সামান্য গৃহবধূ হয়েও গোপীবল্লভপুরের সীমা সেবামূলক কর্মে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন

বাড়াদী প্রতিনিধি: বাল্যবিয়ে ও যৌতুক প্রথার বিরুদ্ধে জনসচেতনা সৃষ্টি করে চলেছেন আলমডাঙ্গার প্রত্যন্ত পল্লি গোপীবল্লভপুরের গৃহবধূ ফাতেমা আক্তার সীমা।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার কুমারী ইউনিয়নের গোপীবল্লভপুরের প্রবাসী হাবিবুর রহমানের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার সীমা। এক সন্তানের জননী সীমা খাতুন সংসার সামলিয়েও অজপাড়াগাঁয়ে ছড়িয়ে চলেছেন সংস্কারের আলো। তিনি বেশ কয়েক বছর ধরে গ্রামে বাল্যবিয়ে ও যৌতুক প্রথার মতো ভয়ঙ্কর সামাজিক ব্যাধির বিরুদ্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টি করে চলেছেন। তার এ সেবামূলক কাজের কারণে গ্রামের বেশ কয়েকজন শিশু-কিশোরী বাল্যবিয়ের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। তাদের কয়েকজন এখন মাধ্যমিক পাস করে কলেজে পড়ছে। এছাড়া তিনি স্যানিটেশন নিয়ে কাজ করছেন।
ফাতেমা আক্তার সীমা জানান, বিয়ের পর তিনি যখন গোপীবল্লভপুর আসেন তখন গ্রামে কোনো স্বাস্থ্যসম্মত পাকা ল্যাট্রিন ছিলো না। তিনি সে সময় ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগিতা নিয়ে বেশকিছু পরিবারে স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন তৈরির ব্যবস্থা করেন। তার শ্বশুরের ৩টি পুকুর ছিলো। তিনি সেই ৩টি পুকুর পরিষ্কার করে তাতে আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তার দেখাদেখি পরে সীমার ভাসুরসহ ৩-৪ জন এখন ফেলে রাখা জলাশয়ে মাছ চাষ করছেন। তিনি গ্রামের হতদরিদ্রের পাশে দাঁড়াতে সাধ্যমতো চেষ্টা করেন। নিজের নামে এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ৬টি ছাগল ক্রয় করে ৬টি দরিদ্র পরিবারকে দিয়েছেন লালন-পালনের জন্য।
২০১৫ সাল থেকে তিনি ইসলামিক ফাউ-েশনের একটি স্কুলের শিক্ষক হিসেবে পরিচালনা করে আসছেন। বিদ্যালয়টিতে ৩০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। কিন্তু এই চাকরির পাশাপাশি তিনি আরও সামাজিক দায়িত্ব পালন করেন। তিনি গোপীবল্লভপুরসহ পার্শ্ববর্তী শ্যামপুর ও যাদবপুরের অপেক্ষাকৃত কম বুদ্ধিসম্পন্ন বেশ কয়েকজন শিশুর লেখাপড়ার দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নিয়েছেন।
ফাতেমা আক্তার সীমা বলেন, প্রথম প্রথম তার সামাজিক কর্মকা-কে অনেকেই বাঁকা চোখে দেখতেন। সব ভালো কাজের পেছনে স্বার্থ কী আছে তা খুঁজে বের করতে চেষ্টা করতেন। এখন আর কেউ নেতিবাচক দৃষ্টিতে তার কাজকে দেখেন না। আনসার ভিডিপির ইউনিয়ন লিডার হওয়ার কারণে তিনি সামাজিক দায়িত্ব পালনের মতো জনসেবামূলক কর্মকান্ডে নিজেকে সম্পৃক্ত করার সাহস ও মনবল পেয়েছেন বলে উল্লেখ করেন।