স্টাফ রিপোর্টার: আরো বেশি গ্রাহকের কাছে সেবা পৌঁছানো ও ব্যাংকগুলোর শাখা পরিচালনা খরচ কমানোর লক্ষ্য নিয়ে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা চালুর নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এজেন্ট ব্যাংকিংঙের আওতায় কোনো শাখা খোলা ছাড়াই এজেন্ট নিয়োগের মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবা দেয়া যাবে গ্রাহককে। গত সোমবার নতুন এ সেবার সীমিত পরিসরের কথা জানিয়ে এজেন্ট ব্যাংকিং নীতিমালা প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগ।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, ছোট অঙ্কের আমানত জমা, ঋণের তথ্য সংগ্রহ, রেমিট্যান্স সংগ্রহ, বিভিন্ন ধরনের বিল পরিশোধ জাতীয় কিছু সেবা দিতে পারবে এজেন্টরা। এ বছরের শুরুতে এ সেবা চালুর উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
এজেন্ট ব্যাংকিং নীতিমালা অনুযায়ী, বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) বা মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি নিয়ন্ত্রিত ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান, সমবায় আইন-২০০১ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত সমবায় প্রতিষ্ঠান, ডাকঘর, কম্পানি আইন-১৯৯৪’র আওতায় নিবন্ধিত যেকোনো কোম্পানি, মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর এজেন্ট, ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্র, পল্লী ও শহুরে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় এজেন্ট হওয়ার মাধ্যমে ব্যাংকিং করতে পারবে।
এছাড়া তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর আর্থিক সেবা পরিচালনা করতে পারেন এমন শিক্ষিত ব্যক্তিও এজেন্ট হতে পারবেন। এজেন্টদের মাধ্যমে স্বল্প পরিমাণ টাকা নিজ হিসাবে জমা দেয়া ও তোলা যাবে। বিদেশ থেকে আসা রেমিট্যান্স সংগ্রহ করা যাবে। ছোট আকারের ঋণ বিতরণ ও ঋণের কিস্তি আদায়, বিদ্যুৎ ও অন্যান্য ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করা যাবে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, এজেন্টের কাছ থেকে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির নগদ অর্থ গ্রহণ করতে পারবেন গ্রাহক। এক হিসাব থেকে আরেক হিসাবে অর্থ স্থানান্তর করা যাবে। ব্যাংক হিসাবে কত টাকা জমা রয়েছে তা জানা যাবে।
এছাড়া এ ব্যাংকিঙের আওতায়, হিসাব খোলার প্রক্রিয়া সংক্রান্ত তথ্যাদি সংগ্রহ, ঋণের জন্য আবেদন, ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ডের আবেদন করারও সুযোগ পাবেন গ্রাহক। বীমার প্রিমিয়ামও জমা দেয়া যাবে এ সেবার মাধ্যমে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, এজেন্ট কোনো গ্রাহকের ব্যাংক হিসাব খুলতে পারবে না। ব্যাংক হিসাব খুলতে গ্রাহককে নিকটস্থ কোনো ব্যাংক শাখায় যেতে হবে। এজেন্ট কোনো চেক বই ইস্যু করতে পারবে না বা কোন ব্যাংক কার্ডও ইস্যু করতে পারবে না। এজেন্ট বিদেশি মুদ্রা সংক্রান্ত কোন লেনদেন করতে পারবে না। এজেন্টদের কাছ থেকে কোনো চেকও ভাঙানো যাবে না ।
এছাড়া গ্রাহকের কাছ থেকে সেবার মাসুল আদায় করতে পারবে না এজেন্ট। সংশ্লিষ্ট ব্যাংকই গ্রাহক সেবার বিপরীতে গৃহীত অর্থ থেকে এজেন্টদের কমিশন দেবে। এ বিষয়ে পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক দাশগুপ্ত অসীম কুমার বলেন, একটি ব্যাংকের শাখা খোলা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। এ কারণে সব জায়গায় ব্যাংকের শাখা খোলা সম্ভব নয়। কিন্তু ব্যাংক সেবা নেয়ার সামর্থ্য আছে এমন অনেক গ্রাহকই প্রত্যন্ত গ্রামে বসবাস করেন। তাদেরকে লক্ষ্য করেই এজেন্ট ব্যাংকিং চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।