স্টাফ রিপোর্টার: সামান্য জ্বর আর গায়ে ব্যথার চিকিৎসা নিতে ফার্মেসিতে গিয়ে জীবনটাই যেন বোঝা করে তুলেছেন নার্সারির মালি মহিদুল (৪২)। অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় অসহনীয় যন্ত্রণা ভোগ, কোনোরকম চেয়ে চিন্তে টাকা জোগিয়ে একের পর এক অপারেশনের পর মহিদুল মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে তার শরীরে অস্ত্রোপচার করা হলেও স্বাভাবিক হতে পারছেন না তিনি।
চুয়াডাঙ্গা জীবননগরের নতুন তেঁতুলিয়ার মৃত হযরত আলীর ছেলে মহিদুল। তার শয্যাপাশে বসে অঝরে কাঁধছেন অসহায় স্ত্রী। স্বামীকে নিয়ে আর কতো ভুগবো? চিকিৎসার টাকা কোথায় পাবো? এসব প্রশ্নের যেন জবাব মিলছে না তার। তিনি বলেছেন, জীবননগরেরই একটি নার্সারিতে মালি হিসেবে কাজ করতো মহিদুল। দেড় মাস আগে লোকটার হালকা জ্বর এলো। গা-টা ব্যথা ব্যথা। ওষুধ নেয়ার জন্য জীবননগর হাসপাতালের সামনের ওষুধের দোকানে গিয়ে আলী কদর ডাক্তারের নিকট শরীর খারাপের কথা বলে ওষুধ চায়। আলী কদর ডাক্তার কিছু খাওয়ার ওষুধ দেয়ার পাশাপাশি উরুতে ইনজেকশ দেয়। সেই যে যন্ত্রণা শুরু হলো, আর গেলো না। যেখানে ইনজেশন দিয়েছিলেন সেখানে পচন ধরেছে। ডা. শরিফউল্লাহ লিটন দেখে রাজশাহীতে নিতে বলেন। টাকা পাবো কোথায়? নেয়া হলো না। চুয়াডাঙ্গায় ডা. আবু বক্কর সিদ্দিকের নিকট নেয়া হলো। তিনি বললেন, ইম্প্যাক্টে নিতে। ইম্প্যাক্ট চাইলো ৪০ হাজার টাকা। মদিনা ক্লিনিকে ১০ হাজার টাকা নিয়ে অপারেশন করে দিলো। যন্ত্রণা গেলো না। ডাক্তার বললেন, আবার অপারেশন করতে হবে। এবার হাসপাতালেই ভর্তি করিয়েছি। আবারও ডা. আবু বক্কর সিদ্দিক অপারেশন করলেন। জানি না, লোকটা সুস্থ হয়ে উঠবে কি-না। ওই আলী কদর ডাক্তারের বিরুদ্ধে জীবননগর থানায় নালিশ করেও প্রতিকার মেলেনি। আদালতে নালিশ করা হয়েছে। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে তিনি বললেন, দেখি বিচার পাওয়া যায় কি-না?
চিকিৎসক বলেছেন, হাতুড়ে ডাক্তারের অদক্ষ হাতে ইনজেশন দেয়ার কারণেই মহিদুলকে ভুগতে হচ্ছে। চেষ্টা চলছে। এবার হয়তো সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরবেন মহিদুল।