আলমডাঙ্গায় পুলিশের অব্যাহত অভিযানে আরও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের অব্যাহত অভিযানে আরও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার হয়েছে। গতকাল ২ মার্চ কুমারী ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনের রাস্তা থেকে মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়। মিরপুর উপজেলার মালিহাদের সঙ্ঘবদ্ধ মোটরসাইকেলচোর সিন্ডিকেটের কয়েক নেতার ওপর আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের চাপ অব্যাহত রাখায় গত দুদিনে ২টি মোটরসাইকেল বাধ্য হয়েই ফেরত দিয়েছে।
জানা গেছে, সম্প্রতি আলমডাঙ্গা শহর থেকে বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল দিনের বেলা চুরির ঘটনা ঘটেছে। ক্রমাগত মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় পুলিশ প্রশাসন উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। বাধ্য হয়ে পুলিশ সঙ্ঘবদ্ধ মোটরসাইকেলচোর সিন্ডিকেটের খোঁজে মাঠে নামে। এক পর্যায়ে পুলিশ নিশ্চিত হয় যে, কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার মালিহাদে একটি বড় মোটরসাইকেলচোর সিন্ডিকেট রয়েছে। ওই সিন্ডিকেটের সাথে মিরপুর উপজেলার বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী রাজনীতিকের ছত্রছায়ায় এসকল মোটরসাইকেলচোর সক্রিয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে প্রাপ্ত তথ্য নিশ্চিত হয়ে আলমডাঙ্গা থানার এসআই একরামুল ও এএসআই মোস্তফা সঙ্গীয় ফোর্সসহ গত শনিবার রাতে মিরপুর উপজেলার মালিহাদ গ্রামের মাতুব্বরের ছেলে উপজেলা ছাত্রলীগের (জাসদ) সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ইসলামের বাড়িতে অভিযান চালায়। প্রথমে তাকে ও পরে একই গ্রামের মামুন নামে আরেক জাসদ ছাত্রলীগ নেতাকে আটক করে আলমডাঙ্গা থানায় নিয়ে যায়। তাদের নিকট থেকে চোরাই মোটরসাইকেল না পেলেও পুলিশকে তারা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেন। প্রাপ্ততথ্যের ভিত্তিতে পরে পুলিশ মিরপুর উপজেলার বিরামপুরের আরোজ আলীর ছেলে ফরোজ আলীর বাড়িতে অভিযান চালায়। সে সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ফরোজ আলী পালিয়ে যায়। পুলিশ ফরোজ আলীসহ ওই চোর সিন্ডিকেটের আরও কয়েকজনকে আটক করতে লাগাতার অভিযান চালায়। এক পর্যায়ে বাধ্য হয়ে গতকাল ১ এপ্রিল বিকেলে একটি নম্বরপ্লেটহীন প্রায় নতুন একটি লাল রঙের হিরোহোন্ডা স্পিলিন্ডার মোটরসাইকেল আলমডাঙ্গা উপজেলার প্রাগপুর গ্রামের হাফিজের বাড়ির সামনে ব্যক্তি ফেলে রেখে যায়। তবে কে ফেলে রেখে গেছে তা জানা যায়নি। সংবাদ পেয়ে এসআই একরামুল ও এএসআই মোস্তফা মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করেন। পুলিশ জানতে পারে যে, নাজমুলের সিন্ডিকেটে আরও বেশ কয়েকটি চোরাই মোটরসাইকেল রয়েছে। ওই সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত মিরপুরের ইশেলমারীর লাভলু, আলমডাঙ্গার হাউসপুরের টুটুলসহ আলমডাঙ্গার বেশ কয়েকজন যুবক ও ইয়াবাব্যবসায়ী জড়িত বলে পুলিশের নিকট তথ্য রয়েছে বলে জানিয়েছে। একটি মোটরসাইকেল উদ্ধারের পর এ উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রাখে পুলিশ। এরই প্রেক্ষিতে গতকাল ২ মার্চ ওই সিন্ডিকেট নিজেদের ধরাছোঁয়ার বাইরে রেখে আরও একটি মোটরসাইকেল কুমারী ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে ফেলে রেখে যায়। এসআইজিয়া, এসআই একরামুল ও এএসআই মোস্তফা মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করেন।
এদিকে, উদ্ধারকৃত মোটরসাইকেল দুটি গতকালই মালিকদের হাতে তুলে দিয়েছে পুলিশ। কুমারী গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ও শিক্ষক রেজাউল মোস্তফা আশাফুদৌলা ও রেনেটা ফার্মাসিউটিক্যালের বিক্রয় প্রতিনিধি মানিকের হাতে তুলে দেয়া হয়।
মিরপুরের জাসদ ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল ও আমলা ইউনিয়নের মেম্বর মিটন গ্রামের উজ্জ্বল ক্ষ্যাপার সিন্ডিকেট থেকে আরও অন্ততঃ ৫টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করতে আরও বড় ধরণের পুলিশি অভিযান চালানোর ইঙ্গিত দিয়েছে পুলিশ। এই সিন্ডিকেটের সাথে জড়িতদের খোঁজে মাঠে ইতোমধ্যে নেমেছে পুলিশ। মোটরসাইকেলচোর সিন্ডিকেটের সাথে জড়িতদের ব্যাপারে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করে প্রমাণ হাতে নিয়েই তাদের আটক করতে চাই পুলিশ।