চুয়াডাঙ্গা তিতুদহের ১১ গ্রামের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র খালটি সংস্কারের অভাবে ভরাট ৩ হাজার বিঘা জমির ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা

?

বেগমপুর প্রতিনিধি : বর্ষা মরসুম এলেই পানিতে থৈ থৈ করে তিতুদহ ইউনিয়নের ১১ গ্রামের মাঠ। ধান চাষের উপযোগী এসব জমিতে প্রতিবছর কৃষকেরা করে থাকে বোর ধানের চাষ। ফলন্ত ধানের শীষ যখন বাতাসে দোল খায় তখন প্রান্তিক কৃষকের মুখে ফুটে ওঠে হাসি। কৃষক তার মনে বোনে স্বপ্নের বীজ। কিন্তু একটু ভারিবর্ষা হলেই কৃষকের সে স্বপ্ন এবং স্বাধ ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। স্থানীয়ভাবে দেখা দেয় খাদ্য ঘটতি। কারণ বৃষ্টির পানি নেমে যাওয়ার একমাত্র কামরিয়া বিল-পাকশিয়া ভায়া চিত্রা নদী খালটি সংস্কারের অভাবে ভরাট হয়ে গছে। ফলে ঈষাণ কোনে কাল মেঘ দেখলেই কেপে ওঠে কৃষকের হৃদপি-টি।
সরজেমিন ঘুরে দেখা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের গহেরপুর, বিত্তেরদাঁড়ি, বাটিকাডাঙ্গা, সুজায়েতপুর, সাড়াবাড়িয়া, ছিলন্দিপাড়া, গবরগাড়া, তিতুদহ, গোলাপনগর, তেঘরি, কলাগাছি, গড়াইটুপি, গোস্টবিহার ও খাসপাড়া গ্রাম মাঠের পানি এসে জমা হয় কামরিয়া বিলে। এ বিল থেকে ৩ হাজার ৪শ মিটার খাল ধরে চিত্রানদীতে পানি যায়। এছাড়াও কামরিয়া বিলে শুধু মাঠের পানিই নামে না পাকশিয়া, কুমরগাড়া জোল, গারদোয়াল জোল, বয়ারগাড়ি কলমি জোল, মধু বিল, কড়তলা, বাগমারা, চেচেড়ে গাড়ি, হাঁসগাড়ি, বক্সের খাল, মাধব গাড়ি, কুশগাড়ি ও কত্তের দোয়ার পানি এসে জমে এ বিলে। মাঠের এবং বিলের পানি যাবার জন্য প্রায় আড়াই কি.মি খাল সংস্কারের অভাবে ভরাট হয়ে গেছে। বর্তমানে কামরিয়ার বিলে কৃষকের প্রায় ৩ হাজার বিঘা জমিতে শীষ বের হওয়া বোরো ধান আছে। আগাম বর্ষার ঘনঘটা দেখে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে ধানচাষিরা। ভরাট হয়ে যাওয়া খালটি দ্রুত সংস্কার করা না হলে এ জমির ধান হয়তো ঘরে উঠবে না। এছাড়াও খালটি ভরাট থাকায় বছরের প্রায় ৫ মাস পানি জমে থাকে। ফলে কৃষকেরা শুধুমাত্র ধান চাষ ছাড়া অন্য ফসলের আবাদ করতে পারে না বললেই চলে। কামরিয়ার বিলে জমি থাকা আবজেল, খালেক, মজিবর, খেদের, বারেক, সাইফুল, জসিম, মিন্টু, মহব্বত, সুলতান, জমির, পল্টু, সোবারেক, তুহিনসহ অনেক চাষি জানান, চিত্রার সাথে সংযোগ খালটি জরুরি ভিত্তিতে খনন হওয়া দরকার। তা না হলে এবার যে আগাম বর্ষা শুরু হয়েছে বছরের খাবার সেই বোর ধান ঘরে উঠবে কি না বলতে পারছি না। এ ধান ঘরে না উঠলে আমাদের খাদ্য ঘাটতি দেখা দেবে। আর একবার বিলে পানি জমে গেলে তা বের হতে ৫-৬ মাস সময় লাগবে। এ বিলের জমিতে ধান চাষ করি প্রকৃতির ওপর ভরসা করে। বর্ষা কম হলে ভাগ্য ভালো। তা না হলে সব আশা এবং স্বপ্ন হয়ে যাবে মাটি।
কৃষি প্রধান এই বাংলাদেশে কৃষকের স্বপ্ন পূরণে বর্তমান সরকার নানাবিধ কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। যা পর্যায়ক্রমে করা হচ্ছে বাস্তবায়ন। তাই এলাকার কৃষকের করুণ আর্তি জরুরি ভিত্তিতে কামরিয়া-পাকশিয়া ভায়া চিত্রা সংযোগ খালটি খনন করে হাজার হাজার বিঘা জমির ধান রক্ষা করার। তাই খালটি খনন করতে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু দৃষ্টি কামনা করেছে এলাকার চাষিকূল।