গাংনীর বামন্দি পশুহাটের খাস খাজনা আদায়ের সিদ্ধান্ত

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনীর বামন্দি-নিশিপুর পশুহাটের খাস খাজনা আদায় করতে যাচ্ছে উপজেলা প্রশাসন। আইনী জটিলতায় নতুন বছরে নিলাম সম্পন্ন হয়নি। ফলে আগামী পয়লা বোশেখ থেকে স্থানীয়ভাবে খাজনা আদায়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বেশ কয়েক বছর ধরে মিরপুরের হাট ব্যবসায়ী কামাল হোসেন বামন্দী-নিশিপুর পশুহাট ইজারা গ্রহণ করেন। এ হাট থেকে প্রতি বছর সরকারি কোষাগারে প্রায় কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়। আগামী বছরের জন্য (বাংলা ১৪২৫) ইজারা দেয়ার লক্ষে গেলো ৩১ জানুয়ারি বিজ্ঞপ্তি দেয় উপজেলা প্রশাসন। দরপত্র দাখিলের শেষ দিন ১৫ ফেব্রুয়ারি ৪৫ হাটের মধ্যে ৩২ হাটের দরপত্র নিলামে অংশ নেন আগ্রহী দরদাতাবৃন্দ। বামন্দী হাটের দরপত্রের ওপর আদালতের স্থিতাবস্থা ও বাকি ১২ হাটের কোনো দরপত্র জমা পড়ে না। দরপত্র জমা না পড়া হাটগুলো নিলামের জন্য পুনঃদরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়।
জানা গেছে, বামন্দী-নিশিপুর হাট ইজারা গ্রহণের জন্য গাংনীর আনারুল ইসলাম বাবু, নবীর উদ্দীন, মিনাপাড়ার সিরাজুল ইসলাম, বামন্দীর আমিরুল ইসলাম শেখ ও হোগলবাড়ীয়ার মনিরুজ্জামান আতু দরপত্র দাখিল করেন। কিন্তু বর্তমান হাট ইজারাদার মিরপুরের কামাল হোসেন উচ্চাদালতে একটি রিট আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত দরপত্র কার্যক্রমের স্থিতাবস্থার আদেশ দেন। ফলে দরপত্র উন্মুক্ত করা থেকে বিরত থাকে নিলাম বাস্তবায়ন কমিটি।
বর্তমান ইজারাদার কামাল হোসেন রিট আবেদনে আগামী বছরের জন্য হাট ইজারা পাওয়ার আবেদন করেন। চলতি বছরের ইজারা মূল্যের ওপর ১০ ভাগ বেশি অর্থ যুক্ত করে আগামী বছরের জন্য ইজারা প্রাপ্তির স্বপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন তিনি। এর প্রেক্ষিতে আদালত স্থিতিবস্থার আদেশে দিলেও সম্প্রতি তা প্রত্যাহার করেন আদালত। ফলে আগামী বছরের জন্য হাট ইাজারা প্রদান ও পয়লা বোশেখ থেকে কারা খাজনা আদায় করবে সে বিষয়টি বড় হয়ে দাঁড়ায় ইজারা বাস্তবায়ন কমিটির সামনে।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিষ্ণুপদ পাল বলেন, বিজ্ঞ আদালত স্থিতিবস্থার আদেশ প্রত্যাহার করেছেন। কিন্তু রিট আবেদন নিষ্পত্তি না হওয়ায় আগামী বছরের ইজারার বিষয়ে এখনই সিদ্ধান্ত নেয়া যাচ্ছে না। ইজারাদার কামাল হোসেন ৩০ চৈত্র পর্যন্ত খাজনা আদায় করতে পারবেন। পয়লা বোশেখ থেকে খাস খাজনা আদায়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সভাকক্ষে খাস আদায় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের সমন্বয়ে স্থানীয়দের মাধ্যমে হাটের খাজনা আদায় করা হবে। তবে চলতি বছরের ইজারা মূল্যের চেয়ে ১০ ভাগ বেশি অর্থ যুক্ত করে স্থানীয়দের কাছ থেকে অর্থ বুঝে নেবে উপজেলা প্রশাসন। খাস আদায় কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য রাইপুর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম সাকলায়েন ছেপুকে আহ্বায়ক করে সকল ইউপি চেয়ারম্যান, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও ভারপ্রাপ্ত মেয়রকে সদস্য মনোনীত করে একটি তদারকি কমিটি গঠন করা হয়েছে। যাতে সবকিছুই সরকারের অনুকুলে থাকে। খাস আদায় সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্যই কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান ইউএনও।