসকররা বাজারে দিনব্যাপী দোকানপাট বন্ধ রেখে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন ব্যবসায়ীরা। গতকাল শনিবার বিকেলে বাজারের বটতলায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা। বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে খাজনা আদায়ের সিদ্ধান্ত নেয়ায় ব্যবসায়ীরা এ কর্মসূচির আয়োজন করেন। পরে সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় ব্যবসায়ীরা দোকানপাট খুলে পুনরায় ব্যবসা শুরু করেন।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, এ বছর খাসকররা বাজার ইজারা হয়নি। সেজন্য খাস কালেকশনের সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। গত শুক্রবার খাজনা আদায়ের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বাজারের ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে মাইকিং করা হয়। ব্যবসায়ীদের দাবি বাজারের সব দোকানই মালিকানা জমিতে রয়েছে। মালিকানা জমিতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থাকলে খাজনা দেয়ার প্রয়োজন হয় না। এ যাবৎ পর্যন্ত বাজারের দোকানদার কোনো খাজনা দেননি। হঠ্যাৎ করে মাইকে প্রচার করা হয় ‘এতদ্বারা খাসকররা বাজার সংলগ্ন সকল দোকানদার ভাই ও বাবাজিদের অবগত করা যাচ্ছে যে, প্রতি হাটবার তথা শনিবার ও মঙ্গলবার ১০ টাকা করে খাজনা প্রদান করিতে হইবে’ প্রচারে জেলা প্রশাসক চুয়াডাঙ্গা।’ এ ঘোষণার পর ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ জরুরিসভা ডেকে গতকাল শনিবার বাজারের দোকানপাট বন্ধ রেখে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
খাসকররা বাজার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, খাসকররা গ্রামের নান্নুকে দিয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের দোহাই দিয়ে খাসকররা হাট কমিটি যে অবৈধভাবে মাইকিং করেছেন মালিকানা দোকান ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রতি হাটবারে ১০ টাকা হারে খাজনা নেয়ার জন্য। আমরা এই অবৈধভাবে মাইকিং করার প্রতিবাদে খাসকররা হাট কমিটির বিচার চায়। তিনি আরও বলেন, বিচার না হলে আমরা আবারও আগামীতে কর্মসূচি দেবো। প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে একটি মহল বাজারে মাইকিং করে ব্যবসায়ীদের হয়রানি করছে। তাদেরকে চিহ্নিত করার জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করেছেন মিজানুর রহমান। তিনি আরও বলেন, গতকাল শনিবার খাসকররা বাজারের সাপ্তাহিক হাট। এদিন ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ রাখার কারণে ব্যবসায়ীদের হাজার হাজার টাকার লোকসান হয়েছে। আজ রোববার ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দর সাথে আলোচনা করে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে বাজার কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান জানান।
এ বিষয়ে খাসকররা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা রেজাউল হক জানান, যেহেতু খাসকররা হাটের ইজারা হয়নি। সে মোতাবেক খাসকালেকশনের সিদ্ধান্ত নেন উপজেলা প্রশাসন। আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সভাপতি করে সমন্বয় কমিটিও গঠিত হয়েছে। পয়লা বোশেখ শনিবার প্রথম খাসকালেকশন করা হয়। এরপর উপজেলা নির্বাহী অফিসের নিকট দাবি করা হয় হাটসংলগ্ন দোকানগুলোতে খাজনা আদায় করার জন্য। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করে খাজনা আদায়ের কথা জানান। গত মঙ্গলবার সমন্বয় কমিটির সদস্য আলমডাঙ্গা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কাজী খালেদুর রহমান অরুন, খাসকররা ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান রুন্নু, খাসকররা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলম সিদ্দিক, ইউপি সদস্য আসলাম হোসেন ও চম্পা খাতুন আলোচনা করে বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে খাজনা আদায়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আলোচনার এক পর্যায়ে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কাজী খালেদুর রহমান অরুন ব্যবসায়ীদেরকে জানানোর জন্য মাইকিং করতে বলেন। গত শুক্রবার খাসকররা ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান রুন্নুকে জানানো হলে তিনি বাজারে মাইকে প্রচারের ব্যবস্থা করেন বলে ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা জানান। তিনি আরও বলেন, মাইকে প্রচারের সময় ভুলবশত ‘আদেশক্রমে জেলা প্রশাসক’ বলা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে উপজেলা প্রশাসন হবে। তিনি আরও জানান, বিষয়টি জানাজানি হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার গত শুক্রবার রাতেই মোবাইলফোনে জানান ‘পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বাজারে আগে যে নিয়মে খাজনা আদায় করা হয়েছে সে নিয়মেই আদায় করা হবে।’