শুনানি শেষ : বিচারিক আদালত থেকে নথি আসার পর আদেশ
স্টাফ রিপোর্টার: জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় জামিন প্রশ্নে হাইকোর্টে শুনানি শেষ হলেও কারাবন্দি খালেদা জিয়ার অপেক্ষা এখনও ফুরাচ্ছে না। গতকাল রোববার দুপুরে এক ঘণ্টার বেশি সময় শুনানি করে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ বলেছে, জজ আদালত থেকে এ মামলার নথি এলে তা দেখে আদালত আদেশ দেবে। গত ২২ ফেব্রুয়ারি একই বেঞ্চ খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে ১৫ দিনের মধ্যে বিচারিক আদালত থেকে মামলার নথি পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছিলো। সেই সময় শেষ হতে এখনও ১২ দিন বাকি। ফলে খালেদা জিয়া জামিন পাবেন কি না-তা জানতে আরও অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আখতারুজ্জামান গত ৮ ফেব্রুয়ারি এ মামলার রায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ৫ বছর কারাদণ্ড দেন। খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানসহ অপর ৫ আসামির প্রত্যেককে ১০ বছর করে জেল এবং আসামিদের প্রত্যেককে ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার করে জরিমানা করা হয় রায়ে। পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়, সরকারি এতিম তহবিলের টাকা এতিমদের কল্যাণে ব্যয় না করে পরস্পর যোগসাজশে আত্মসাৎ করে খালেদা জিয়াসহ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার আসামিরা রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক অপরাধ করেছেন। ১১৬৮ পৃষ্ঠার ওই রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি হাতে পাওয়ার পর গত ২০ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে আপিল করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবীরা। ২২ ফেব্রুয়ারি বিষয়টি আদালতে উঠলে তখনই জামিন আবেদন করা হয়। মূল রায়সহ ১২২৩ পৃষ্ঠার আপিল আবেদনে ৪৪টি যুক্তি দেখিয়ে খালেদা জিয়ার খালাস চাওয়া হয়। আর ৮৮০ পৃষ্ঠার জামিন আবেদনের মধ্যে ৪৮ পৃষ্ঠা জুড়ে ৩২টি যুক্তিতে খালেদা জিয়ার মুক্তি চাওয়া হয়। সেদিন শুনানি শেষে বিএনপি চেয়ারপারসনের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে নিম্ন আদালতের দেয়া অর্থদণ্ড আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত করে হাইকোর্ট।
কিন্তু জামিন আবেদনের কপি পেতে বিলম্বের কারণ দেখিয়ে দুদক শুনানির জন্য সময় চাইলে হাইকোর্ট গতকাল রোববার দুপুরে শুনানির সময় ঠিক করে দেয়। অন্যদিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার শুনানি আজ পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে। গতকাল রোববার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক আখতারুজ্জামান এ আদেশ দেন। এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল আদালতে বলেন, অন্য একটি মামলায় আসামি বেগম খালেদা জিয়া দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে আছেন। তাই তাকে আদালতে হাজির করার জন্য হাজিরা পরোয়ানা জারির আবেদন করেছিলেন। তাকে আদালতে হাজির করার পরোয়ানা জারি করা হোক। অন্যদিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবী আবদুর রেজাক খান আদালতকে বলেন, ‘জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হয়েছে। ওই মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি হচ্ছে। তাই জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাজিরা পরোয়ানা না ইস্যু করে শুনানি মুলতবির আবেদন করেছেন।’ রেজাক খান জানান, এ পর্যন্ত খালেদা জিয়া এ মামলায় জামিনে আছেন। তার জামিন বর্ধিত করার জন্য আদালতের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত সোমবার পর্যন্ত্ম এই মামলার শুনানি মুলতবি রেখেছেন এবং আদেশের জন্য দিন রেখেছেন।
উল্লেখ্য, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দুদকের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হয়েছে। আসামিপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিন ধার্য ছিলো। এর আগে ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ৫ বছর সাজা দেয়া হয় খালেদা জিয়াকে। বর্তমানে তিনি পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন।