ভাতের সাথে বিষ মিশিয়ে স্কুলছাত্রীকে হত্যাচেষ্টা

আলমডাঙ্গার মাজহাদ গ্রামে সৎমায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার: আলমডাঙ্গা মাজহাদ গ্রামে ভাতের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে এক স্কুলছাত্রীকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন তার সৎমা। গতকাল শনিবার উপজেলার খাদিমপুর ইউনিয়নের মাজহাদ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্কুলছাত্রী আঁখি খাতুন গ্রামের আবদুল্লাহর মেয়ে এবং নীলমণিগঞ্জ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে সৎমা বিষ খাওয়ানোর বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
এলাকাসূত্রে জানা গেছে, আঁখি খাতুনের বয়স যখন দু’বছর তখন আঁখির মা শেফালী খাতুন বিষপানে আত্মহত্যা করেন। সেই থেকে আঁখি চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামে তার খালা রূপালী খাতুনের কাছে মানুষ হয়। মাস চারেক আগে পিতা আবদুল্লাহ আঁখিকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন। আঁখির পর শুরু হয় নির্যাতন। কথায় কথায় তার সৎমা মেরিনা খাতুন অত্যাচার করতেন। ঠিকমতো খেতে দিতেন না। গতকাল শনিবার বেলা ২টার দিকে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পর ভাত খায় আঁখি। কিন্তু আগে থেকেই ভাতের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খেতে দেন সৎমা মেরিনা খাতুন। খাওয়ার কিছুক্ষণ পর অসুস্থ হয়ে পড়ে আঁখি। ছটফট করতে থাকে। এক পর্যায়ে সে তার দাদি আমেনা বেগমকে বিষয়টি জানায়। প্রতিবেশীরা উদ্ধার করে আঁখিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডা. নুরুন্নাহার খানম জানান, তার পেটে থাকা বিষ ওয়াশ করা হয়েছে। তবে বিষ খাওয়ানোর কথা প্রতিবেশীদের কাছে অস্বীকার করেছেন সৎমা মেরিনা।
একটি সূত্র জানিয়েছে, বিষয়টি যেন কেউ জানতে না পারে বারবার শাসানো হয় আঁখিকে। বলা হয় এসব কেউ জানলে তোর বিয়ে হবে না। লোকে খারাপ বলবে। আঁখির খালা রূপালী জানান, গত বৃহস্পতিবারও আঁখিকে চরম নির্যাতন করেছেন তার সৎমা। এখনও সে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। থুতনিতে ফোলা রয়েছে এবং সামনের দুটো দাঁত নড়ে গেছে। সংসার থেকে আঁখিকে উৎখাত করার জন্যই নির্যাতন করা হতো আঁখিকে। কিন্তু বাড়ি থেকে সরে না যাওয়ায় শেষমেশ আঁখিকে ভাতের সাথে বিষ খাইয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন সৎমা মেরিনা। প্রতিবেশীরা সৎমা মেরিনার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার দাবি তুললেও তার পক্ষে কথা বলছেন আঁখির পিতা আবদুল্লাহ। তিনি বলেছেন আঁখি নিজেই বিষ পান করেছে। এদিকে আঁখিকে ভাতের সাথে বিষ খাইয়ে হত্যাচেষ্টার কথা শুনে আঁখির কয়েকজন সহপাঠী সদর হাসপাতালে তাকে দেখতে আসে। ঘটনা শুনে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে।