প্রশ্নফাঁস রোধ ও পরীক্ষায় নকলমুক্ত করতে জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ

আজ থেকে সারাদেশে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু : চুয়াডাঙ্গায় অংশ নিচ্ছে ৯ হাজার ৮৬ পরীক্ষার্থী

স্টাফ রিপোর্টার: উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা আজ সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে। সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে চলবে দুপুর ১টা পর্যন্ত। পরীক্ষার প্রথম দিনে সাধারণ ৮ বোর্ডের অধীনে বাংলা ১ম পত্র (আবশ্যিক), সহজ বাংলা ১ম পত্র, বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশের সংস্কৃতি ১ম পত্র, মাদরাসা বোর্ডের অধীনে কোরআন মাজিদ ও কারিগরি বোর্ডের অধীনে বাংলা ১ম পত্র (আবশ্যিক) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। লিখিত পরীক্ষা শেষ হবে ১৩ মে। ১৪ মে ব্যবহারিক পরীক্ষা শুরু হয়ে ২৩ মে শেষ হবে। এবারও শুরুতে বহুনির্বাচনী (এমসিকিউ) এবং পরে রচনামূলক অংশের পরীক্ষা হবে। ৩০ নম্বরের বহুনির্বাচনী পরীক্ষার সময় ৩০ মিনিট এবং ৭০ নম্বরের সৃজনশীল পরীক্ষার সময় আড়াই ঘণ্টা। পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে কেন্দ্রীয়ভাবে লটারির মাধ্যমে প্রশ্ন সেট নির্ধারণ করে সব বোর্ডে অভিন্ন প্রশ্নে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষার ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত থাকার জন্য মন্ত্রণালয়ের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে।
এবার সারাদেশে ১০টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১৩ লাখ ১১ হাজার ৪৫৭ পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে। এর মধ্যে সাধারণ ৮ বোর্ডে শিক্ষার্থী সংখ্যা ১০ লাখ ৯২ হাজার ৬০৭ জন। তার মধ্যে ছেলে ৫ লাখ ৫২ হাজার ৬১২ এবং মেয়ে ৫ লাখ ৩৯ হাজার ৯৯৫ জন। অন্যদিকে, মাদরাসা বোর্ডের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ১২৭ জন। যার মধ্যে মেয়ে ৪৪ হাজার ১৩৫, ছেলে ৫৫ হাজার ৯৯২ জন। এছাড়াও কারিগরি শিক্ষায় মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ১৭ হাজার ৭৫৪।
চুয়াডাঙ্গায় এবার ২০টি কেন্দ্রে এইসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় মোট ৯ হাজার ৮৬ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে। এরমধ্যে চার উপজেলার ১১টি কেন্দ্রে এইসএসসি ৭ হাজার ২শ ৬৭ জন, সদর উপজেলার ১টি কেন্দ্রে এইসএসসি (ভোকেশনাল) ১শ’ ৬০ জন এবং চার উপজেলার ৫টি কেন্দ্রে এইসএসসি (ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা) ১ হাজার ২শ’ ৬৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবে। এছাড়া চুয়াডাঙ্গা সদর, আলমডাঙ্গা ও জীবননগর উপজেলার ওই তিন উপজেলার ৩টি কেন্দ্রে আলিম থেকে ৩৯৫ জন শিক্ষার্থী অংশ নেবে।
এর আগে গত ১৪ মার্চ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রস্তুতিমূলকসভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় প্রত্যেক পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৪৪ ধারা জারি করা হবে। পরীক্ষা কেন্দ্রসমূহে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও চিকিৎসক নিয়োগ করা হবে। পরীক্ষা কক্ষে পরিদর্শকদেরকে বোরকা পরিহিত মেয়েদের সঙ্গে থাকা প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ডের ছবির সাথে মুখমন্ডল মিলিয়ে দেখার জন্য কেন্দ্র সচিবকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে কেন্দ্রে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না। পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল ফোন কোনক্রমেই আনা যাবে না। কোন পরীক্ষার্থীর কাছে মোবাইল ফোন পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এইচএসসি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আলোচনাসভা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) সাথে ভিডিও কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকার রোববার সকালে জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক পরিমল সিংহ’র সভাপতিত্বে এ আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিনয় কুমার চাকী, সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ওয়ালিউর রহমান প্রমুখ।
এ সময় জেলা প্রশাসক পরিমল সিংহ বলেন, পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষে পরীক্ষার হলে কোনো ধরণের নেতা প্রবেশ করতে পারবে না। তিনি বলেন, সে যে ধরণের নেতাই হোকনা কেনো পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে হলে প্রবেশ করতে পারবে না। ভিডিও কনফারেন্সে জেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ওসিদের তিনি এ নিদের্শনা দেন। একই সাথে তিনি পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে কোচিং সেন্টার খোলা না রাখার ব্যাপারে হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন।