গিয়াস উদ্দীন সেতু: ঝিনাইদহ জেলার ঐতিহাসিক নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। যার কারণে দেশি প্রজাতির কাটরা মাছ ধরতে গ্রাম অঞ্চলের সকল বয়সের মানুষ, উৎসব মুখর পরিবেশে পরিনত হয়েছে নবগঙ্গা নদীর বুক। গ্রাম অঞ্চলের মানুষ এক সময় দেশি প্রজাতির মাছের উপর নির্ভর করতো, কিন্তু কালের আবর্তে খাল-বিল নদ-নদী শুকিয়ে যাওয়ার কারণে দেশি জাতের মাছ বিলুপ্তের পথে প্রায়। এখন নদ-নদী, খাল-বিলে দলবেধে মাছ ধরার দৃশ্য দেখা যায় না। অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত দু’বছর নবগঙ্গা নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ মারা নিষিদ্ধ করে প্রশাসন। মাঝে মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বাঁধগুলো ভেঙে দেয়ার কারণে মা জাতের মাছ বংশ বিস্তার করে, আর সেই কারণে এবছর নদীতে মাছ ভরে উঠেছে। গতকাল বুধবার সংবাদ সংগ্রহ করতে নদীতে গেলে চোঁখে পড়ে মাছ ধরার মহোৎসব। গোবরাপাড়া গ্রামের জালাল জানান, নবগঙ্গা নদীতে মাসব্যাপী এমন মাছ ধরছে এলাকার মানুষ, এমন লোক নেই যে, প্রতিদিন ২ কেজির ওপরে ৮-১০ কেজি মাছ ধরছে না। পোতাহাটির ইমরান জানান, সে প্রতিদিন ৪-৫ কেজি পুটি, টেংরা, পাকাল, ভেদা, চিংড়ি, সরপুটিসহ বিভিন্ন জাতের মাছ ধরে। জিল্লু জানান, বছর ধরেই এ নদীতে মাছ ধরছে, নদীতে প্রচুর মাছ আছে এ বছর। রিশখালীর আইয়ুব জানান, মাছের অভাব দূর হয়েছে, নদীতে মাছ থাকার কারণে, প্রতিদিন তিনি ২-৩ কেজি মাছ ধরে খেপলা জাল ফেলে। সাধুহাটির আকাশ জানান, নদীতে প্রচুর মাছ ধরি, তবে মাছ ধরতে আনন্দ লাগে! সাধুহাটির চেয়ারম্যান কাজি নাজীর উদ্দীন জানান, প্রশাসন বর্ষার মরসুমে নদীতে বাঁধ না দিতে দেয়ার কারণে মাছের বংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই কারণে এবার নদীতে মাছ বেশি হয়েছে। এদিকে হরিণাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী আফিসার মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, নবগঙ্গা নদীতে এবার দেশি জাতির মাছ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ এক শ্রেণির জেলেরা মরসুমের সময় নদীতে বাঁধ দিয়ে মা জাতের মাছ নিধন করতো, আর সেটা আমরা প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বাঁধগুলো সরিয়ে দিয়েছি, জরিমানা করেছি, যার কারণে নদীতে দেশি জাতের মাছ বেড়েছে, এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।