দামুড়হুদা ও জীবননগর ইউএনও’র মোবাইল নম্বর ক্লোন করে প্রতারণা!

আন্দুলবাড়িয়া প্রতিনিধি: ঘড়ির কাটায় সকাল ১০ টা ১৩ মিনিট। ০১৭৮৩৩০৪০৫০ মোবাইল নম্বর থেকে ০১৯১৬৪৯২৪৪০ নাম্বারে একটি কল আসে। রিসিভ করতেই অপর প্রান্ত থেকে হ্যালো, হ্যালো আপনি কি তহশিলদার বলছেন? হ্যাঁ বলছি। আমি দামুড়হুদার ইউএও বলছি। ইউএনও স্যারের পরিচয় পেয়ে তহশিলদার চেয়ার থেকে উঠে বসলেন। জ্বী স্যার, আপনি কেমন আছেন? হ্যাঁ ভালো আছি। আপনি এখন কোন উপজেলাতে আছেন যেন? স্যার আমি এখন জীবননগর উপজেলায় আছি। ও আচ্ছা- জীবননগর ইউএনও’র নম্বর কতো? কলকারীর মুখে এমন কথা শুনে সন্দেহে পড়লেন তহশিলদার। দামুড়হুদা ইউএনও পাশর্^বর্তী উপজেলার ইউএনও স্যারের নম্বর জানবেন না কেমন হয়।
মুর্হূতেই পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে তহশিলদার জিজ্ঞাসা করেন, দামুড়হুদার ইউএনও স্যার বলছেন কি না? অপর প্রান্ত থেকে প্রতিউত্তরে বললেন, জীবননগর ইউএনও সাহেব এখনই আপনাকে ফোন করবে। লাইনে থাকুন, বলে ফোন কেটে দিলেন।
তবে এখানেই ঘটনার শেষ নয়। কিছুক্ষণ পর ওই ব্যক্তি মোবাইল ফোনে জীবননগর ইউএনও’র ব্যক্তিগত নম্বর ০১৭১৭২৮৬৮৭৯ থেকে তহশিলদারের ০১৯১৬৪৯২৪৪০ নম্বরে কল দেয়। নম্বরটি তহশিলদারের মোবাইলে সেভ করা ছিলো। তহশিলদার কলটি রিসিভ করার পর অপর প্রান্ত থেকে নিজেকে জীবননগর ইউএনও পরিচয় দিয়ে বলেন, আপনি এখন কোথায় আছেন? তবে কথার ফাঁকে তহশিলদার বুঝতে পারেন ইউএনও’র কন্ঠের সাথে ওই ব্যক্তির কন্ঠের অমিল। এ বিষয়ে প্রশ্ন তুলতেই কল প্রদানকারী কল কেটে দেন। এভাবেই প্রতারণার এক ফাঁদের বিবরণ দিলেন আকন্দবাড়িয়া ইউনিয়ন উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা সাদ আহম্মদ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মূলত প্রতারণা করার জন্য ইউএনওসহ সরকারের পদস্থ কর্মকর্তাদের মোবাইল নম্বর ক্লোন করে হুবহু ওই নম্বর দিয়েই পরিচিতজনদের নম্বরে ফোন দেয়া হচ্ছে। অথচ যার নম্বর ক্লোন করে ফোন দেয়া হচ্ছে তিনি কিছুই বুঝতে পারছে না। দেশের একটি প্রতারক চক্র মোবাইল নম্বর ক্লোন করে হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা ও লুটে নিচ্ছে বিভিন্ন প্রকার ফায়দা।
ওই তহশিলদার বলেন, মোবাইল কলের বিষয়টি নিয়ে আমি দু’জন ইউএনও স্যারকে সাথে সাথে অবগত করি। এতে পরিস্কার হই যে উঁনারা আমাকে ফোন দেননি। দামুড়হুদা উপজেলার পরিচিত ব্যক্তিদের সাথে আমি যোগাযোগ করে জানতে পারি ০১৭৮৩৩০৪০৫০ মোবাইল ফোন নম্বরটি দামুড়হুদা ইউএনও স্যারের। প্রতারক দামুড়হুদা ও জীবননগর ইউএনও স্যারের মোবাইল ফোন নম্বর ক্লোন করে আমাকে ফোন দিয়েছিলো। তবে কন্ঠের অমিলে বিষয়টি অবগত হওয়ায় তারা ফায়দা হাসিল করতে পারেনি।